বাউফল সরকারি কলেজে

১১ বছর পর অধ্যক্ষ, যোগদানের ২৫ দিনের মাথায় বদলি

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বাউফল সরকারি কলেজ

বাউফল সরকারি কলেজ

পটুয়াখালীর বাউফল সরকারি কলেজে দীর্ঘ ১১ বছর পর্যন্ত কোনো অধ্যক্ষ ছিলেন না। নেই উপাধ্যক্ষসহ চার বিষয়ের কোনো শিক্ষক। তবে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কলেজটিতে একজন অধ্যক্ষ নিয়োগ করলেও তাকে ২৫ দিনের মাথায় বদলি করা হয়েছে। নতুন করে আর কাউকে অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়নি। ফলে আবারও অনিশ্চয়তার মুখে কলেজটি।

গত ১৫ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ্র স্বাক্ষরিত এক চিঠির নির্দেশে পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলামকে বাউফল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ২৫ জানুয়ারি মো. রফিকুল ইসলাম বাউফল সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পরই কলেজটিতে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ শুরু করেন তিনি। তবে গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কোনো কারণ ছাড়াই নতুনভাবে কোনো অধ্যক্ষ নিয়োগ না দিয়ে রফিকুল ইসলামকে ফের বদলি করা হয়। অধ্যক্ষের এই বদলির খবরে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. ফরহাদ হোসেন ২০ ফেব্রুয়ারি স্বাক্ষরিত এক চিঠির নির্দেশে তাকে ফের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। বদলির আদেশে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

বাউফল সরকারি কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। এর আগে ২০০৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ ১১ বছর পর্যন্ত কলেজটিতে কোনো অধ্যক্ষ ছিলেন না। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়েই চলছিল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। এছাড়াও বর্তমানে কলেজটিতে রসায়ন, অর্থনীতি, ভূগোল ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ের কোনো শিক্ষক নেই। কলেজটিতে বর্তমানে চার হাজারের অধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছেন।

এক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অধ্যক্ষ যোগদানের আগে কলেজটিতে লুটপাটের রাজত্ব ছিল। কিছু শিক্ষক দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকতেন। কোনো জবাবদিহি ছিল না। মাঝে মধ্যে কলেজে আসতেন, অধ্যক্ষ যোগদান করায় তাদের নিয়ম-কানুন মানতে কষ্ট হচ্ছিল। আর তারাই প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতাকে ব্যবহার করে স্যারকে বদলি করিয়েছেন। তবে এর ফল ভালো হবে না। নতুন অধ্যক্ষ না দিয়ে, অধ্যক্ষকে বদলি করায় কলেজটির প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়বে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ কলেজটি ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কলেজটিতে শিক্ষক সংকট রয়েছে, প্রশাসনিক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, পর্যাপ্ত পাঠদান কক্ষ ও বেঞ্চ নেই। শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সবাইকে নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। আমাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখানে পাঠিয়েছিলেন। আবার বদলি করেছেন। তাই কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনেই সেখানে চলে যাব।