টাঙ্গাইলে অর্ধশত ব্যবসায়ীকে জরিমানা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ছবি: সংগৃহীত

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের প্রভাব দেশের কাঁচাবাজারগুলোতে পড়তে শুরু করেছে। যেকোনো সময় দেশের অনেক জায়গা লকডাউন হতে পারে এমন শঙ্কায় নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্য মজুদ করছেন লোকজন। এই সুযোগে দাম বাড়িয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে টাঙ্গাইলের বাজারগুলোতে। আর এই বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি রোধে অভিযানে নেমেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

শুক্রবার (২০ মার্চ) করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি রাখা ও কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৫০ ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন অর্থদণ্ডে জরিমানা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের পার্ক বাজারে পেঁয়াজ ও চালের বাজারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে র‌্যাব ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহযোগিতায় যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকার।

এ সময় পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানোর কারণে সাত পেঁয়াজ ও তিন চাল ব্যবসায়ীসহ মোট ১৩ ব্যবসায়ীকে হাতে নাতে আটক করা হয়। পরে নয়জনকে ১০ হাজার টাকা, তিনজনকে ৫০ হাজার ও একজনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় অন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়।

বিজ্ঞাপন

অর্থদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, চাঁন মিয়া, আক্তার হোসেন, সোহেল মিয়া, গোবিন্দ সরকার, সবুজ মিয়া, হাসু মিয়া, আকমল হোসেন, জোয়াহের আলী, সেকান্দার হোসেন, সিদ্দিকুর রহমান, মোসলেম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর হোসেন এবং আমিনুল ইসলাম।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকার বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে দ্রব্যমূল্য সরবরাহ রয়েছে। কোন কিছুর অভাব নেই। তবুও করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসায়ীরা ৪০ টাকার পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। এ ছাড়া প্রতি কেজি চালের ক্রয়মূল্য ৩৫ টাকা থাকা সত্ত্বেও তারা ৪৫ টাকা কেজিকে বিক্রি করছিল। আর অন্যদিকে মুদি দোকানে কোনো দ্রব্য মূল্য টাঙানো ছিল না এবং দাম বেশি নিচ্ছে। এ কারণে হাতে নাতে ১৩ জনকে আটক করে জরিমানা করা হয়। দ্রব্যমূল্য সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও কিছু পেঁয়াজ ও চাল ব্যবসায়ীরা কালোবাজারির মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের আতঙ্ককে পুঁজি করে কেউ যেন বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করতে পারে। মজুত থাকার পরও নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম না বাড়াতে পারে সেজন্য জেলা প্রশাসন আজ থেকে মাঠে থাকবে। নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলবে।

এদিকে, বিকেলে সদর উপজেলার ধরের বাজারে এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম।

অপরদিকে গোপালপুর উপজেলায় ৫ জন ব্যবসায়ীকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ বিশ্বাস।

গোপালপুর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ বিশ্বাসের নেতৃত্বে গোপালপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে অসাধু ৫ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়। এদের মধ্যে ২জন পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ও ৩ জন চাল ব্যবসায়ী রয়েছেন।

এদিকে, বাসাইল উপজেলায় দাম বেশি রাখায় ৯ জন ব্যবসায়ীকে ৮ হাজার ৫শ’ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুরে বাজার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুন নাহার এই জরিমানা আদায় করেন। এরা সবাই পেঁয়াজ ও চাল ব্যবসায়ী।

এছাড়া কালিহাতীতে দাম বেশি নেওয়ায় এক চাল ও এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীসহ মূল্য তালিকা না থাকায় দুই জনসহ মোট ৪ জনকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুরে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান এই জরিমানা আদায় করেন।

একই কারণে ভূঞাপুরে ৩ পেঁয়াজ ব্যবসায়ী এবং ৪ চাল ব্যবসায়ীকে ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিকেলে পৃথকস্থানে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসলাম হোসাইন এ জরিমানা করেন।

এছাড়া নাগরপুরে অধিকমূল্যে পণ্য বিক্রি করায় পেঁয়াজ ও চাল ব্যবসায়ী এবং মূল্য তালিকা না থাকার কারণে ১১ ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তারিন মসরুর এ জরিমানা আদায় করেন।