ঝিনাইদহে গমে ব্লাস্ট, দিশেহারা কৃষক
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ভাটই গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান। গত বছর গমের আবাদ ভালো হওয়ায় এবারও ৩ বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছেন। শুরুর দিকে গমের বাড়ন্ত অবস্থা দেখে আশা করেছিলেন ফলন ভালো হবে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে ব্লাস্ট রোগের কারণে। তিন বিঘা জমির মধ্যে ২ বিঘা জমির গমই হলুদ হয়ে গেছে। এতে করে গমের ফলন কম হবে।
একই দশা সদর উপজেলার কাস্টসাগরা গ্রামের চাষি হাসান মিয়ার। তার ২ বিঘা জমির গম ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত। হাসান মিয়া জানান, গমে শীষ বের হওয়ার পরও গোড়ার পাতাগুলো হলুদ হতে শুরু করে। পরে আস্তে আস্তে শীষগুলোতে দানা হবার আগেই সাদা হয়ে গেছে। যা দূর থেকে দেখলে মনে হবে গম পেকে গেছে। এতে ফলন একেবারেই কমে যাবে। যে কারণে লোকসানের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায় ওই গ্রামের লিয়াকত আলি, আবুল কাশেম, কবির হোসেন, আব্বাস আলীসহ ১৫ থেকে ২০ জনের গম ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত।
তারা জানান, আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে গম রক্ষায় কৃষকরা ছত্রাকনাশক স্প্রে করছে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হচ্ছে না। শীষ বের হওয়ার পর ব্লাস্ট আক্রমণ করে। ফলন ভালো হবে না ভেবেই অনেকেই গম কেটে গরু দিয়ে খাওয়াচ্ছেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, ২০১৬ সালে দেশে প্রথম ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ভোলা ও বরিশাল জেলায় গমে ব্লাস্ট আক্রমণ হয়েছিল। এরপর এসব জেলায় কয়েক বছর গম চাষে চাষিদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। এখন চাষ হচ্ছে।
এবছর ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলায় ৬ হাজার ৫’শ ২৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। কয়েকটি উপজেলার অল্পকিছু জমিতে ব্লাস্ট’র আক্রমণ হয়েছে। এছাড়া কিছু জমিতে মরিচাপড়া রোগের আক্রমণ হয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষকরা তাদের জমিতে নাটিভো ও টিল্ট ওষুধ প্রয়োগ করলে কিছুটা উপকার পেতে পারেন।