অবন্তিকার ফেসবুক ওয়াল জুড়ে শোকের ঝড়, বিচার দাবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার (২৪) আত্মহত্যার পর তার ফেসবুক ওয়াল জুড়ে চলছে সহপাঠী ও বন্ধুদের শোকের ঝড়। সেইসঙ্গে অবন্তিকার আত্মহত্যার জন্য দায়ীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেছেন তারা। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত সাড়ে নয়টার পর কুমিল্লার নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা।

আত্মহত্যার আগে তিনি তার ফেসবুক ওয়ালে একটি সুইসাইড নোট লেখেন। তাতে তিনি মৃত্যুর জন্য তার এক সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করেন।

এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী তাকে যৌন হয়রানি করেছেন এবং তারপর তাকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এবিষয়ে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের কাছে অভিযোগ জানালে তিনি আম্মানের পক্ষ নিয়ে তার সঙ্গে বাজে আচরণ করেন। সুইসাইড নোটে ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা লেখেন-

‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করে ও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানান ভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না।

কারণ দ্বীন ইসলামের অনেক চামচা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। এই লোককে আমি চিনতাম ও না। আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি এবিউজিভ কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়। আর দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারীজাতিয় গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে এখনো আমাকে নানাভাবে মানহানি করতেসে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে। আর এই লোক কুমিল্লার হয়ে কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের তার ছেলেমেয়ের বয়সী স্টুডেন্ট দের মাঝে কী পরিমাণ প্যাঁচ ইচ্ছা করে লাগায় সেটা কুমিল্লার কারো সৎসাহস থাকলে সে স্বীকার করবে। এই লোক আমাকে আম্মানের অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে ৭ বার প্রক্টর অফিসে ডাকায় নিয়ে "খানকি তুই এই ছেলেরে থাপড়াবি বলসস কেনো? তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে তোর ছাল তুলি তোরে এখন কে বাঁচাবে? "

আফসোস এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিলো। একবার জেল খেটেও সে এখন জগন্নাথের প্রক্টর। সো ওর পলিটিকাল আর নষ্টামির হাত অনেক লম্বা না হলেও এতো কুকীর্তির পরও এভাবে বহাল তবিয়তো থাকে না এমন পোস্টে। কোথায় এই লোকের কাজ ছিল গার্ডিয়ান হওয়া আর সো কিনা শেষমেশ আমার জীবনটারেই শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি দিলো না

আমি উপাচার্য সাদোকা হালিম ম্যামের কাছে আপনি এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে বিচার চাইলাম।

আর আমি ফাঁসি দিয়ে মরতেসি। আমার উপর দিয়ে কী গেলে আমার মতো নিজেকে এতো ভালোবাসে যে মানুষ সে মানুষ এমন কাজ করতে পারে। আমি জানি এটা কোনো সলিউশন না কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিতেসে না বিশ্বাস করেন। আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চাইসিলাম! আর পোস্ট মর্টেম করে আমার পরিবারকে ঝামেলায় ফেলবেন না। এমনিতেই বাবা এক বছর হয় নাই মারা গেছেন আমার মা একা। ওনাকে বিব্রত করবেন না। এটা সুইসাইড না এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার। আর আম্মান নামক আমার ক্লাসমেট ইভটিজার টা আমাকে এটাই বলছিল যে আমার জীবনের এমন অবস্থা করবে যাতে আমি মরা ছাড়া কোনো গতি না পাই। তাও আমি ফাইট করার চেষ্টা করসি। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সহ্য ক্ষমতার!’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা

এদিকে, অবন্তিকার আত্মহত্যার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী এবং বন্ধুদের শোকবার্তায় ভরে যেতে থাকে তার ফেসবুক ওয়াল। এছাড়া দোষীদের বিচার দাবি করেও একের পর এক পোস্ট দিয়ে চলেছেন তারা।

