পটুয়াখালীতে কমছে জলাধার, হুমকিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা
পটুয়াখালী শহরে দ্রুত কমছে প্রাকৃতিক জলাধারের পরিমাণ। এ কারণে হুমকির মুখে রয়েছে শহরের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। এ ছাড়া শহরের অধিকাংশ রাস্তা সরু হওয়ায় অনেক এলাকাতেই ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে পারে না।
নদীবেষ্টিত পটুয়াখালী শহরে দুই পাশে রয়েছে লোহালিয়া ও লাউকাঠী নদী। নদী দুটি থেকেই শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে অন্তত ৪০টি ছোট-বড় খাল। তবে কালের বিবর্তনে এসব খাল এখন সরু ড্রেনে পরিণত হয়েছে। আর ড্রেনগুলোতে ঢাকনা না থাকায় এগুলো এখন ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে ড্রেনে পানি প্রবাহ থাকে না বললেই চলে। অপরদিকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক পুকুর ও দীঘি থাকলেও তার অধিকাংশের এখন অস্তিত্ব নেই। এ কারণে বর্তমানে শহরের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে।
সম্প্রতি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ পটুয়াখালী পৌর এলাকায় ৬৩টি জলাধার চিহ্নিত করে এগুলো সংরক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসন ও পৌরসভাকে চিঠি দিয়েছে।
পটুয়াখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফিরোজ আহম্মেদ জানান, শহরের পুরান বাজার, সবুজবাগ এলাকাটি এখন সব থেকে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এসব এলাকায় যেমন পর্যাপ্ত পানির সংস্থান নেই, তেমনি সড়কগুলো এতই ছোট যে, ফায়ার সার্ভিসের পানি পরিবহনের গাড়িগুলো ঢুকতে পারে না। তাই আরও জলাধার সৃষ্টি এবং টিকে থাকা জলাধারগুলো সংরক্ষণ করা জরুরি।
তবে টিকে থাকা জলাধারগুলো সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানালেন পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ। তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই জলাধার যাতে ভরাট করা না হয় এবং এগুলো দখল না হয়ে যায়- এ জন্য কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি যে সড়কগুলোতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না, সে সব এলাকায় সড়কের পাশে পানির লাইন স্থাপন করা হচ্ছে- যাতে এগুলো ইমারজেন্সি সময়ে ফায়ার হাইড্রেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
২০১৯ সালে পটুয়াখালীতে ৫২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর অধিকাংশই শহর এলাকায় ঘটেছে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। এ কারণে নগরায়নের সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিপ্রতিরোধ ও অগ্নি নির্বাপণ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।