করোনায় সাদুল্লাপুরে লোকসানের মুখে দুগ্ধ খামারিরা
আগে দুধ বিক্রি করে মাসে ভালো আয় হতো। কিন্তু করোনার কারণে লাভের মুখতো দেখি না। উল্টো খরচের টাকা জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে। লোকসানের কারণে রাতে ঘুমাতেও পারছি না।
আক্ষেপের সুরে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন সাদুল্লাপুর উপজেলার দুগ্ধ খামারি সবুজ মিয়া (২৫)।
শিক্ষা জীবনে বিএ পাশ করেও স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় নিজেই গরুর খামার দেন তিনি। তার এই কাজে সাহায্য করেন তার পিতা সাইদার রহমান। ৩ বছর আগে শুরু করেছিলেন এই খামার। নিজের জমানো টাকা ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ফ্রিজিয়াম জাতের ৪টি গাভী কেনেন তিনি। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গাভীগুলো বাচ্চা দেয়। এরপর থেকেই খামারের দুধ বিক্রি করা শুরু করেন।
বর্তমানে তার খামারে ১৪টি গরু রয়েছে। তার মধ্যে ৮টি গাভী। এই গাভীগুলোর দুধ বিক্রি করেই তার সংসার চলে। দৈনিক ১২০ লিটার দুধ পাওয়া যায় গাভীগুলো থেকে। ৩৮-৪০ টাকা দরে এই দুধ বিক্রি করেন তিনি। সব খরচ শেষে মাসে ৪০ হাজার টাকা উপার্জন হতো তার।
সবকিছু ভালো চললেও সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে তার ব্যবসায় ভাঁটা পড়েছে। স্থানীয় বাজার বন্ধ থাকায় দুধ বিক্রি করতে পারছেন না তিনি। বাধ্য হয়ে মাত্র ১৫-২০ টাকা কেজি দরে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে। এতে লাভতো হচ্ছেই না। উল্টো খামারের খরচ তুলতে বেগ পেতে হচ্ছে তাকে।
খামার মালিক সবুজ মিয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে এমন লকডাউন চলতে থাকলে লাখ টাকা ক্ষতি হবে। খামার করতে ১০ লাখ টাকার ঋণ নিতে হয়েছে। ঋণের টাকা কিভাবে পরিশোধ করতে সেটাই বুঝছি না।
সবুজ মিয়ার মতো সাদুল্লাপুর উপজেলার শ্রীকলা গ্রামের ৩০-৩৫টি গরু খামারিদেরও একই অবস্থা। করোনাভাইরাসের কারণে তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। প্রত্যেক ব্যবসায়ী ঋণের টাকায় এই গরু ব্যবসা শুরু করেছিলেন।
গাইবান্ধা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার দেব খামারিদের ক্ষতির কথা স্বীকার করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, এলাকায় করোনাভাইরাস মুক্ত হলে খামারিদের উৎপাদিত দুধ ন্যায্য মূল্যে বাজারজাতের ব্যবস্থা করা হবে।