এ বিষয়ে কয়েক বন্ধু ও সহপাঠীর শোকবার্তা তুলে ধরা হলো-

Sumaiya Sumaiya Soma
‘কিছুদিন আগে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার খাদিজাতুল কুবরার মুক্তির দাবিতে Fairuz Abontika অন্যদের মতো সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই সময় অবন্তিকার সাথে হয়ে যাওয়ার অন্যায়ের বিচারের জন্য এই বিষয়গুলো শেয়ার করেছিলো। অবন্তিকার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন একটি অকার্যকর প্রশাসন, মৃত্যুশেল। প্রশাসন কি পারবে অবন্তিকার মৃত্যুর প্ররোচনাকারী অপরাধীদের শাস্তি দিতে??’

ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা

আঁখি সরকার রাই

‘ঈশ্বর জীবন এতো ছোট কেনো? মানুষগুলো এমন অমানুষ কেনো? এত প্রাণবন্ত, স্বাধীনচেতা মেধাবী মেয়েটাকে বাঁচতে দিলো না, আমি ওনাকে দেখতাম ওনার একটিভিটি দেখতাম আর ভাবতাম আমরা কুমিল্লার মেয়েরা আসলেই ট্যালেন্টেড, উদাহরণ টানলে উনার কথা বলতাম, নিজের কথা বলতাম আরো অনেকের নামের সাথে।

অথচ সেই স্ট্রং মানুষটাকেও আত্মহত্যা করতে বাধ্য করলো কিছু মানুষ নামক জানোয়ার।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর মতো একটা জায়গায় এতোটা যন্ত্রণা ভুগতে হলো তাকে, কেউ কী ছিলো না তার পাশে দাঁড়ানোর?
তাকে সাহস জোগানোর?
ওনার মতো আমিও তো এরকম কতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ি, আমাকেও কী কখনো এই পথ বেছে নিতে হবে? এক জীবনে এতকিছু সইবো কেমনে ঈশ্বর?

অবন্তী আপু,
পোস্টটা করার পর সকলের মতামত গুলো দেখে যেতে পারতেন অন্তত, এতগুলো মানুষের ভালোবাসা উপেক্ষা করে চলে গেলেন? অবশ্য এটা আত্মহত্যা না এটা হত্যা, অবন্তী হত্যার বিচার চাই!!’

Fahmida Zaman
‘Fairuz Abontika মেয়েটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের। মাত্র জানলাম সে সুইসাইড করছে এবং ফেসবুকে তার সুইসাইডের কারণ হিসেবে সরাসরি দায়ী করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজনকে।

২০২২ এ ভার্সিটি ডে তে হঠাৎ করে মেয়েটা পিছন থেকে এসে বলে আমাকে তার খুব ভালো লাগে, সে মেসেন্জারে টেক্সটও করেছে এবং তার নাম ফাইরুজ অবন্তিকা, সে ল ডিপার্টমেন্টের।আমার সংগে সে একটা ছবি তুলতে চায়। তখনের তোলা ছবিটা when she was alive and happy. সে বারবার বললো আমার স্বাধীন ডেয়ারিং জীবন তার খুব পছন্দ। Another departed soul has been added to my memories.’

ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা

তৌফিকুল ইসলাম হৃদয়

পৃথিবীর কোনকিছু দিয়ে Fairuz Abontika হত্যার ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে হচ্ছেটা কি? আর কত তাজা প্রাণ অকালে ঝরে পড়বে? বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে রাঘববোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে?
মেধাবী, প্রতিভাবান একজন শিক্ষার্থী এভাবে হারিয়ে গেল। আর আমরা চুপচাপ বসে আছি? শিক্ষার্থীদের বোধ উদয় হবে কবে? প্রশাসনের টনক নড়বে কবে?
আর...
আমরা মানুষ হবো কবে??
অবন্তীকা জগন্নাথকে কোনদিন মাফ করে দিস না।

Alif Tasnim
The day I went to ABC radio for the first time, I got introduced with Fairuz Abontika apu. Just like me she was also there as a contestant for giving audition. As we endured a lengthy wait, our conversation delved into various topics including cricket, commentary, life, and career, anchoring, and so on. It felt like I'm conversing with someone who was deeply connected to me. I never anticipated that she would pass away under such distressing circumstances. May Allah forgive her all the sins.

