কুমিল্লায় ২০ দিনের ব্যবধানে দু'টি ট্রেনে আগুন, আতঙ্কে যাত্রীরা

  • আবদুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেন

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেন

কুমিল্লায় চলতি মাসের গত ২০ দিনের ব্যবধানে যাত্রীবাহী দু'টি ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এভাবে ট্রেনে আগুন লাগায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। তবে দ্রুত সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় দু'টি ঘটনাতেই তেমন কোন হতাহতের ঘটেনি।

সর্বশেষ শনিবার (২১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলার লালমাই উপজেলার আলীশহর রেল স্টেশনের আউটারে ঢাকা অভিমুখী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথে প্রায় ৪৫ মিনিট ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ১ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলার লাকসাম রেলওয়ে জংশনে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে ট্রেনটি এক ঘণ্টা পর দুর্ঘটনা কবলিত বগিটি ফেলে লাকসাম থেকে ছেড়ে যায়।

চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক মোশাররফ হোসেন জানান, শনিবার (২১ মার্চ) সকাল সাড়ে এগারটায় আলী শহর স্টেশনে প্রবেশের সময় ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে দেখে ট্রেনটি থামিয়ে ফেলি। পরে সহকারী চালক রাশেদুল ইসলামসহ ইঞ্জিনের ভেতর গিয়ে দেখি স্টেশনার ভাউজিং বাস্ট হয়ে মবিল থেকে আগুন লেগেছে। এ সময় ইঞ্জিনে থাকা ফায়ার যন্ত্র দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলি। এ ঘটনায় ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

লাকসাম লোকোশেডের ইনচার্জ সোলেমান জানান, চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বিকলের খবর পেয়ে উদ্বারকারী রিলিফ ট্রেন নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে বিকল ইঞ্জিনসহ ট্রেনটি পেছনের স্টেশন লাকসাম নিয়ে আসা হয়। এরপর বিকল্প ইঞ্জিনে ট্রেনটি লাকসাম থেকে বেলা সোয়া ১২ টার দিকে ছেড়ে যায়।

ওই ট্রেনের যাত্রী শহীদুল ইসলাম জানান, ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন দেখে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে কিছুটা ব্যথাও পেয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, লাকসাম রেলওয়ে জংশন সূত্র জানায়, ১ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের চাকা ও স্প্রিংয়ের ঘর্ষণে হট এক্সসেল হয়ে আগুন ধরে। পরে লাকসাম রেলওয়ে জংশনে ট্রেন থামিয়ে আগুন নেভানো হয়। যদিও ট্রেনটি ছিল বিরতিহীন। ট্রেনের ৬৫০৮ নম্বর বগিটিতে ওই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ওই বগিতে প্রায় ৬০ জন যাত্রী ছিলেন। পরে ওই বগির যাত্রীদের ভিন্ন ভিন্ন বগিতে স্থানান্তর করা হয়। এক ঘণ্টা দেরিতে ৬৫০৮ বগিটি রেখে ওই ট্রেন ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ৯টার দিকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাকসাম রেলওয়ে জংশন অতিক্রমকালে হঠাৎ একটি বগির নিচে আগুন দেখা যায়। এ সময় রেলকর্মী ও যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে চালক ট্রেনটি থামান। আতঙ্কিত যাত্রীরা দিক-বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। তবে কোনো যাত্রী হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

লাকসাম রেলওয়ে জংশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার ইকবাল হোসেন জানান, ওই দুইটি দুর্ঘটনায় কোন ধরণের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আর এনিয়ে যাত্রীদেরও আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। কারন এ ধরনের যান্ত্রিকত্রুটি হতেই পারে।