Travelettes Of Bangladesh এর এক্সিবিশনে ছবি জমা দিন, শেষ সময় ৭ জুলাই
শিল্প-সাহিত্য
নারীদের ভ্রমণ সংগঠন Travelettes Of Bangladesh ৪র্থ বারের মতো ট্রাভেল ফেস্ট ও ফটোগ্রাফি এক্সিবিশনের আয়োজন করতে যাচ্ছে। আগামী ১- ৭ আগস্ট শিল্পকলা একাডেমিতে এ আসর বসতে যাচ্ছে। সবার জন্য উন্মুক্ত এ প্রদর্শনীতে যে কেউ তার নিজের তোলা ছবি জমা দিতে পারবে আগামী ৭ জুলাই’র মধ্যে।
ট্রাভেল ফেস্ট ও ফটোগ্রাফি এক্সিবিশনের ইভেন্ট লিংক https://www.facebook.com/events/776909890292625 ফটোগ্রাফি এক্সিবিশনের পাশাপাশি মেয়েদের জন্য সুযোগ রয়েছে ভ্রমণকন্যা ম্যাগাজিনে নিজের লেখা ছাপানোর। ভ্রমণের যে কোনো অভিজ্ঞতা নিয়ে আপনি লিখতে পারেন। এই ট্রাভেল রাইটিং কম্পিটিশনেও কিন্তু পুরস্কার জেতার সুযোগ রয়েছে!
বিজ্ঞাপন
ছবির ক্যাটাগরি ও রাইটিং কম্পিটিশন মিলিয়ে পুরস্কার পাবে ১৫ জন। তারা প্রত্যেকেই পাবেন US Bangla Airlines এর পক্ষ থেকে ঢাকা-ব্যাংকক-ঢাকা, ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা এবং ঢাকা-সিলেট-ঢাকা’র টিকিট। শু ছবি ও গল্প নিয়ে প্রকাশিতব্য ম্যাগাজিন/ফটোবুকের 'Publication Partner' হিসেবে থাকছে পাঠক সমাবেশ। এবং তাদের পক্ষ থেকে বিজয়ীদের দেয়া হবে গিফট কার্ড।
কেমন হয় আপনার এই প্রিয় মুহূর্তগুলো বাকি সবাইকে দেখার একটা সুযোগ করে দিলে? আপনাদের কথা ভেবেই ভ্রমণকন্যা এক্সিবিশনটি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ১-৭ আগস্ট, ২০২৩। আয়োজনটি ছেলে মেয়ে সবার জন্য উন্মুক্ত। ছাপা কাগজে নিজের নাম কে না দেখতে চায়?
বিজ্ঞাপন
দেশের নারীদের ভ্রমণে আগ্রহী করে তোলার জন্য গত ৭ বছর ধরে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ভ্রমণকন্যাদের দল। বর্তমানে এই গ্রুপে ৮৫ হাজার নারী আছেন। এই আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে তুলতেই আন্তর্জাতিক এই এক্সিবিশনের আয়োজন, যেখানে দেশ-বিদেশের সকলেই অংশ নিতে পারবেন।
‘ওই খানে তোর দাদির কবর ডালিম গাছের তলে/ তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে’ বা ‘তুমি যাবে ভাই যাবে মোর সাথে/ গাছের ছায়া লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়’ কিংবা বাবু সেলাম বারে বার, আমার নাম গয়া বাইদ্যা বাবু বাড়ি পদ্মার পাড়’ - এমন শত কবিতা, গল্প, নাটক আর গানের মাধ্যমে পল্লী মানুষের সুখ-দুঃখের কথা তুলে ধরে যে কবি পেয়েছিলেন পল্লীকবির উপাধি, সেই পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের ১২২তম জন্মবার্ষিকী আজ।
বুধবার (১ জানুয়ারি) কবির জন্মদিন উপলক্ষে অম্বিকাপুরের গোবিন্দপুরে তার সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
১৯০৩ সালের ১লা জানুয়ারি ফরিদপুর শহরতলীর কৈজুরী ইউনিয়নের ছায়া ঢাকা পাখি ডাকা নিঝুম পাড়া গাঁ তাম্বুলখানা গ্রামে নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন কবি জসীম উদ্দীন। কবির বাবার নাম আনছারউদ্দীন, মায়ের নাম আমেনা খাতুন।
কবির পূর্ণ নাম মোহাম্মাদ জসীম উদ্দীন মোল্লা হলেও তিনি জসীম উদ্দীন নামেই পরিচিত। তার বাবার বাড়ি ফরিদপুর শহরতলীর অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও জসিম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোঃ কামরুল হাসান মোল্লা, পুলিশ সুপার আব্দুল জলিলসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইয়াছিন কবিরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান মোল্লা, পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল, কবি পুত্র খুরশিদ আনোয়ার, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি প্রফেসর এম এ সামাদ, প্রফেসর আলতাফ হোসেন, মফিজ ইমাম মিলন প্রমুখ।
ব্যক্তি জীবনে ১৯৩৯ সালে মমতাজ বেগমকে বিয়ে করেন। কবির ৪ ছেলে কামাল আনোয়ার, ড. জামাল আনোয়ার, ফিরোজ আনোয়ার ও খুরশীদ আনোয়ার, ২ মেয়ে হাসনা জসিম উদ্দীন মওদুদ ও আসমা এলাহী তারা সকলেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে স্বনামধন্য ছিলেন।