আ ফি য়া
Fairuz Abontika হত্যার দায় শুধু দুজনের না৷ আমাদের পুরো জগন্নাথের।
একজন প্রক্টর এমন পিশাচ হইলো না হয়! প্রক্টরিয়াল বডির বাকিরা কেন নিরব ভূমিকায় ছিলো? এই নিরবতা তো ঐ একজনের অন্যায়কে মৌন সমর্থন দেয়া।
বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কাছেও নাকি বার বার নালিশ করেছিলো। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় চেয়ারম্যান যথেষ্ট পাওয়ারফুল হন। উনি চাইলে পারতেন মেয়েটিকে রক্ষা করতে । বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকও কি একদিনও খেয়াল করলেন না যে একজন শিক্ষার্থী এতোটা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে?

আর ভিক্টিমের বন্ধু বান্ধব যারা আছেন, আপনারা অনেকেই নাকি জানতেন বিষয়গুলো। দোষীদের একজন আপনাদেরই সহপাঠী। তবু আপনারা কিছু করতে পারলেন না?

সবাই মিলে কি কিছু করা যেতো না? আর না হোক অন্তত মানসিক সাপোর্টটা তো দিতে পারতেন।

পৃথিবীর কোনো কিছুই মানুষের সেচ্ছামৃত্যুর কারণ হতে পারে না যদি ব্যাক্তি মানসিকভাবে শক্ত থাকেন। যত রোগ বালাই বলেন আর বিপদ বলেন, সবকিছুই আপনাকে তখন কাবু করবে যখন মানসিকভাবে আপনি একা হয়ে যাবেন, ভেঙে পরবেন।

মেয়েটা লড়াই করতে করতে যখন আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো সে একদম একা! কেউ নাই পাশে! তখনই শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।

শ্রদ্ধেয় উপাচার্য Sadeka Halim ম্যামের কাছে অনুরোধ, সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে জগন্নাথের এই কলঙ্ক দূর করুন ।

retha Sarker
Fairuz Abontika আপুর মৃত্যুর পেছনের কারণের ভয়াবহতা এখান থেকে একটু হলেও আঁচ করা যায়। নইলে এমন একজন স্ট্রং এবং একটিভ মানুষ এত সহজে ভেঙ্গে পড়তে পারে না।যতবারই তার কথা মনে করছি তার হাস্যোজ্জ্বল, কর্মচঞ্চল চেহারাটাই ভেসে উঠছে।
প্রশাসনের এই অন্যায় ও নির্লিপ্ত আচরণের বিরুদ্ধে সবাই রূখে না দাঁড়ালে ক্ষমতার এসকল ম্যালপ্র‍্যাক্টিস চলতেই থাকবে এবং আরো কিছু ব্রিলিয়ান্ট মাইন্ড ঝরে পরবে। আর যারা ঝরবে না, তারা দিনে দিনে ভোঁতা হয়ে যাবে।

Noshin Tabassum Prapty
Fairuz Abontika মেয়েটা আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতো, খুবই এডমায়ার করতো।এটা আমার কথা না,এটা যারা একটু হলেও ভালো করে জানে অবন্তিকাকে,তারা জানবে আমার কথা।

অবন্তিকার সাথে আমার পরিচয় ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারে হলেও ওর সাথে আমার বন্ধুত্ব ওর বিএমএ থেকে আসার পর।ওর কিছু পোস্ট দেখে আমার মনে হয়েছিল মেয়েটা ভালো নেই, ওর কাছ থেকে জানতে চাইলে,ও আমাকে গড়গড় করে সব বলে দেয়। তখন থেকে আমার কাছে ওর শেয়ার করা শুরু এবং হেন কিছু নেই সে আমাকে শেয়ার করেনি।

