বৃষ্টিতে আমের ফলন নিয়ে শঙ্কায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষিরা
আমের অঞ্চল হিসেবে বিশ্বে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এখানকার মানুষের প্রধান অর্থকরী ফসল আম। গত কয়েক বছর টানা লোকসানের পর গেল মৌসুমে কিছুটা পুষিয়ে নিয়েছেন আম চাষিরা। তবে চলতি মৌসুমে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে আমের ফলন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
শুক্রবার (১৩ মার্চ) বিকেল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়। শনিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে আধাঘণ্টার বিরতি দিয়ে ফের বৃষ্টি হতে থাকে। এতে আমের ফলন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এ জেলার আম চাষিরা।
কানসাট এলাকার আম বাগানী রবিউল আওয়াল বলেন, ‘গত কয়েক বছরের টানা লোকসানের পর এবার অনেক আশা নিয়ে গাছের পরিচর্যা করেছি। আবহাওয়া বিরূপ হওয়ার পরও কিছু গাছে গুঁটি এসেছে। এছাড়া বর্তমানে প্রায় ৭ শতাংশ গাছে এখনও মুকুল রয়েছে। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে এসব মুকুল পচে নষ্ট হয়ে যাবে। আশানুরূপ ফলন না হলেও একেবারে পথে বসতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে কুয়াশা অন্য দিকে ফাগুনের বৃষ্টি। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমের ফলনে বিপর্যয় ঘটতে পারে।’
গোমস্তাপুর এলাকার অপর আম চাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘গেল সপ্তাহে হঠাৎ বৃষ্টিতে মুকুলের কিছুটা ক্ষতি হলেও আবহাওয়া ভালো থাকায় তা পুষিয়ে নিতে পেরেছিলাম। কিন্তু গত শুক্রবার থেকে একানাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় গাছের সব ফুল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া গাছে রোগ বালাই বাসা বাঁধতে পারে। যা কোনোভাবেই স্প্রে করে দমন করা সম্ভব হয় না। ফলে আম উৎপাদনে দেখা দিতে পারে বড় ধ্বস।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দীন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে আমের কিছুটা ক্ষতি হবে। তবে নিষেধ থাকার পরও ক্ষতি মেটাতে মুকুলে স্প্রে করা যেতে পারে।’
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় চলতি বছর ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৪০ হাজার মেট্রিক টনের কম।