কবির শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর শহরের হিতৈষী স্কুলে। সেখানে প্রাথমিক শেষ করে তিনি ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে ১৯২১ সালে ম্যাট্রিক, ১৯২৪ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তিনি ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাশ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগদান করেন তিনি। ১৯৬১ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
পল্লীকবি জসীম উদ্দীন ছোট বেলা থেকেই কাব্য চর্চা শুরু করেন। কবির ১৪ বছর বয়সে নবম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় তৎকালীন কল্লোল পত্রিকায় তার একটি কবিতা প্রকাশিত হয়। কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ রাখালী। এরপর তার ৪৫টি বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এছাড়া পল্লী কবির অমর সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে- নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, এক পয়সার বাঁশি, রাখালী, বালুচর প্রভৃতি।
পল্লীকবি জসীম উদ্দীন প্রেসিডেন্ট প্রাইড অব পারফরমেন্স পুরস্কার (১৯৫৮), ১৯৬৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি.লিট উপাধি, ইউনেসকো পুরস্কার, ১৯৭৬, বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক (১৯৭৬) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে (মরণোত্তর, ১৯৭৮) ভূষিত হন। তিনি ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন।
জসীম উদ্দীন ছিলেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার একজন দৃঢ় সমর্থক। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধাও ছিলেন।১৯৭৬ সালে ১৪ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন বাংলা সাহিত্যের এই খ্যাতিমান কবি।
মৃত্যুর পর কবির স্মৃতিকে সংরক্ষণ করতে তার বাড়ির পাশে অম্বিকাপুরে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীনে ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অর্থায়নে প্রায় ৪ একর জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে পল্লীকবি জসীম উদ্দীন সংগ্রহশালা।
উল্লেখ্য, কবির জন্মবার্ষিকীতে এ বছর এখনো ‘জসীম পল্লীমেলা’ আয়োজনের দিনক্ষণ নির্ধারণ হয়নি। নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে অম্বিকাপুরে কবির বাড়ির প্রাঙ্গণে ১ জানুয়ারি থেকে কুমার নদীর তীরে মাসব্যাপী জসীম মেলার আয়োজন শুরু হয়।
মেলায় চারু ও কারুপণ্য ছাড়াও আসবাবপত্র ও বিভিন্ন গৃহস্থালী পণ্যের সামাহার ঘটে। নির্মল বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, সার্কাস এমনকি প্রথমদিকে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী যাত্রাও মঞ্চস্থ হতো। এছাড়া প্রতিদিন মেলার মাঠ প্রাঙ্গণে জসীম মঞ্চে গান, নাচ, নাটকসহ বিভিন্ন লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। ফরিদপুর ছাড়াও এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে জসীম মেলার বিশেষ আবেদন রয়েছে।
চৌকশ ব্যক্তিত্ব। ইংরেজি মাধ্যমের তুখোড় সাংবাদিক। দুর্দান্ত ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। সফল ব্যবসায়ী।
সর্বোপরি, প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর এক মানুষ। যাঁর সান্নিধ্য ও স্মিত হাসি মুখ মন ভালো করে দেয় অন্যদের।
তিনি বুদ্ধ দেব মুখোপাধ্যায়। অবশ্য এই নামে কেউ চিনবে না তাঁকে। খ্যাত ছিলেন বি ডি মুখার্জী নামে।
দীর্ঘদিন রোগভোগের পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য বি ডি মুখার্জী বছরের শেষ দিনে আজ (৩১ ডিসেম্বর ২০২৪) পাড়ি জমিয়েছেন অনন্তলোকে। ঢাকায়।
অধুনালুপ্ত ইংরেজি দৈনিক 'দ্য বাংলাদেশ অবজারভার'-এর সাবেক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং চা বাগান ব্যবসায়ী ছিলেন বি ডি মুখার্জী।
