ডুবাইয়ে ভাসাইতে পারো, ভাসাইয়ে কি!
ছেঁউড়িয়া থেকে: খেলাফতধারী সাধুদের সমন্বয়ে পরিবেশন হয়েছে উদ্বোধনী লালন সঙ্গীত।
রবিবার (৮ মার্চ) রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়িতে দোল পূর্ণিমার রাতে আনুষ্ঠানিভাবে স্মরণোৎসবের উদ্বোধনের পর মঞ্চে ওঠেন এই প্রবীণ শিল্পীরা।
গেয়ে শোনান ডুবাইয়ে ভাসাইতে পারো, ভাসাইয়ে কি! সমবেত কন্ঠে গেয়ে ওঠেন দরাজ গলায় এমন লালন সঙ্গীত।
কুষ্টিয়ার দরবেশ নহীর শাহ, মহরম শাহ, সামসুল ফকির, রওশন ফকির, হৃদয় শাহ, রাজ্জাক বাউল, এনামুল শাহ, আরিফ বাউল, গোলাপি, ছমির বাউল, পাগলা বাবলু, তকাবর বাউলসহ অন্তত ১৫ জন প্রবীণ শিল্পীর কন্ঠে ধ্বনিত হতে থাকে লালনের এই অমীয় বাণী। পরে কাঙালিনী সুফিয়াসহ লালন একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় রাতভর চলে এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ঢাকা থেকে আসা রাকিবুল হাসান ও টুটুল মাহফুজসহ বেশ কয়েকজন জানান, কাঙ্গালিনী সুফিয়ার গান আমরা ছোটবেলা থেকে শুনেছি। কিন্তু কখনো তাকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়নি৷ এবারের লালনের এই মেলায় এসে খুব কাছ থেকে তার গান শুনেছি। অনেক অনেক ভালো লেগেছে। এছাড়াও প্রবীণ শিল্পীদের সমন্বয়ে পরিবেশিত গান উপভোগ করলাম, তা সত্যিই অসাধারণ। লালনের বাণী যে এত সুন্দর ও সুমধুর হয় তা খুব কাছ থেকে এই লালনসঙ্গীত না শুনলে বুঝতেই পারতাম না।
স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের এক শিক্ষার্থী অংকন বিশ্বাস অর্ক নামের আরেক তরুণ বলেন, লালনের গানের অনেক মর্ম কথা শুনেছি। তার বাণীর কথা শুনেছি। কিন্তু লালনের এই ধামে কখনো আসা হয়নি। এবারই প্রথম আসলাম। এত সুন্দর করে তাদের পরিবেশন করা গান খুবই ভালো লাগলো। আবারও আসবো এই ধামে।
প্রসঙ্গত, গানের মধ্যদিয়ে সমাজের গোঁড়ামি আর বৈষম্য তুলে ধরেছেন বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ। সতের শতকের প্রথম থেকে আঠারো শতকের শেষ পর্যন্ত গানে গানে মানবতার বাণী ছড়িয়েছেন তিনি।
লালন স্মরণে প্রতিবারের মতো এবারও কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আয়োজন করা হয়েছে তিন দিনের দোলপূর্ণিমা উৎসব। এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে দূর-দূরান্ত থেকে লালন ভক্তরা এসেছে লালনের বারামখানায়।