২০ টাকায় মাস্ক বিক্রি করছে শিশু লিয়ন
লিয়ন, বয়স আট। করোনাভাইরাস কি বা মানুষ কেন মাস্ক ব্যবহার করছে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা নেই তার। তবে অন্যদের দেখাদেখি সেও মাস্ক বিক্রি করছে।
বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় লিয়ন স্বল্পপুঁজি দিয়ে এ ব্যবসা শুরু করেছে। অন্যদের মতো কয়েক গুণ বেশি দামে নয় প্রতিটি মাস্ক ২০ টাকায় বিক্রি করছে সে। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য নয়, ব্যবসার স্বার্থে লিয়ন নিজেও একটি মাস্ক পরেছে। তার বিশ্বাস মুখে মাস্ক দেখে অনেকে তার কাছ থেকে কিনতে আসবে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবরের পর পীরগাছা উপজেলাজুড়ে মাস্কের চাহিদা বেড়ে যায়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা একটি মাস্ক কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে। ৩০ টাকার মাস্ক অনেককে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
সরকার দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর বাজার থেকেই মাস্ক উধাও হয়ে যায়। গত কয়েকদিন থেকে উপজেলার কোথাও মাস্ক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানগুলোতে হন্যে হয়ে খুঁজেও একটি মাস্ক মিলছে না। তবে কিছু কিছু দোকানি সংকটের কথা বলে গোপনে বেশি দামে মাস্ক বিক্রি করছে।
শুধু মাস্ক নয়, উপজেলাজুড়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন।
সোমবার (২৩ মার্চ) উপজেলার কান্দির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে টেবিলের উপর কয়েকটি মাস্ক সাজিয়ে রেখে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছে লিয়ন। তার দাবি, মানুষ কি কারণে মাস্ক ব্যবহার করছে সেটা তার জানা নেই। তবে মাস্কের প্রচুর চাহিদার কারণে অস্থায়ীভাবে সে এ ব্যবসা শুরু করছে।
লিয়ন জানায়, স্থানীয়ভাবে প্রতিটি মাস্ক ৮ থেকে ১০ টাকায় ক্রয় করেছে সে। বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় ২০ টাকা দরে বিক্রি করছে। এতে ভালোই লাভ হচ্ছে।
বাজারে মাস্ক কিনতে আসা ছলিম মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বাজারে প্রচুর চাহিদার কারণে বেশি দামে মাস্ক বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা সংকটের সময় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সেখানে ছোট্ট লিয়ন তুলনামূলক কম দামেই মাস্ক বিক্রি করছে। একই মাস্ক অন্যরা আরও বেশি দামে বিক্রি করছে।’
আরেক ক্রেতা জামাল মিয়া বলেন, ‘উপজেলার প্রতিটি হাট বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর প্রতিদিনই বাড়ছে। একই সঙ্গে মাস্কের সংকট তৈরি করে গোপনে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’