আমি শুধু অবন্তিকার কথাই বলবো,যে কথাটা অবন্তিকা বুক ফেটে সবাইকে বলতে চাইতো এবং এটাও প্রমাণ করতে চাইতো,

"তোমরা যারা অবন্তিকাকে এতটা খারাপ ভাবে মানুষ এর কাছে রিউমার ছড়াচ্ছো,সে এতটা খারাপ না। সে খুব ই সাধাসিধে একটা মেয়ে,যাকে কেন্দ্র করে তোমরা জটিল গল্প বানাচ্ছো,সে গল্প গুলো বিশ্বাস ও করে ফেলেছো একটা বার তার সাথে কথা না বলে"

সে আমার কাছে আর্তনাদ করে বলতো,"প্রাপ্তি! আমি এত খারাপ মেয়ে না!আমি এটা কাকে বিশ্বাস করাবো? ওরা এই আটজন এমনভাবে আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলেছে, প্রত্যেকটা মানুষ এর কাছে গিয়ে গিয়ে আমি কয়জনকে প্রমাণ করবো?কেউ আমার কথা শুনবে?"

আমি এই অবন্তিকার কথাই বলবো। আমাকে শুধু সময় দিন।আপনারা এর মাঝে চিন্তা করতে থাকেন, মেয়েটাকে নিয়ে কি পরিমাণ বাজে কথা ছড়ানো হয়েছিল,কোন মুখ গুলো ছড়াচ্ছিল সেটা মনে করতে করতে।

আমি ওর সব কথা হয়তো মনে করে বলতেও পারবো না।আপনারা যারা রিউমার শুনেছেন,সেটা আমাকে মনে করায় দিতে সাহায্য করবেন।

আমি ওর কথাই বলবো ও যা বলতে চেয়েছিল সবাইকে।
আমি মানসিক অবস্থায় নেই সব বলার এখন।
কিন্তু আমি বলবো।
একটু সময় দিন আমাকে।
এর মাঝে আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করবেন না, নক দিবেন না কিছু জিজ্ঞেস করে।
প্লিজজ

Shanta Islam
Fairuz Abontika
মৃত্যু ভীষণ কাছে কেন?
বহুদূর পার হয় নি কেন?
কিছু নরপিশাচের জন্য নিজেকে এমন ভাবে শেষ না ও তো করতে পারতেন।
জীবনে একটা আফসোস থেকেই যাবে আপনার মতো মানুষের সাথে কোনো দিন সামনে থেকে কথা হয়নি আমার।
ওপারে অনেক ভালো থাকবেন অবনী আপু।

Dipu Roy
‘জেনেছি সামনে “হঠাৎ মৃত্যু”
দুইদিন আগেও আপনি বললেন আপু
"আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়"

Abontika জোনাক পাখি হঠাৎ করেই আলো নিভিয়ে চলে গেলো...
কিভাবে পারলেন এটি করতে??
ঈশ্বর আপনাকে ছায়াতলে রাখুক।
ভালো থাকবেন...’

Nazmul Sakin Shanto
সুশান্ত সিং রাজপুত হোক অথবা ফাইরুজ অবন্তিকা আপা, আত্মহত্যার আগে কেউ এদের আশেপাশেও ছিলো না। অথচ ২ জনই যখন মারা গেলো, ফেসবুক জুড়ে Comments And Status* লোকজনের মারাত্মকভাবে Sympathy দেখাইচ্ছে যেই Level এ তাতে ত মনেই হচ্ছে আসামীরা ঘরের বাইরে বের হলে মেরেই ফেলবেন আপনারা!

পারবেন না, কিচ্ছুই হবে না। কয়েকদিন মানববন্ধনের ভণিতা করবেন, আর ১ বছর পর মৃত্যুবাষির্কীর দিন আসলে সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনাদের হারিকেন জ্বালিয়ে খোঁজ করবে এই ব্যাপারে: আপনারা একটু ক্ষোভ জাতীয় কথা বলবেন, আর তাঁরা তাঁদের News Channel'র TRP বাড়াবে!