পারিবারিক সূত্রে পাওয়া হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে অবস্থিত বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন তিনি।
বন্ধু কবি হেলাল হাফিজের বিদায়ের (১৩ ডিসেম্বর ২০২৪) দুই সপ্তাহের মাথায় তিনিও চিরবিদায় নিলেন। তিনিও অকৃতদার ছিলেন।
অত্যন্ত স্নেহশীল বি ডি মুখার্জী আমার অত্যন্ত প্রিয়জন। তিনি আমাকে অনুজ জ্ঞান করতেন।
১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে যখন সাংবাদিকতায় আমার হাতেখড়ি, সেই সময় থেকে তরুণ আমাকে যাঁরা সার্বক্ষণিক উৎসাহ ও সাহস যুগিয়েছেন, নানাভাবে প্রশ্রয় দিয়েছেন, নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে অভিভাবক হিসেবে আগলে রেখেছেন, বি ডি মুখার্জী তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য।
জ্যেষ্ঠ ক্রীড়া সাংবাদিক মুহম্মদ কামরুজ্জামান, বি ডি মুখার্জী ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আলমগীর হোসেন সাংবাদিকতায় আমার অলিখিত মেন্টর।
আর সাহিত্য প্রচেষ্টায় কবি আহসান হাবীব, কবি আল-মুজাহিদী ও কবি হেলাল হাফিজ।
সেই সময়ে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী। মুহসীন হলে থাকি। শুরুতে মাসে পাঁচশো টাকা বেতনের খণ্ডকালীন ক্রীড়া সাংবাদিক।
কাজের জন্য ঢাকা স্টেডিয়াম ও সংলগ্ন ক্রীড়াঙ্গন সহ নানা স্থানে যাতায়াতের ফাঁকে বিশ্রাম নিতে ও দুপুরের খাবার খেতে চলে আসতাম জাতীয় প্রেস ক্লাবে। সময় কাটাতাম ক্লাবের গ্রন্থাগারে।
অল্প আয়ের আমি স্বল্প মূল্যে স্বাস্থ্যকর খাবারের জন্য কর্মক্ষেত্রের নিকটবর্তী জাতীয় প্রেস ক্লাবের ক্যাফেতে গিয়ে বসতাম। কিন্তু প্রেস ক্লাবের নিয়ম হলো সদস্য ছাড়া কেউ খাবারের নির্দেশ দিতে পারবে না।
প্রেস ক্লাবের সেই সময়ের নির্বাহী পর্ষদের কর্মকর্তাদের ভ্রুকুটিকে পাত্তা না দিয়ে আমাকে নিজের অতিথি হিসেবে স্থায়ীভাবে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন বি ডি মুখার্জী ও কবি হেলাল হাফিজ।
সেই সুযোগটি সেকালে আমার যে কতো বড় উপকার করেছিল, তা' বলে ও লিখে বোঝানো যাবে না।
আমার অগ্রজপ্রতীম ও অভিভাবকসম এই দুই সাংবাদিকই গত হলেন এই ডিসেম্বর মাসে! মাত্র আঠারো দিনের ব্যবধানে।
ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান বি ডি মুখার্জী বাল্যকালে দার্জিলিং-এ কনভেন্ট স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়ার কারণে ইংরেজি ভাষায় তাঁর দখল ছিল ঈর্ষণীয়।
সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন বি ডি মুখার্জী অসাধারণ খেলোয়াড় ছিলেন।
১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে দিল্লিতে এশিয়ান গেমস-এর সংবাদ কাভার করতে যাওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি সত্ত্বেও স্বৈরশাসক এরশাদের নির্দেশে আমার কর্মস্থল 'দৈনিক দেশ'-এর মালিক ও প্রকাশক মাইদুল ইসলাম মুকুল গ্রেফতার হয়ে যাওয়াতে আমি আর যেতে পারিনি।
দিল্লি ঘুরে আসা কয়েকজন সাংবাদিক আমার জন্য স্যুভেনীর উপহার এনেছিলেন। বি ডি মুখার্জীও এনেছিলেন একটি অসাধারণ উপহার।
১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে আমি দেশে ফিরে তাঁকে ব্রিটেন থেকে আনা একটি বিশেষ ধরণের গ্যাস লাইটার উপহার দিলে ধূমপায়ী বি ডি দা ভীষণ খুশী হয়েছিলেন।
মিছিলের ডাক সবাই শোনে না, শুনেছিলে তুমি, প্রিয়তমার ফুল যুদ্ধের বেদীতে করলে সমর্পণ। যখন পায়ের নিচে মুহূর্মূহু কাঁপে জন্মভূমি, যৌবনের শক্তি দিয়ে বেছে নিলে তুমি রক্ত-রণ। যেরকম কবি নজরুল বাজান প্রলয়ের শিঙ্গা, ক্ষোভ প্রতিবাদ বিরুদ্ধতা দিয়ে যৌবন জাগালে। মাটির ভেতর থেকে উঠে ভেসে চলে যুদ্ধ-ডিঙা, উজানের বৈঠা বেয়ে বিজয়ের সকাল রাঙালে।
তুমি দিলে ডাক যেসময় ছিল তার প্রয়োজন, প্রদর্শন করো নাই আত্মত্যাগ করার প্রমাণ। জানি তোমারই বহু সহযোদ্ধা এবং স্বজন, হুইলচেয়ারে গোঙায়, তুমি কাব্যে ঢালো অভিমান। জীবন কী দেবে তোমায় সেদিকে তাকাওনি একবার, তোমারই ডাক দেবে প্রয়োজনে যৌবন আবার।