গমে ঝুঁকছেন চাষিরা
নওগাঁয় ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা এখন গম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এক সময় যেসব জমিতে ধান চাষ করা হতো, এখন সেসব জমিতে গমের চাষ করছেন কৃষকেরা। তেমন একটা রোগবালাই না থাকায় এ বছর গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার গম চাষিরা।
নওগাঁ সদর, মহাদেবপুর, সাপাহার, মান্দা ও নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন গম ক্ষেতের যে দিকে চোখ যায় শুধু বাতাসের দোলায় সবুজ গমের খেতের দিকে তাকালে সবুজের মুগ্ধতায় চোখ জুড়িয়ে আসে।
মান্দা উপজেলার গনেশপুর গ্রামের কৃষক কাজী আবুল কাসেম বলেন, ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে গত দুই বছর ধরে তিনি ছয় বিঘা জমিতে গম চাষ করছেন। গত বছর ছয় বিঘা জমি থেকে তিনি ১৫০ মণ গম ঘরে তুলেছিলেন। প্রতি মণ গম এক হাজার টাকা করে বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে পাওয়ায় এ বছরও তিনি তার ধানের জমিতে গমের চাষ করেছেন।
শুধু আবুল কাসেম নন, ধানের পরিবর্তে গম চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন একই গ্রামের আব্দুল কাদের হীরা, রুহুল আমিন রকেট, আব্দুল লতিফ, আইনাল হকসহ আরও অনেক কৃষক। তারা বলছেন, এ বছর নওগাঁয় গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা আছে ।
সদর উপজেলার সরাইল ও শিকারপুর গ্রামের গম চাষি আব্দুল মতিন ও আব্দুস সালাম বার্তা২৪-কে জানান, মাঠজুড়ে ফুটে ওঠা গমের শিষ দেখে মনে হচ্ছে গত বছরের মতো এ বছরও গমের বাম্পার ফলন হবে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নওগাঁর ১১টি উপজেলায় ২৬ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে কাঞ্চন, বারি-বিজয়, বারি-২৫ ও শতাব্দী জাতের নতুন গম চাষ করা হয়েছে।
উপজেলাভিত্তিক গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা-নওগাঁ সদর উপজেলায় ৭৯০ হেক্টর, মান্দায় ২ হাজার ৬৯০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ৪৫৫ হেক্টর, সাপাহারে ৮ হাজার ৩৩৫ হেক্টর, পোরশায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর, পত্নীতলায় ১ হাজার ৯২০ হেক্টর, বদলগাছিতে ৮০০ হেক্টর, নিয়ামতপুরে ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ৩৭০ হেক্টর, রাণীনগরে ৭৬৫ হেক্টর এবং ধামইরহাটে ১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি।
নওগাঁ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম বার্তা২৪কে বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর গমের ফলন ভালো হবে। এর কারণ হিসেবে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শের কথায় তিনি জোর দেন ।
তিনি বলেন, চলতি বছরের চেয়ে আগামী বছর আরও অধিক জমিতে গম চাষের আগ্রহ দেখাচ্ছে কৃষকরা।