যদি একজন সত্যিকারের ফাইরুজ আপা পক্ষের মানুষ হন, তাহলে তাঁর মারা যাওয়ার আগে দায়ী ব্যক্তি আম্মান সিদ্দীকী এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে নিজ দায়িত্বে মামলা দিয়ে দিন। ১০০ জন ১০০ মামলা!

তারপর দেখবো, লম্পট গুলো কই যাবে? যদিও আমি এই আত্মহত্যাকে কোনোদিন সমর্থন দিই না, ফাইরুজ আপা আসলেই জীবন যুদ্ধে হেরে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে ফেলছে। আমরা এই ভূল করবো না, ইনশাআল্লাহ। 😒✊🏽

বিশেষ দ্রষ্টব্য: যেহেতু ফাইরুজ আপা মুসলিম ছিলেন, তাই তাঁর ছবি ব্যবহার করে Sympathy আদায় করাকে আমি মুনাফেকি কাজ মনে করি, পারলে শব্দযুদ্ধ করে লড়াই চালিয়ে যান।

   

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীদের অবস্থান



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

  • Font increase
  • Font Decrease

অনির্দিষ্টকালের জন্য হল বন্ধের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান হলে অবস্থান করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এদিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে হলের প্রাধ্যক্ষরা জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে থাকতে কোন বাধা নেই।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জরুরি এক সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের আজ বিকেল ৪টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

হলে থাকার প্রসঙ্গে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জয় রায় বলেন, আমরা হল ছাড়ছি না। প্রাধ্যক্ষ স্যারও থাকার পক্ষে। তাছাড়া হলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এখানে টিউশনি করিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। এক্ষেত্রে আমাদের দাবি, পরিবহন ব্যবস্থা যেন অবিলম্বে চালু করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফরহাদ কাউসার জানান, প্রশাসন থেকে হল ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, গতকাল হল বন্ধের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যদি হলে থাকতে চায়, মনে হয় না কোন সমস্যা হবে। আমি শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের সাথে কথা বলে এই বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিব।

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ জিয়া উদ্দিন বলেন, হল কেন্দ্রিক কোন ঝামেলা না হলে প্রশাসন হলের শিক্ষার্থীদের বের করে দিবে না। তাই শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে অবস্থান করতে পারবে।

;

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান কুবি শিক্ষার্থীদের



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা হল চালু রাখার ও ক্লাসে ফেরার দাবি জানান। এছাড়া এই মানববন্ধনের একাত্মতা পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ নাসির হোসাইন ও শেখ হাসিনা হলের হাউজ টিউটর আল-আমিন হোসেন।

বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর সংলগ্ন রাস্তায় এ মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম পড়াশোনা করার জন্য, তবে বিগত কয়েক মাস যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। কখনো শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করছে, তো এখন আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনিদির্ষ্ট কালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে, হল বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছে। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রশ্ন শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে আমরা শিক্ষার্থীরা কিভাবে দোষী? আমরা কেন ভুক্তভোগী? এখানে অনেক শিক্ষার্থী অর্থাভাবে হলে থাকে টিউশন করিয়ে নিজের আর পরিবারের ভরণপোষণ সামলায়, তারা কোথায় যাবে?

