সাজেকে হামে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ দিনে নয় শিশুর মৃত্যু
নির্দিষ্ট সময়ে টিকা না দেওয়ায় রাঙামাটির বাঘাইছড়ির উপজেলাধীন দুর্গম সাজেক ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে হামে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত এক মাসে হামে আক্রান্ত হয়ে সাজেকে অন্তত ৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নিশ্চিত করেছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) মারা গেছেন নিকেতন চাকমা (১৫)। সে সাজেকের বেটলিং এলাকার বাসিন্দা সুরেশ চাকমার সন্তান।
ইউপি সদস্য গরেন্দ্র ত্রিপুরা জানান, এনিয়ে গত একমাসের ব্যবধানে সাজেকে ৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত সাজেকে ১৫০ শিশু হামে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এদিকে, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, সাজেকবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে ইতোমধ্যেই সেখানে সেনাবাহিনী-বিজিবি ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৫টি টিম প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে কাজ করছে। তিনি জানান, বাঘাইছড়ির ইউএনও’র মাধ্যমে সাজেকে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জৌপৈই থাং ত্রিপুরা জানিয়েছেন, অরুন পাড়া, লাংকাটান পাড়া ও হাইচ্যাপাড়া নামক এই তিনটি এলাকায় হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় গত ফেব্রুয়ারিতে। ইতোমধ্যে কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামে রোগটি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী ১৪ দিনে হামে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া শিশুরা হলো- সাগরিকা ত্রিপুরা (১১), সুজন কুমার (৯) কহেন ত্রিপুরা (১০), বিধান ত্রিপুরা (১২), রেজিনা ত্রিপুরা (২), নিক্সন ত্রিপুরা (৩)। ২২মার্চ প্রাণ হারায় গোরাতি ত্রিপুরা (৯), ২৩মার্চ বিকেলে সাগরিকা ত্রিপুরা (১৩), ২৪ মার্চ দিবাগত গভীর রাতে মারা যায় আরও এক শিশু। সর্বশেষ মঙ্গলবার বেটলিংয়ে মারা যায় নিকেতন চাকমা (১৫)। এনিয়ে ৩৫ দিনে মারা গেছে ৯ শিশু।
এর আগে গত ২৫ মার্চ চট্টগ্রামস্থ জিওসি কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিম হেলিকপ্টারে সাজেকে যায় এবং সেখান থেকে হামে আক্রান্ত ৫ শিশুকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে সেরে তোলে।
সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা জানান, নতুন করে আরও কয়েক গ্রামে হাম রোগ দেখা দিয়েছে। এসব শিশুদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি জানান।