সংরক্ষিত বনের পাশে ইটের পাঁজা, নীরব প্রশাসন
বরগুনার তালতলীতে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাছাকাছি পাঁজা তৈরি করে ইট পুড়ছে এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা। সচেতন মহল বলছে প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়াতে ধ্বংসের মুখে সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
আইনের তোয়াক্কা না করে শুভসন্ধ্যার সমুদ্র সৈকতের ১ কিলোমিটারের ভেতরে ও আশ-পাশে ফসলি জমি ও জনবসতির মাঝে গড়ে ওঠেছে অবৈধ চারটি ইটে পাঁজা। এতে নির্বিচারে ফসলি জমির মাটি কেটে ও সংরক্ষিত বনের গাছ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইট। এই ইটের পাজার কালো ধোঁয়ায় সংরক্ষিত বন ঝুঁকিতে পড়ছে। এতে একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমির উর্বর শক্তি, অন্যদিকে কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ তে বলা হয়েছে, সরকারি বনাঞ্চলের সীমারেখা হতে ২ (দুই) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কোনো ধরনের ইটভাটা তৈরি ও ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসাবে কোনো কাঠ ব্যবহার করা যাবে না। আর কৃষি জমি, আবাসিক এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না বলে আইনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে।
জানা গেছে এসব ইটভাটাগুলো মেনিপাড়া এলাকার সোবাহান ও জাহিদ, শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের পাশের রাসেল ও একই এলাকার বাচ্চু হাওলাদারের।
শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের পাশে একটি ইটপাঁজার মালিক রাসেল বলেন, বনের ২ কিলোমিটারের ভিতরে আমার ইটের পাঁজা। এতে কোনো পরিবেশের ক্ষতি হয় না।
মেনিপাড়া এলাকার একটি ইটপাঁজার মালিক জাহিদ মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। এদিকে, মেনিপাড়া এলাকার আরেক ইটপাঁজার মালিক বলেন, সবাইকে ম্যানেজ করেই এই ইটের পাঁজা তৈরি করছি।
বরগুনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি হাচানুর রহমান ঝন্টু বলেন, দীর্ঘদিন পর্যন্ত বনের পাশে ইট ভাটা ও পাঁজা থাকার পরও বন বিভাগের উদাসীনতার কারণে এভাবেই বন একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। আর নিয়মিত বনের পাশে বনের ভিতরে ইটের পাঁজা তৈরি করে ইট পুড়লে পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। তবে প্রশাসন কী কারণে ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা ভেবে পাচ্ছিনা।
তালতলী বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা নয়ন মিস্ত্রি বলেন, শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের পাশে যে কয়টা ইটের পাঁজা আছে সেগুলো উচ্ছেদের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলে উচ্ছেদ করা হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম মিঞা বলেন, এই ইটের পাঁজাগুলোর খোঁজ-খবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।