২২১ বছর পর রামুতে বৈচিত্র্যময় 'শেষকৃত্য অনুষ্ঠান'
১৭৮৪ সালের দিকে আরকান রাজ্য দখল করে নেয় বার্মার রাজা বোধা পায়া। রাজার আক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রায় ১৩ হাজার আরকানি চলে আসে পালংকীর দিকে (বর্তমানে কক্সবাজার)। সমুদ্র ও জঙ্গলেঘেরা পালংকীতে আশ্রিত লোকজনকে পুনর্বাসনের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী নিয়োগ দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সকে। সেই হিরাম কক্সের নাম অনুসারে তৎকালীন পালংকী থেকে কক্সবাজার নামকরণ হয় এ জেলার। কিন্তু ১৭৯৯ সালে এসে রামুর ফতেহারখোল ইউনিয়নের বাংলো বাড়িতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা যান ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স।
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান করা হয়। বৈচিত্র্য আলং বা বাঁশ নিত্য, আতশবাজি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ধর্ম সভা, পিন্ডচারণসহ নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে ক্যাপ্টেন কক্সকে বিদায় জানান রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষজন।
রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা জানান, ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের পর এরকম শেষকৃত্য আর হয়নি। ২২১ বছর পর এসে কক্সবাজারের রামুর কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের প্রয়াত অধ্যক্ষ ও একুশে পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হচ্ছে সেই হিরাম কক্সের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের মতো।
প্রায় দুই কোটি টাকা সম্ভাব্য বাজেটে বৈচিত্র্যময় এ অনুষ্ঠানে রয়েছে, বৈচিত্র্যময় আলং বা বাঁশ নিত্য, আতশবাজি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ধর্ম সভা, পিন্ডচারণসহ নানান আয়োজন। শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল নয়টা থেকে এসব অনুষ্ঠানের সূচনা হবে।
রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের সহকারী পরিচালক ও বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বার্তা২৪.কমকে বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে রামু উপজেলার মেরংলোয়া বিলের ৪০ একর জমিতে শুরু হয়েছে মেলা। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। চলবে শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত। এসব অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে জাপান থাইল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা। দ্বিতীয়বারের মতো ইতিহাস হয়ে থাকবে এ আয়োজন।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর পরলোক গমন করেন কক্সবাজারের রামুর কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের প্রয়াত অধ্যক্ষ ও একুশে পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরে। ৭ দিনের মাথায় পেটিকা বদ্ধ করা হয় তার মরদেহ। পরলোক গমনের ১৪২ দিনের মাথায় দাহকৃত্য সম্পন্ন করা হচ্ছে শনিবার।