নওগাঁয় আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা
কয়েক বছর আগেও নওগাঁর ছবিটা ছিল ভিন্ন। জেলার প্রায় সব উঁচু জমিতেই হত আখের চাষ। আলু চাষের পর একই জমিতে প্রায় বিনা খরচে আখ চাষ করে বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাভ পেতেন চাষিরা।
মান্দা উপজেলার মৈনম এলাকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০০ সালে দেখা দেয় আখের লাল দাগ রোগ। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকার উপদ্রব। চাষিদের অভিযোগ, কৃষি বিভাগও দিতে পারেনি ভাল প্রজাতির আখ বীজের সন্ধান। যার জন্য ফলন কমে গেছে।
মহাদেবপুর উপজেলার পবাতৈড় গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম এবং হাসমত আলী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ন্যায্যমূল্য না পাওয়া ও বিক্রির সময় হয়রানির কারণে আখচাষিরা বিমুখ হয়ে যাচ্ছেন।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় চলতি মৌসুমে ৭২৫ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। এ থেকে প্রায় ৩২ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন আখ উৎপাদন হয়েছে। গত মৌসুমে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫০ হেক্টর।
মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের আখ চাষি আব্দুল কাদের হীরা, আবুল কাসেম, আমজাদ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, চিনিকলে আখ বিক্রি করতে নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। পাশাপাশি, আখ চাষের এক মৌসুমে অন্য ফসল তিনবার আবাদ করা যায় বলেও জানান তারা।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলার ৬টি উপজেলায় আখ চাষ হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৮০ হেক্টর, বদলগাছি ২০ হেক্টর, মহাদেবপুর ১৯০ হেক্টর, পত্নীতলা ৭০ হেক্টর, ধামুইরহাট ৫৫ হেক্টর এবং মান্দা উপজেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে জানান, আখচাষে আগ্রহ বাড়াতে চাষিদের কারিগরি সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তবে, আখের দাম পুনঃনির্ধারণ করা হলে চাষিরা আরও বেশি আগ্রহী হবেন।
ভালো ফলন পেতে একই জমিতে বারবার আখ চাষ না করে জমি পরিবর্তন করার জন্য চাষিদের পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।