সরাইলে দু’পক্ষের সংঘর্ষে বৃদ্ধের মৃত্যু, আহত ৩০
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ক্রিকেট খেলা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে সামসু মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ পুলিশের লাঠির আঘাতে সামসু মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি বৃদ্ধ সামসু স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এই ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়। সামসু মিয়া একই এলাকার খাঁ বাড়ির সওদাগর চৌধুরীর ছেলে। সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকসহ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তাৎক্ষনিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে, সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের খাঁ বাড়ির লোকজন ও দেওয়ান ভূঁইয়ার বাড়ির লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) রাতে খাঁ বাড়ির আইয়ুব খান ও তার ছেলেকে মারধর করেন দেওয়ান বাড়ির লোকজন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুপুরে দু’পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালীন কোনো এক সময় সামসু মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। সামসুর মারা যাওয়ার খবরে উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায় খাঁ বাড়ির লোকজন। এই ঘটনায় ৭ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছে।
এই ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
খাঁ বাড়ির লোকজন অভিযোগ করে বলেন, সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ দেওয়ান বাড়ির পক্ষ নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশের হামলায় আহত হয়ে সামসু মিয়ার মৃত্যু হয়।
সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাসুদ রানা জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে সামসু মিয়া হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু এলাকার লোকজন মনে করেছেন সামসু মিয়ার ওপর পুলিশ হামলা করেছে, তাই তারা পুলিশের ওপর হামলা করেছেন। এই ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।