দাম কম, তবুও দেখা নেই ক্রেতাদের

  • আল মামুন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিক্রেতাদের অলস সময় পার/ছবি: বার্তা২৪.কম

বিক্রেতাদের অলস সময় পার/ছবি: বার্তা২৪.কম

করোনাভাইরাসের কারণে বিরূপ প্রভাব পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাইকারি বাজারে। বাজারগুলোতে আগে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও বর্তমানে ব্যবসায়ীদের টিকে থাকাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারের দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত পণ্য থাকার পরও অলস সময় পার করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। সারাদিনে বসে থেকে দু’একজন ক্রেতার দেখা পাচ্ছেন কেউ কেউ। বাজারে এখন ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। যারাও আসছেন শুধু দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। যার কারণে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের সুদ মওকুফের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

রোববার (২৯ মার্চ) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একমাত্র পাইকারি ও খুচরা মালের আড়ত জগৎ বাজার ও আনন্দ বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য।

বিজ্ঞাপন
বাজারে দেখা নেই ক্রেতাদের/ছবি: বার্তা২৪.কম

জেলা শহরের একমাত্র পাইকারি ব্যবসার আড়ত হওয়ার কারণে একসপ্তাহ আগেও এই বাজারে ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকত। প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয় এই বাজারে। কিন্তু দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার কারণে সরকারের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্তে বাজারে কমেছে ক্রেতাদের ভিড়। এতে করে বেচা কেনা না থাকায় ব্যবসায়ীরা পড়েছেন লোকসানে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বসে থেকেও পাচ্ছেন না ক্রেতার দেখা। আর যারাও আসছেন দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন।

তবে ব্যবসায়ীরা জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনের খবরে এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই বেড়ে যায় সব নিত্যপণ্যের দাম। বর্তমানে সব পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু তারপরেও বাজারে ক্রেতাদের দেখা নেই। অনেকেই ধারণা করছেন আগে থেকে পণ্য কিনে নেয়া ও রাস্তাঘাটে যান চলাচল করতে না পারার কারণে ক্রেতারা আসছেন না বাজারে। বর্তমান বাজারে পিয়াজের দাম রয়েছে ৩৬ থেকে ৪৫ টাকা, রসুন দেশী ৮৫ টাকা, বিদেশি ১৩০-১৪০ টাকা, আদা ১৩০ টাকা, হলুদ ১২০-১৮০ টাকা, সয়াবিন তেল ৫ লিটার কন্টেইন ৪৯০-৫০০ টাকা, মসুর ডাল ৭০-৭৫ টাকা, বুট ৬৫-৭০ টাকা, নাজির সাইন চাল প্রতি বস্তা ২ হাজার ৩২০ টাকা, বি আর ২৮ প্রতি বস্তা চিকন ১ হাজার ৯৫০ টাকা, বি আর ৪৯ প্রতি বস্তা এক হাজার ৮৫০ টাকা, বি আর ২২ প্রতি বস্তা ১ হাজার ৭৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন
বিক্রেতাদের অলস সময় পার/ছবি: বার্তা২৪.কম

জগৎ বাজারের মদিনা টি এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. ইমন মিয়া বার্তা২৪.কম-কে জানান, করোনাভাইরাসের কথা শোনার পর থেকে দোকানে ক্রেতারা আসেন খুব কম। যারাও আসেন দাম জিজ্ঞেস করে চলে যান। শহরের সাথে অন্য এলাকার গাড়ি চলাচলও খুব কম। যার কারণে বেচা-বিক্রিও তেমন ভাল না। আগে যেখানে প্রতিদিন বেচা কেনা হত প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার টাকা। সেখানে আজ বিক্রি করেছি মাত্র ১৫০ টাকা।

পাইকারি মালের দোকান কাউছার ট্রেডার্সের মালিক মো. নাছির উদ্দিন জানান, আগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই লাখ টাকা বেচাকেনা হত বর্তমানে সেই বেচাকেনা মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজারে ঠেকেছে। মানুষ খুব প্রয়োজন ছাড়া বাজারে আসছে না। আর যারা আসছেন সীমিত পণ্য নিয়ে চলে যাচ্ছেন। দূরের কোনো ক্রেতা বাজারে আসতে পারছেন না। তাই বাজারে ক্রেতাদের দেখা নাই।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ্ব মো. আজিজুল হক বার্তা২৪.কম-কে জানান, করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে সারা দেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে বাজারের যে অবস্থা এই ধারা চলমান থাকলে বিপুল পরিমাণ অর্থের ক্ষতি হবে ব্যবসায়ীদের। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে আমাদের ব্যবসায়ীদের যেসব ব্যাংকে ঋণ রয়েছে সেসব ঋণের সুদ যেন মওকুফ করা হয়।