করোনা: পীরগাছায় বিপাকে ৪ হাজার জেলে পরিবার
এক সময়ের খরস্রোতা তিস্তা এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। গত দুই মাস থেকে নদীতে মাছ ধরা পড়ছে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এখন দল বেধে মাছ ধরাও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছে জেলে পরিবারগুলো। শুধু তিস্তা নয়, রংপুরের পীরগাছার চার নদের ওপর নির্ভরশীল চার হাজার জেলে পরিবারের একই অবস্থা।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে জেলেরা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করলেও শুষ্ক মৌসুমে চরম বিপাকে পড়ে। বছরের ছয় মাস মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চলে। বাকি ছয় মাস ধার দেনা করে চলতে হয়। এতে পরিবারের ভরণ পোষণের ব্যয়ভার নিতে অনেক জেলেকেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। দেনার দায়ে অনেকে এলাকা ছাড়া। গত দুই মাস থেকে নদ-নদী, খাল ও পুকুর পানিশূন্য হয়ে পড়ায় মাছ শিকার করতে পারছেন না। সংসার চালাতে জেলেরা পেশা বদলে কৃষিসহ বিকল্প কাজে জড়িয়ে পড়েছে। অনেকে রিকশা-ভ্যান চালাতো। কিন্তু করোনাভাইরাস রোধে ঘরে থাকতে হচ্ছে জেলে পরিবারগুলোকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রায় চার হাজার জেলে পরিবারের অবস্থা করুন। তারা দিন এনে দিন খায়। তাদের কোনো পুঁজি নেই। প্রতিটি পরিবারে সদস্য সংখ্যাও তুলনামূলক বেশি।
তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্রামের উজ্জল চন্দ্র বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'তিস্তাসহ তাম্বুলপুর ছাড়ায় পর্যাপ্ত পানি নেই। অন্য কোনো কাজ পারি না। বেকার বসে আছি। ধার দেনা করে সংসার চলছে।'
কান্দি ইউনিয়নের মাঝি পাড়ার বিমল চন্দ্র ও গাড়ো চন্দ্র বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরি, অন্য সময় দিনমজুরি করি। এখন সব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘরে বসে আছি। চরম আর্থিক সংকটে পড়েছি।'
পীরগাছা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'নদী, খাল-বিলে এখন তেমন পানি নেই। তাই বেশকিছু দিন থেকে মাছও ধরা পড়ছে না। তাই বেশিরভাগ জেলে বেকার রয়েছে'।