আমতলী থানার ওসি প্রত্যাহার
হাজতে সন্দেহভাজন আসামির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় বরগুনার আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ মার্চ) বিকেলে তাকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
আমতলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম জানান, ওসি আবুল বাশার স্যার বরগুনা চলে গেছেন। আমরা এখনো তার প্রত্যাহারের কোনো কাগজ পাইনি। তবে মৌখিকভাবে শুনেছি, তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কলাগাছিয়া গ্রামে গত বছর ৩ নভেম্বরে ইব্রাহিম নামের এক কৃষককে হত্যা করে ধান ক্ষেতে ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় শানু হাওলাদারের সৎ ভাই মিজানুর রহমান হাওলাদার ওই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গত সোমবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সহেন্দভাজন আসামি হিসেবে পুলিশ শানুকে ধরে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) সকাল ৬টার দিকে ওসির কক্ষে ফ্যানের সঙ্গ ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।
ওসির আবুল বাশারের দাবি, সকালে শানু টয়লেটে যাওয়ার কথা বললে পুলিশ তাকে সেখানে নিয়ে যায়। পরে এক ফাঁকে শানু ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রির কক্ষে ঢুকে ফ্যানের সঙ্গে রশি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়ায় এর আগে তাৎক্ষণিকভাবে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও ডিউটি অফিসার এএসআই আরিফুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. তোফায়েল আহম্মেদকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন পুলিশ সুপার। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মো. মহব্বত আলী ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম।
এদিকে, মৃতের পরিবারের দাবি ছিল, বিনা অপরাধে ওসি শানুকে ধরে নিয়ে গিয়ে তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষের টাকা দিতে অস্বীকার করায় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে নির্যাতন সইতে না পেরে মঙ্গলবার দুপুরে তিনি পরিবারের মাধ্যমে ওসিকে ১০ হাজার টাকাও দেন। কিন্তু ১০ হাজার টাকায় তিনি খুশি হননি। আরও টাকার জন্য নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে বারবার পরিবারের কাছে ঘুষের টাকা দাবি করেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান মো. তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, থানায় আসামির মৃত্যুর মূল কারণ কি, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শুরু করেছি। অল্প দিনের মধ্যেই তদন্ত শেষ হবে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে আমতলী থানার ওসি আবুল বাশারকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।