ওয়াসার পানিতে চোখ জ্বলে!
গরমের দিন আসার আগেই নারায়ণগঞ্জ শহরে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। এরই মধ্যে ওয়াসার পানি ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে ব্যবহারের অনুপযোগী। পানির কল ছাড়তেই ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ।
শীতের মৌসুমজুড়ে এমন সমস্যা না থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে নারায়ণগঞ্জ শহর ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় পানি নিয়ে দুর্গতি ভোগ করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। তারা বলছেন, ওয়াসার পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরেরও দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। চোখে-মুখে পানি দিলে চোখ জ্বালাপোড়া করে!
নারায়ণগঞ্জ শহরের বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাত্রে ঢেলে রাখা ওয়াসার পানিতে ভাসছে ময়লা। ফুটিয়ে রান্নার কাজে এই পানি ব্যবহার করতে ভরসা পাচ্ছেন না গৃহিণীরা। পানিপান ও রান্নার কাজে ব্যক্তি মালিকানাধীন পাম্পে ভিড় করছেন এলাকাবাসী। ঝুঁকি এড়াতে অনেকে দোকান থেকে পানি কিনে নিচ্ছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাধারণ মানুষকে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
শহরের দেওভোগের স্থানীয় বাসিন্দা সেলিনা আক্তার বলেন, ওয়াসার পানিতে ইদানীং দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এই পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে। রান্না করার জন্য পাশের একটি বাসার পাম্প থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়। খাবার পানি কিনে এনে সেটি ফিল্টার করে খাই দীর্ঘদিন যাবত। শুধু গোসল আর হাত-মুখ ধোয়া ছাড়া অন্য কাজে ওয়াসার পানি ব্যবহার করা সম্ভব হয় না।
স্থানীয় বাড়িওয়ালা নিরাক হাসান জানান, ওয়াসার পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হলেও আমরা একপ্রকার জিম্মি হয়ে ব্যবহার করছি। মাস শেষে পানির বিল ঠিক সময়েই দিতে হয়। তার ওপর শুনলাম ওয়াসা নতুন করে পানির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। বিশুদ্ধ পানি না দিয়েও দাম বাড়িয়েছে। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ দাম বাড়াচ্ছে ঠিকই কিন্তু সে অনুযায়ী সেবা দিচ্ছে না। এভাবে যদি সবদিক থেকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আমরা কার কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাব?
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন বলেন, ওয়াসা সবেমাত্র নাসিকের আওতায় এসেছে। গত বছরের ৩১ অক্টোবর আমরা দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি। আমাদের ৩১টি পানির পাম্প আছে। সেগুলো নিয়ে কাজ চলছে। পানি সংকট সমাধানে আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদারকি করব এবং কোথাও কোনো লাইনে ছিদ্র আছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখব। আশা করি খুব শিগগিরই এর একটা সুফল দেখবে নগরবাসী।