কবিতীর্থে একদিন
![-কবিগৃহের আদিরূপে সজ্জিত বাড়ি ও দেয়ালে অঙ্কিত তরুণ নজরুল। ছবি: লেখক](https://imaginary.barta24.com/resize?width=800&height=450&format=webp&quality=85&path=uploads/news/2024/Mar/12/1710235285503.jpg)
-কবিগৃহের আদিরূপে সজ্জিত বাড়ি ও দেয়ালে অঙ্কিত তরুণ নজরুল। ছবি: লেখক
“তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু, আর আমি জাগিব না,/কোলাহল করি’ সারা দিনমান কারো ধ্যান ভাঙিব না।/নিশ্চল নিশ্চুপ/আপনার মনে পুড়িব একাকী গন্ধ বিধূর ধূপ!’’
অনেক ছোটোবেলায় যখন এই কবিতাটি পড়ি তখন কিছুক্ষণের জন্য আনমনা হয়ে পড়েছিলাম। সেদিনের সেই অনুভূতি আজও মনে আছে। কেননা কবি তখন বাকরহিত ছিলেন। সেই ছোটো বয়েসেও অবাক হয়েছিলাম এই ভেবে, তিনি কীভাবে বুঝেছিলেন একদিন তাঁর এমন পরিণতি হবে? সত্যি বলতে আজও এর উত্তর খুঁজে পাইনি। নজরুল, রবীন্দ্রনাথ দু’জনের ওপরেই ছিল সরস্বতীর আশীর্বাদ। সেই অর্থে তাঁদের ছিল না প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি। তবে ছিলেন স্বশিক্ষিত। রবীন্দ্রনাথের পারিবারিক আবহ ছিল সংস্কৃতি চর্চায় পরিপূর্ণ। নজরুলও পিছিয়ে ছিলেন না। তাঁর চাচা বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলের লেটো দলের বিশিষ্ট উস্তাদ ছিলেন। আরবি, ফার্সি এবং উর্দু ভাষায় তাঁর দখল ছিল অপরিসীম। চাচার প্রভাবে নজরুল লেটো দলে যোগ দেন এবং অতি স্বল্প সময়ে তিনি নিজের প্রতিভায় অন্যদের মুগ্ধ করেন। কবিতীর্থ সম্পর্কে কিছু বলার পূর্বে জানাতে চাই কীভাবে চুরুলিয়ায় যাওয়ার প্রোগ্রাম হলো ?
এই বছর জানুয়ারি মাসের শেষদিকে কলকাতায় এক বিয়ের প্রোগ্রামে যেতে হচ্ছিল। সবসময়কার মতো কোথাও যাওয়ার নামে ঢোলে বাড়ি বাজলে আমার মন নেচে উঠে। কিন্তু যতই যাওয়ার দিন ঘনিয়ে আসে ততই মনে হয়, ধুর না গেলেই ভালো হতো। কিন্তু ততদিনে ‘পি কে ডি’র প্ল্যান পেকে টসটসে হয়ে উঠে। অর্থাৎ টিকেট কাটা, থাকা, গাড়ির ব্যবস্থা করা সব কমপ্লিট। অতএব ব্যাগ গোছাতে হয় হাঁড়িমুখে। তবে যখন চাকরিতে ছিলাম তখন বেড়ানোর কথা হলে মন ময়ূরের মতো নেচে উঠত। সেই সময়টায় ছুটি পেতে নানারকমের ঝঞ্ঝাট পোহাতে হতো। আদম সন্তান! সহজলভ্য জিনিসের চেয়ে যেটি পেতে অসুবিধে হবে সেদিক পানে মন ছুটে যেত। ‘পি কে ডি’ দেখল কলকাতায় শুধু বিয়ে খেতে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। এরসাথে আর কোথাও থেকে ঘুরে আসতে পারলে বেশ হতো। আমার তো কলকাতায় যাওয়ার ইচ্ছেই নেই। তাই আর কোথায় যেতে চায় সে বিষয়ে কোনো কৌতূহল ছিল না। জানি মোগলের হাতে যখন বাবা সঁপে দিয়েছেন, তখন খানাটা তার সাথেই খেতে হবে।
অন্য কথা শুরু করার আগে ‘পি কে ডি’র নামের অর্থটা জানিয়ে দেয়া উচিৎ বলে মনে করি। কেননা লেখালেখির প্রথম জীবনে পাঠকদের মধ্যে একধরনের ঔৎসুক্য থাকত এই নাম নিয়ে। পি কে ডি, প্রদীপ কুমার দত্ত, যার সাথে গাঁটছড়া বেঁধেছি (‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ’… তবে জানিয়ে রাখি এই গাঁটছড়ায় অন্য অনেক কিছুই আছে, সুর ছাড়া। কখন আপনারা আবার গান শোনার আবদার করে বসেন!)
