কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীপাবলি উৎসব উদযাপন

  • কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন পূজা উদযাপন পরিষদ ও সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ শ্রী শ্রী শ্যামাপূজা উপলক্ষ্যে দীপাবলি উৎসবের আয়োজন করে।

রোববার (১২ নভেম্বর) বিকাল চারটার দিকে সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ কর্তৃক র‍্যালি আয়োজন করে। র‍্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্ত্বর হয়ে প্রধান ফটক ঘুরে ফিরে আসে। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

বিজ্ঞাপন

মুক্তমঞ্চে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হলে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও তা উপভোগ করেন। এসময় ধর্মীয় সঙ্গীত ও শ্যামা সঙ্গীতেরও আয়োজন করেন তারা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান একসাথে বসবাস করে। এখানে পূজা ও রোজা একসাথে পালিত হয়। যার উদাহরণ হিসেবে আজকের এই এই দীপাবলী মহাউৎসব পালিত হচ্ছে। 

বিজ্ঞাপন

তিনি আরো বলেন, দীপাবলি হচ্ছে আলোর মাধ্যমে অন্ধকার দূর করা, আর জ্ঞান হলো এই আলো যা বিশ্ববিদ্যলয়গুলো প্রদান করে।

সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের সভাপতি অজয় চন্দ্র বর্মন বলেন, বিগত বছরগুলোতে আমাদের পূজা উদযাপন পরিষদ দীপাবলী ও পূজা উদযাপন করে আসছে। এই প্রথম আমরা সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ (এসবিএস) দীপাবলী উদযাপন করছি। ভবিষ্যতে আমাদের কাজ হবে সনাতনী শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় বই ও সেমিনারের মাধ্যমে ধর্ম সম্পর্কে  অবহিত করা। তাছাড়া পূজা উদযাপন পরিষদ এবং এসবিএস উভয় সনাতনীদের নিয়ে কাজ করে। আমরা সনাতনী বিদ্যার্থী সংসদ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়ন এসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের সাধারণ সম্পাদক দীপ চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সনাতনী বিদ্যার্থী সংসদ (এসবিএস) থাকলেও এই প্রথম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কাজ শুরু করি। ২০১০ সালের দিপাবলীর এসবিএস প্রতিষ্ঠিত হয় তাই আমরা একসাথে দীপাবলী ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করি। দীপাবলীর মাহাত্ম্য হলো অশুভকে দূর করে শুভর বিকাশ করা।

পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ধ্রুব বিশ্বাস বলেন, আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজা উদযাপন পরিষদ প্রতিবছর শ্যামাপূজার দিনে দীপাবলী উদযাপন করে থাকি। এই বছরও আমরা মুক্তমঞ্চে দীপাবলীর আয়োজন করেছি। প্রশাসন আমাদেরকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। শহরের শিক্ষার্থীদের জন্য রাতে বাসের ব্যাবস্থা করেছে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সনাতনীদের নির্দিষ্ট প্রার্থনা কক্ষ বা মন্দির নেই যার কারনে আমাদের মুক্তমঞ্চে পূজা করতে হয়। তাছাড়া মন্দির না থাকার কারনে অনেক পূজার সামগ্রী হারিয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সোহাগ বলেন, দীপাবলী হলো অন্ধকার দূর করার দিন। আজ আমি খুব আনন্দিত, আমি চাই মানুষের মনের অন্ধকার দূর হয়ে শুভ শক্তির উদয় হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসব পালন করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

উল্লেখ্য হিন্দু পুরাণ মতে দেবী শ্যামা দেবী কালীরই একটি রূপ। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালীপূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির বিজয়ের মধ্যেই রয়েছে কালীপূজার মাহাত্ম্য। কালীদেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্যাশক্তি, তারা মা, চামুণ্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত।