ডাক্তারের ভূমিকায় ব্রিটিশ ট্যোবাকোর সিকিউরিটি গার্ড!
করোনা সংক্রামণ রোধে দেশের প্রায় বেশির ভাগ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক নিয়ম কানুন মেনে চলমান রয়েছে হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এসব নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করেই কোন ধরনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছাড়াই চালু রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর মানিকগঞ্জ ডিপো। চাকরি হারানোর ভয়ে করোনা সংক্রামণ ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছে শ্রমিকেরা।
বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে ব্রিটিশ ট্যোবাকোর প্রধান ফটকে কারখানার খোঁজ নিতে গেলে আলাপ হয় সিকিউরিটি গার্ডদের সাথে। এসময় কারখানায় প্রবেশের আগে ডাক্তারের অ্যাপ্রোন পরিহিত এক সিকিউরিটি গার্ড থার্মোমিটার দিয়ে সাংবাদিকদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করেন। শুধু সাংবাদিক নয় কারখানার সব শ্রমিক এবং কর্মকর্তাদের তামমাত্রা মেপে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেন তিনি। নিজেদের কোনো চিকিৎসক না থাকায় এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি কারখানা শ্রমিকদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানায় কর্মরত একাধিক শ্রমিক জানান, করোনা সংক্রামণ ঠেকাতে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলেও তাদেরকে কাজে আসতে বাধ্য করছে কর্তৃপক্ষ। কাজে না আসলে চাকরি থাকবে না বলে ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়ে কাজ করে যাচ্ছে তারা। তবে রাতে অফিসে যেতে রাস্তাঘাটে পুলিশের পিটুনির ভয় নিয়ে কাজে যেতে হয়। এছাড়া কারখানায় কোন চিকিৎসকও নেই। এক সিকিউরিটি গার্ডের থার্মোমিটার দিয়ে চলছে কারখানা। একটু খারাপ লাগলে বা শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও কারখানায় কোনো ডাক্তার দেখানোর সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর মানিকগঞ্জ ডিপোর রিজিওনাল লিফ ম্যানেজার মো. ফেরদৌস করিম কোনো প্রকারের তথ্য প্রকাশে অনিহা জানান। এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য তাদের আলাদা ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। তবে করোনা ঝুঁকিতে নিয়মিত অফিস করা বেশ কষ্টকর বলে জানান তিনি।
এসব বিষয়ে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশ'র সিনিয়র করপোরেট এ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার আনুয়ারুল আমিন জানান, করোনা ইস্যুতে বেশ কয়েকদিন ধরে ছুটিতে রয়েছে তাদের চিকিৎসক। কারখানার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে তিন শিফটে মোট ত্রিশ জন শ্রমিক আর অল্প কিছু অফিসার কাজ করছে। তাছাড়া তাদের অফিস চালিয়ে যেতেও কোন বাধা নেই। আর সিকিউরিটি গার্ড দিয়ে শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার বিষয়ে তিনি অবগত নন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর মানিকগঞ্জ ডিপোর কার্যক্রম সম্পর্কে কোম্পানির কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।