তাঁর অন্যতম নেশা হলো বেড়ানো। অন্য স্ত্রীরা আনন্দে বাক বাকুম করত, সেখানে আমি মুখখানা বাংলা পাঁচের মতো করে রাখি, ঐ যে বললাম না সহজে পাওয়া জিনিসের কোনো মর্যাদা থাকে না! আর বাংলা পাঁচের সাথে অপ্রসন্ন চেহারার তুলনা যে কোন পণ্ডিত করেছেন জানি না। মানুষের চেহারা কখনও বাংলা পাঁচের মতো দেখাতে পারে, বলুন?
পি কে ডি ঠিক করলেন কলকাতার বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে দেওঘর, রামপুরহাট আর আসানসোল যাবে। দেওঘরের নাম আপনারা পড়েছেন শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে, যিনি তাঁর গল্পের কোনো চরিত্রের অসুখ করলেই হাওয়া বদলের জন্য দেওঘরে পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু যখনই শুনলাম ঐ সময়ে দেওঘরে ভালোই শীত থাকবে, মেজাজ সপ্তমে পৌঁছাতে মোটেই সময় নিল না। এর মাস দুয়েক পূর্বে নৈনিতাল এবং আশেপাশের হিমালয়ের অঞ্চলসমূহে বেড়িয়ে এমন ঠাণ্ডায় ভুগেছিলাম, এরপরেও শীতের জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে! মেজাজ কেন খারাপ হবে না বলুন? কে জানে পি কে ডির মনে কী আছে? সাধারণত বলা হয়ে থাকে স্ত্রীয়াশ্চরিত্রম দেবা ন জানন্তি, কুতো মনুষ্যা। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এটাই স্বাভাবিক। নারীদের হাতে ক্ষমতা থাকলে তাঁরা বলতেন পুরুষাণাং চরিত্রম দেবী ন জানন্তি, কুতো মনুষ্য! তবে আপনারা এইটি কোথাও ব্যবহার করবেন না। ইহা অধমার মস্তিষ্কপ্রসূত! দেওঘর হাওয়া বদল ছাড়াও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য তীর্থস্থানও বটে। রামপুরহাটও তাই। আর আসানসোল? যখন জানাল চুরুলিয়ায় যাবে, অমনি মেজাজ পঞ্চমে নেমে এলো। আর দেওঘরের শীতের হাওয়া নাচতে শুরু করল আমলকির ডালে ডালে।
সত্যি বলতে কি চুরুলিয়ায় গিয়ে বিশেষ কিছু দেখতে পাবো সেটি ভাবিনি। ভেবেছিলাম আমাদের দুখু মিয়া তো সেই কবে থেকেই দুঃখের সাগরে ভাসছিলেন। তাঁর সাথে আমরাও ভাসছিলাম বুকের গভীরে চিনচিনে ব্যথা নিয়ে। একজন মানুষ এক জীবনে এতটা কষ্ট পেতে পারেন? এমন একটা প্রতিভা এভাবে ব্যর্থ হয়ে গেল শুধুমাত্র সময় তাঁকে অবজ্ঞা করায়। তা না হলে আর কী বলা যেতে পারে? যদি নজরুল যুদ্ধের দামামার ভিতরে অসুস্থ না হয়ে আরও বছর কয়েক পরে অসুস্থ হতেন তাহলে হয়তো বা তাঁকে সুস্থ করা যেত। আর একেবারে তিনি যদি এই দুরারোগ্যে আক্রান্ত না হতেন, তা হলেই বা সংসারে কার কতটা ক্ষতি হতো? এই কথাগুলো অনেকের কাছে যেমন অর্থহীন মনে হবে, তেমনি অনেক নজরুলপ্রেমীর বুকের ভিতরটা চুরচুর করে ভেঙে পড়ে!
দেওঘর রামপুরহাটে দেবী দর্শন করে মনে হয় ভালোরকমের পূণ্য সঞ্চয় করেছিলাম। কেননা আসানসোল স্টেশনে ট্রেন পৌঁছার পর এক সুবেশধারী ভদ্রলোক আমাদের নিতে এলেন ততোধিক ঝকঝকে জীপ নিয়ে। এই লিঙ্কগুলো পি কে ডির রোটারির কানেকশনে। রোটারিয়ান হওয়ার এই এক সুবিধে। পৃথিবীর যে কোনো দেশে রোটারিয়ানরা ফেলোশিপের হাত বাড়িয়ে দেয়। পূর্ব পরিচিতির প্রয়োজন নেই। অভিষেক তেমন একজন রোটারিয়ান, যাকে তাঁর সিনিয়র একজন বলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের এক রোটারিয়ান যাচ্ছেন তোমার শহরে। Help him with what he needs, ব্যস এটা তাঁর জন্য বেদবাক্য হয়ে গেল!
