করোনা ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে শ্রমিকরা
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারাদেশে গণপরিবহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ভাইরাস থেকে সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ার প্রায় ৮০ শতাংশ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যেগুলো খোলা আছে সে ব্যাপারে আগামীকালের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কারখানা বন্ধ হওয়ায় শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বাইপাইল ও নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় দেখা যায়। ছুটি পেয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন গণপরিবহণ যাত্রী বোঝাই করে ছুটছে গন্তব্যে।
শনিবার (২৮ মার্চ) রাতে আশুলিয়ার বাইপাইল ও নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে সরেজমিনে দেখা যায়, পলাশ পরিবহন, ধামরাই পরিবহন, সাভার পরিবহন, বাদশা পরিবহন, পিংকি পরিবহন ও শতাব্দী পরিবহন ছাড়াও ট্রাক ও পিকআপে করে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে এসব পরিবহন। পিকআপ ও ট্রাকে গাদাগাদি করে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে শ্রমিকরা।
গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে রিদয়। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জ আমার বাড়ি। যাব কিন্তু কোন গাড়ি পাচ্ছি না। পিকআপে ৩০০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। আর লোকাল গাড়িতে ৪০০ টাকা। পিকআপে কষ্ট হবে তাই ৪০০ টাকা দিয়েই সাভার পরিবহনে উঠলাম। যে কোনো ভাবেই বাড়ি ফিরতে পারলে বেঁচে যাই।
গাইবান্ধা যাওয়ার জন্য বাসে ধামরাই পরিবহনে উঠেছেন শিমুলী। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঢাকায় করোনাভাইরাস আসছে। তাই আমাদের কারখানা বন্ধ দিয়েছে। ঢাকায় ভাইরাস আসার কারণে আমরা বাড়ি যাচ্ছি। যত কষ্টই হোক আমরা বাড়ি যাব।
পিকআপ চালক খায়রুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা গত ২৪ মার্চ থেকে বাসায় বসে আছি। ঘরের চাল শেষ হয়ে গেছে তাই গাড়ি নিয়ে বের হতে বাধ্য হয়েছি। গাড়ি নিয়ে বের না হলে না খেয়ে থাকবে আমার পরিবার। পরিবারের দিকে তাকিয়ে জেল জরিমানা তুচ্ছ করে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। আমি সিরাজগঞ্জের যাত্রী উঠাইছি। চালের টাকা হলেই গাড়ি বন্ধ করে দিমু।
সাভার পরিবহনের চালকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ভাই কয়দিন ধরে তো বসেই আছি। পকেটে টাকা পয়সা নাই। আমাদের তো আর কেউ খাবার দেয়না, কেউ খোঁজ খবরও নেয় না। গাড়ি না চালালে আমরা না খেয়ে থাকুম। ঘরে চাল ডাল দিলেই তো আর গাড়ি বের করা লাগে না। বাজার বাসায় দিলে আমরা আর গাড়ি বের করবো না।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, গণপরিবহণ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় গণপরিবহণ রাস্তায় নামানো বে-আইনি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এ ব্যাপারে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।