আমরা যে পড়াশোনায় পিছিয়ে যাচ্ছি এর দায়ভার কে নিবে। আমি একটাই দাবি করতে চাই, আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা হোক, হলগুলো বন্ধ না করা হোক।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম আবর্তনের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা সুলতানা বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সার্কাস চলছে। প্রথমে প্রশাসন সিদ্ধান্ত দিল ২রা মে পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, অনলাইনে ক্লাস চলবে। প্রশাসনের সিদ্ধান্তঃকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শিক্ষক সমিতি আবার এই মগজ গলা গরমে সিদ্ধান্ত দিল ২৮ এপ্রিল থেকে স্বশরীরে ক্লাসে ফিরবে, এর আগে তারা আবার ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন করেছিলো। এখন আবার প্রশাসন আমাদেরকে হল থেকে বের করে দিচ্ছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে। এমনিতে বেশ কিছু বিভাগ করোনার কারণে পিছিয়ে আছে তার ওপর তাদের এ ধরণের সিদ্ধান্ত কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষক সমিতি আর উপাচার্যের দ্বন্দ্বে আমরা বলির পাঠা হয়ে আছি। এ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান আশা করছি।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আনাস আহমেদ বলেন, 'আজকে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখানে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি নিজেদের কিছু ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য। আমাদের ক্লাস, পরীক্ষা চালু করতে হবে, হলগুলো খোলা রাখতে হবে। শিক্ষকদের ওপর বহিরাগতদের হামলার তদন্ত করে সঠিক বিচার করতে হবে দোষীদের। চলমান পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান করতে হবে, অন্যথায় আমরা আমাদের কর্যক্রম চালিয়ে যাব।'

শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে নাসির হোসাইন বলেন, ‘বর্তমানে চলমান সংকট সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে। শিক্ষার্থীদের সংকটের মুখেই এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমার মনে হয় না, এমন কিছু ঘটেছে। আর কাজী নজরুল হলে কোনরকম অবৈধ অস্ত্র বা টাকা ঢুকেনি। আমার হল খোলা থাকবে। আমার হলের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।'

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক আল-আমিন বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমার হলে কোনপ্রকার অবৈধ অস্ত্র নেই। আমার হল স্বাভাবিক আছে। আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি, তারা তাদের মতো করে হলে থাকতে পারবে। শিক্ষার্থীদের কেউ জোরপূর্বক হল থেকে বের করতে পারবে না।'

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, 'প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত একটি স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন হল প্রভোস্টদের সাথে কথা বলেছি তারা বলেছে হল খুব সুন্দরভাবেই চলছে। আর একাডেমিক কার্যক্রম চলুক সেটাও আমি চাই। আমি মনে করি এই উপাচার্য একজন অদক্ষ প্রশাসক। তার পদত্যাগই সবকিছুর সমাধান।'

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষেই আছি। যখন কোন একটা ছুটি হয় তখন কিন্তু প্রতিবার একই নোটিশ যায় যে হল ছাড়তে হবে। অনেক সময় হল সিলগালা করে দেয়া হয় সেক্ষেত্রে সবাইকে সেটা মানতে হবে। যেহেতু এই নোটিশে সিলগালার কথা বলা নাই সেক্ষেত্রে কেউ যদি বিকাল চারটার মধ্যে হল ত্যাগ না করে তাহলে নিশ্চই হল প্রসাশন শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিবে।'

;

'ফিলিস্তিনের ২০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদানসহ ঢাবিতে ভর্তি করা হবে'



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও আবাসিক সুবিধাসহ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। 

বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অধিদপ্তর হতে জানা যায়, মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত মি. ইউসুফ এস, ওয়াই, রামাদান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় ঢাবি উপাচার্য এসব কথা বলেন।

ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ভর্তি, বৃত্তি এবং আবাসিক সুবিধা প্রদানের বিষয় নিয়ে তারা দীর্ঘ আলোচনা করেন। এসময় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নে আগ্রহী ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও বৃত্তি প্রদানের জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ১৯৭১ সালে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে জোড়ালো অবস্থান নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও আবাসিক সুবিধাসহ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। ঢাবিতে অধ্যয়নকালে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে বলে তিনি রাষ্ট্রদূতকে জানান।