অভিষেক অবাঙালি। বাংলা বলতে পারেন। বয়েস বড়োজোর পয়ঁতাল্লিশ – পঞ্চাশের কাছাকাছি। বাবা মা দু’জনেই আছেন। বহু বছর ধরে তাঁরা আসানসোলে বসবাস করছেন। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল শহর থেকে মাত্র কুড়ি কিলোমিটার দূরে চুরুলিয়া সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে পারলেন না। তবে চুরুলিয়ায় যাওয়ার জন্য নিজেদের একখানা গাড়ি পাঠিয়ে দিলেন পরদিন সকালে। ও হ্যাঁ, বলা হয়নি অভিষেক আমাদের স্টেশন থেকে নিয়ে আসানসোল ক্লাবে পৌঁছে দিল। নিজের কিছু কাজ সারতে চলে গেল। যাবার সময় বলে গিয়েছিল ড্রাইভার এসে আমাদের নিয়ে যাবে ওদের বাড়িতে লাঞ্চ করার জন্য। তবে ঘন্টা দু’য়েক পরে নিজেই এসে হাজির ওর বাড়িতে নিয়ে যেতে। মা বাবা এবং অভিষেকের স্ত্রী সবাই অপরিচিত অতিথিদের সাথে বহুদিনের পরিচিতের ন্যায় আচরণ করলেন। সবাই খুব আন্তরিক ছিলেন।
লাঞ্চ সেরে পি কে ডি ইচ্ছে প্রকাশ করলেন মাইথন বাঁধ (Maithon Dam) দেখতে যেতে চায়। আমার ভালো লাগত একটু যদি বিছানায় গড়িয়ে নেয়া যেত। কিন্তু বেড়াতে বের হলে এটি পি কে ডি’র অভিধানে থাকে না। তাঁর হলো কম সময়ে কত বেশি দেখা যায় অথবা কতবেশি জানা যায়? আমি নিতান্ত মধ্যবিত্ত মানসিকতার রক্তমাংসের মানুষ। সকালবেলায় ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠতে হয়েছিল। কাজেই রাতের ঘুমের কোটা যেটুকু অপূর্ণ ছিল, সেটুকু পুরিয়ে নিতে পারলে ভালো লাগত। কিন্তু এত বছরে এইটুকু বুঝেছি সব ইচ্ছের কথা প্রকাশ করতে নেই। তাছাড়া অভিষেক ইতিমধ্যে ওদের ক্লাবের কয়েকজন রোটারিয়ানের সাথে কথা বলে সন্ধ্যেবেলায় একটা ফেলোশিপ মিটিং এর আয়োজন করেছে। রোটারিতে প্রত্যেক সপ্তাহে একটা মিটিং হয়। অভিষেকদের মিটিং হয়ে গিয়েছিল। অভিষেক চাইছিল আমিও যেন মিটিং এ যাই। তাহলে ওর স্ত্রীও যাবে। অগত্যা।
অভিষেকদের একটা গাড়ি নিয়ে রওনা দিলাম মাইথন বাঁধ দেখতে। কাপ্তাই বাঁধে যে স্থাপনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, সেটি দেখেও যখন পি কে ডির আশ মিটেনি তখন সাথে যেতেই হলো। তবে এই বাঁধটির একটি বৈশিষ্ট্য হলো এর বিদ্যুৎ উৎপাদনের কেন্দ্র হলো মাটির নিচে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এটিই প্রথম ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ তৈরির স্থাপনা। এটি ষাট হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে। ১৯৫৭ সালে উদ্বোধন হয় এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। ওখানে কিছু সময় কাটিয়ে হোটেলে ফিরে এলাম। বিছানা তখন দু’হাত বাড়িয়ে ডাকছে আয় আয় আমার কাছে আয়। সে ডাক কি উপেক্ষা করা যায় ? পাগল!
