কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় ১ জনের ফাঁসি, ১১ জনের যাবজ্জীবন

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার ইবি থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে এ মামলায় এগারোজন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হলেন- কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থানার বানিয়াপাড়া এলাকার নফছের আলী ছেলে জাগো (৩০)।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থানার সোনাইডাঙ্গা এলাকার বদর উদ্দিনের ছেলে ইলাম মন্ডল ওরফে কালু (৩২), বৃত্তিপাড়া এলাকার মনোয়ার মন্ডলের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩০), গজনবীপুর এলাকার মৃত আলম ফকিরের ছেলে বাদশা ওরফে বাশি মন্ডল (৩৮), দেড়িপাড়া এলাকার তোয়াক্কেল জোয়াদ্দারের ছেলে আলিম ওরফে ঝড়ো (৩৮), বারুইপাড়া এলাকার আফাজ সর্দ্দারের ছেলে আমিরুল ইসলাম (৩৫), উজানগ্রাম এলাকার মোনাউল্লাহ এর ছেলে বাবলু (৪০), বারুইপাড়া এলাকার মৃত তাইজাল হোসেনের ছেলে রহমত ওরফে সাইদুল (২৬), একই এলাকার ইজ্জত আলীর ছেলে মিজানুর রহমান (৩৫), ইয়ার আলীর ছেলে আলী হোসেন (২৫), আবদুল মজিদ মন্ডলের ছেলে আসাদুল (২১) এবং বৃত্তিপাড়া এলাকার সামসুলের ছেলে ইউনুচ (৩৫)।

বিজ্ঞাপন

রায় ঘোষণাকালে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শহিদুল ইসলাম, আলিম ওরফে ঝড়ো, বাবলু, সাইদুল, মিজানুর রহমান, আলী হোসেন, ইউনুচ এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জাগো পলাতক ছিলো।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) এলাকার বারুইপাড়া মিনি ক্যানেল পাড়ে জবাই করে হত্যা এবং দেহ থেকে মাথা সম্পূর্ণরুপে আলাদা করে নিকটবর্তী ব্রিজের রেলিংয়ের উপরে রেখে চলে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে মস্তকবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মামলায় দুই আসামির স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির মাধ্যমে জানা যায়, আসামিরা ফরিদুল ও অমূল্য ভিকটিম মাকিন মন্ডলকে অপহরণ করে বারুইপাড়া ব্রিজের নিকট নিয়ে যায়। সেখানে তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করার বিষয় নিয়ে অপহরণকারী ফরিদুলের সঙ্গে অন্যান্য আসামি বিশেষ করে পলাতক আসামি জগোর কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে জগোসহ অন্যান্য আসামিরা তাকে ধাওয়া দিলে ফরিদুল ধানক্ষেতের মধ্যে পড়ে যায়। তাকে জগোসহ কতিপয় আসামিরা তাকে পা-হাত ও মাথা ধরে রাখে। আসামি জগো শহিদুলের আনা কাঁচি দিয়ে ফরিদুলকে জবাই করে তার মাথা দেহ থেকে আলাদা করে বারুইপাড়া ব্রিজের উপর রেখে আসে।

এ ঘটনায় কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থানায় পরদিন ২৪ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের হয়। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২০ জুন আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন ইবি থানা পুলিশ।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষে কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী রায়ের জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় দীর্ঘ বিচারকার্যে ১৬ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এবং দুই আসামির জবানবন্দিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ৩০২ ধারায় আসামিদের মধ্যে একজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।