ঝুঁকি নিয়েই পদ্মা পার!
করোনাভাইরাসের প্রভাবে রোববার (৫ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে হঠাৎ করেই সীমিত আকারে চলা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় চরম বিপাকে পড়েছে ঢাকাগামী কর্মমুখী মানুষ। সেই সাথে বিপাকে পড়েছে কাঁচামাল বহনকৃত পণ্যবাহী ট্রাকের মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলেও থেমে থাকেনি ঢাকাগামী মানুষের নদী পার। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তারা পার হচ্ছেন নদী। জনসমাগম ও গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও বন্ধ নেই তাদের চলাচল। ঝুঁকি জেনেও তারা নিরূপায় হয়েই নদী পার হচ্ছেন।
রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় সরেজমিন দৌলতদিয়া ২ নং ফেরি ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, হঠাৎ করে ফেরি বন্ধ ঘোষণা করায় ঢাকাগামী মোটরসাইকেল চালকরা ছোট ছোট নৌকায় করে তারা গাড়ি উঠিয়ে নিয়ে নদী পার হচ্ছেন। নৌকার কোন ঘাট না থাকায় গাড়ি উঠানোর জন্য মোটর যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকা একটি ফেরির ওপর অপেক্ষা করছে। সেখান থেকে একটি মই বেয়ে তারা নৌকার ওপর উঠছে।
মই থেকে কোন রকম স্লিপ কাটলেই প্রায় ৪০ হাত পানির নিচে পড়ে যেতে হবে তাদের। এটা জানার পরও তারা জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই পার হচ্ছেন নদী। এই নদী পারের জন্য প্রত্যেক মোটর সাইকেল প্রতি ৩৫০ টাকা ও জনপ্রতি ৪০টাকা নিচ্ছে নৌকার মাঝি। ঘাটে প্রায় ১০টির মতো নৌকা একাজে নিয়োজিত আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গার্মেন্টস কর্মী বার্তা২৪.কমকে বলেন, কি করবো ভাই। একদিকে সরকার গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে অন্যদিকে আবার গার্মেন্টস খোলা রেখেছে। আমরা কি করতে পারি বলেন? গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ ফোন দিয়ে বলেছে চাকরি করতে হলে আসতে হবে। তাই নিরূপায় হয়েই জীবনের তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছি।
এ সময় অনেকেই হঠাৎ করে ফেরি বন্ধ করার কঠোর সমালোচনা করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা কি মানুষ নাকি? মানুষ হলে তো আমাদের দিকটা বিবেচনা করা হত। রাতেও খোঁজ নিয়েছি ঘাটে তখনও ফেরি চলছিল। সকালে ঘাটে এসে দেখি ফেরি বন্ধ। কোন জবাবদিহিতা নেই, নেই কোন সিস্টেম।
সীমিত আকারে চলা ফেরি হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা করার বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের শাখা ব্যবস্হাপক (বাণিজ্য) আবু আব্দুল্লাহ রনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, শনিবার ঘাটে অতিরিক্ত জনসমাগম ঘটেছিল। কিন্তু সরকারের নির্দেশ ছিল কোন ধরনের জনসমাগম ঘটানো যাবে না। তাই আজ সকাল থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে শুধুমাত্র অ্যাম্বুলেন্স পার করার জন্য দুই ঘাটে দুটি ফেরি চলাচল করবে।