খুব বেশিক্ষণ অবশ্য বিছানার সাথে মিতালি করা গেল না। মিটিং এ যাওয়ার জন্য উঠতে হলো। ড্রাইভার আমাদের সাথেই ছিল। হঠাৎ করে ডাকা মিটিং এ রোটারিয়ানদের সংখ্যা নেহাৎ কম ছিল না। বেশি ছিল আন্তরিকতা আমাদের প্রতি তাঁদের। দুই ক্লাবের পতাকা বিনিময় হলো। পি কে ডি তাঁর নিজের ক্লাব নিয়ে এবং দেশ নিয়ে কথা বলল। ভারতে বিভিন্ন জায়গায় বেড়ানোর অভিজ্ঞতা শেয়ার করল। ভারতের বাইরের দেশগুলোকেও অচ্ছ্যুত রাখল না। অনেক কথাই হয়েছিল। সাথে খাবার দাবার তো ছিলই। একসময় মিলনমেলা ভাঙলো। ফেরার পথে অভিষেক জানাল পরদিন সকালে আসানসোলে যাওয়ার জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দেবে। এতক্ষণ আপনারা ধান ভাঙতে শীবের গীত শুনেছেন। এবারে মূল প্রসঙ্গে আসি। যে কারণে আসানসোল আসা।
লেখার শুরুতেই বুঝে নিয়েছেন বিদ্রোহী কবি, সাম্যের কবি, প্রেমের কবি, দুঃখী মানুষদের কবি, ভবিষ্যতদ্রষ্টা কবি কাজী নজরুল ইসলামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য এতদূর আসা। কলকাতা থেকে আসানসোলের দূরত্ব ২১৩ কিলোমিটার। সড়কপথে বা রেলপথে যাওয়া যায়। আর আসানসোল থেকে চুরুলিয়া মাত্র কুড়ি কিলোমিটার দূরে। আমরা বাঙালিরা শান্তিনিকেতনে দৌড়ে যেতে (বারণ করছি না যেতে) যত পছন্দ করি, ততোটা কি চুরুলিয়ায় যাওয়ার কথা ভাবি ? নজরুল জীবিত থাকা অবস্থায় ছিলেন অবহেলিত, অসুস্থ অবস্থায়, ঢাকায় আসার আগে কেমন ছিলেন জানা নেই, তবে মৃত্যুর পরে যে আমাদের স্মৃতিতে ধুলো বালি জমতে শুরু করেছে সে নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই।
অভিষেক জানিয়েছিল আসানসোল শহর থেকে অদূরে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ওখনে হয়তো বা কোনো তথ্য পেতে পারি। রওনা দিলাম সেদিকে। যেহেতু পূর্ব অনুমতি ব্যতিরেকে এসেছি উপাচার্য মহাশয়ের সাথে দেখা করতে তাই জায়গায় জায়গায় এখানে আসার কারণ ব্যাখ্যা করতে হচ্ছিল। অবশেষে উপাচার্য মহাশয়ের কক্ষে ডাক পড়ল। বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনে প্রীত হলেন মনে হলো। তাঁর মামাবাড়ি একসময় চট্টগ্রামে ছিল। তাঁকে চট্টগ্রামে আমাদের অতিথি হয়ে আসতে আমন্ত্রণ জানালাম। চুরুলিয়ায় যেতে চাই শুনে তিনি আরও উৎসাহিত বোধ করলেন। সাথে সাথে তাঁর ইউনিভার্সিটিতে যিনি নজরুল সক্রান্ত কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন তাঁকে ডেকে পাঠালেন। জানা গেল তিনি সেদিন , অন্তত তখনও এসে পৌঁছাননি। অন্য আর একজনকে খবর পাঠিয়ে আনালেন। তাঁকে আমাদের পরিচয় জানিয়ে বললেন কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে তাঁদের যে মিউজিয়াম রয়েছে তার কার্যক্রম দেখাতে। তবে নতুন একটি মিউজিয়াম নির্মাণের পথে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করার কথা ছিল চুরুলিয়ায়। তবে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন রাজ্য সরকার (সি পি এম) এটি আসানসোলে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা ভেবেছিলেন চুরুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় হলে ওখানে ছাত্র সংখ্যা খুব বেশি হবে না। তাছাড়া ছাত্রদের জন্য হোস্টেল নির্মাণসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ অনেক বেড়ে যাবে। এখনই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন /চার সহস্রাধিক ছাত্র ছাত্রী পড়ছে। বাইশটি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। চুরুলিয়ায় গিয়ে আমাদেরও মনে হয়েছিল সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। উপাচার্য মহাশয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসার আগে তাঁর সাথে ছবি তুলে নিলাম। ঐ সময়ে তাঁর সেলফোনে রিং বেজে ওঠায় অভদ্রতা হলেও ফোনের স্ক্রিনের দিকে চোখ গেল। দেখতে পেলাম ‘সোনালী কাজী ইজ কলিং’। কথা সেরে স্যার জানালেন নজরুলের নাতনি ফোন করেছিলেন। মনে মনে বললাম ও আমার দেখে নিয়েছি! যদিও সোনালীর নাম আগে কখনও শুনেছি বলে মনে পড়ে না। (ক্রমশ…)
লেখক: কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও পরিব্রাজক