ত্রাণের খোঁজে ছুটছেন অসহায় মানুষ
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গাইবান্ধা জেলায় প্রায় ২৪ লক্ষাধিক মানুষ গৃহবন্দি রয়ে পড়েছেন। ফলে দিনমজুর মানুষ হয়েছেন কর্মহীন। কর্মহীন এই মানুষগুলো পেটের টানে ত্রাণের খোঁজে ছুটছেন এদিক-সেদিক।
সম্প্রতি প্রাণঘাতী করোনার প্রভাবে গাইবান্ধা জেলার সাতটি উপজেলার এক হাজার ২’শ গ্রামের ছিন্নমূল পরিবারে দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট। এসব মানুষের ঘরে ঘরে চলছে নিরব দুর্ভিক্ষ। দৈনন্দিন রোজগার করতে না পেরে থমকে গেছে তাদের জীবনযাপন। চরম বেকায়দায় পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষেরা। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে ত্রাণের জন্য ভিড় করছেন বিভিন্ন স্থানে।
জানা যায়, কয়েক মাস আগেও গাইবান্ধায় জেলায় বয়ে গেছে ভয়াবহ বন্যা। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৫ লাখের বেশি মানুষের। এরপর ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাবসহ ডেঙ্গু জ্বর আতঙ্কে ভুগছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত মানষেরা। এমন পরিস্থিতি থেকে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় জমিতে বুনেছিলেন নানা ধরণের ফসল। এতেও ঘনকুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষকেরা। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহপালিত গবাদিপশুর মধ্যে ল্যাম্পি স্কিন রোগও ছড়িয়ে পড়ে। ওইসব বিষয়গুলো মোকাবিলার চেষ্টা করতে না করতেই এরইমধ্যে দেখা দিয়েছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। একের পর এক দেখা দিচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘা। সবমিলে গাইবান্ধাবাসীর মধ্যে চলছে হাহাকার।
সরকারের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তৎপর হয়ে উঠেছেন। আর এর প্রভাব পড়েছে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের উপর। বিশেষ করে বেকায়দায় রয়েছেন অসহায় গরিব মানুষেরা। অঘোষিত লকডাউনের কবলে এসব মানুষদের খাদ্য মোকাবিলায় গাইবান্ধা জেলার ৮২ টি ইউনিয়ন ও ৪ টি পৌরসভা এলাকায় চলছে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম। সরকারি বরাদ্দসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা, ব্যক্তি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা সচেতনতা বৃদ্ধি অব্যাহত রেখে চাল-ডাল, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছে। আর এসব সামগ্রী সংগ্রহ করতে দুস্থ মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বাসিন্দা লাজু মিয়া জানান, গত ৮ মাসের মধ্যে কয়েকটি দুর্যোগ এসেছে তাদের উপর। এখন জীবন বাঁচাতে চলছে ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহের চেষ্টা ।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বার্তা২৪.কমকে জানান, করোনাভাইরাস প্রভাবে কর্মহীন মানুষদের জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত সাতটি উপজেলায় ৫ হাজার মানুষের মধ্যে ৫১ মেট্রিক টন খাদ্যসামগ্রী ও নগদ ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। এমন কার্যক্রম চলমান থাকবে।