উপাচার্য ফিলিস্তিন বিশেষ করে গাজা'র অধিবাসীদের উপর ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বর্বর ও নির্মম হামলা, গণহত্যা ও অমানবিক অত্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সকল জনগণ ফিলিস্তিনি বন্ধুদের প্রতি সবসময় সহানুভূতিশীল বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এবং ঢাবিতে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ভর্তির বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, এ সময় আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসাদ মুর্তুজা এবং জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

;

ইবির দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা না মেনে কন্ট্রোলরুমে প্রবেশ



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গুচ্ছভুক্ত স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ও আনসার সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে সমন্বয়কারীর অফিস ও ভর্তির কার্যাদি সম্পাদনের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট ভবনে প্রবেশ করেছেন দুই শিক্ষক। উক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা।

অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হচ্ছেন আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ও ইবি শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন এবং ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী। ঘটনার পরদিনই প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ঝিনাইদহ আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার ফজলুল হক এবং কুষ্টিয়া আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার আলতাফ হোসেন।

অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষার আগের রাতে আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন এ ইউনিটের সমন্বয়কারী অফিস ও ভর্তির সকল কার্যাদি সম্পাদনের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে এবং আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী বি ইউনিটের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট তালাবদ্ধ অনুষদ ভবনে প্রবেশ করেন। তবে উক্ত ভবন দুটিতে দুই ইউনিটের কন্ট্রোল রুম থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাত ৮টার পরে উক্ত ইউনিটে কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক/কর্মকর্তা ব্যতিরেকে অন্য কাউকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে আনসারদের বাধা উপেক্ষা করে জোর করেই উক্ত দুই শিক্ষক ওই দুটি ভবনে প্রবেশ করেন। এমতাবস্থায় জরুরী নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করা তাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও ঝুকিপূর্ণ বলে লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন আনসার সদস্যরা।

পরীক্ষার আগের রাতে ভবনে ঢোকার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানতেন না উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, অফিস কক্ষে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গিয়েছিলাম। সেসময় আনসারদের কাছে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রথমে শুনতে পাই। পরে কাগজপত্রগুলো নিয়ে চলে আসি। বিষয়টি প্রক্টরকে ফোন করে অবহিত করেছিলাম।

ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী বলেন, বিভাগে কিছু কাজ ছিল সেজন্য রাত ৮টার দিকে অফিসে গিয়েছিলাম। তাছাড়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের লিখিতভাবে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। প্রবেশের সময় দায়িত্বরত আনসার সদস্যরাও কিছুই বলেনি। পরে আমার রুমে একজন আনসার এসে বলে যে, প্রক্টর স্যার অনুষদ ভবনে কাউকে ঢুকতে নিষেধ করেছেন। এসময় প্রক্টরকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনি যেহেতু বিভাগের কাজ করছেন। আপনি থাকেন, কোনো সমস্যা নেই।’

কর্মকর্তা সেলিম বলেন, স্যার প্রবেশ করার সময় আনসার সদস্যরা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টা শেয়ার করেন। পরে নিষেধাজ্ঞা না মেনে প্রবেশ করলে আমারে জানান আনসাররা। তাৎক্ষণিক প্রক্টর স্যারকে কল দিয়ে বিষয়টা অবহিত করি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে স্যারদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকতেও পারে কিন্তু স্যার প্রবেশের পর আরও দুজন কেন প্রবেশ করলো বোধগম্য হয় না। জবাবদিহি আমাদের করা লাগবে বলে নিরাপত্তার স্বার্থে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টা খুব সেনসিটিভ। বাকিটা প্রশাসন দেখবেন।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ঘটনাটি ২৬ তারিখে অর্থাৎ ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতের। আমার কাছে গত ২৭ তারিখে নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম তার বরাবর দেয়া আনসার পিসিদের ২টি লিখিত আবেদনের উপর নোট উপস্থাপন করেন। পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত থাকায় আমি সেই নোটটি ২৯ তারিখে ফরওয়ার্ড করেছি।

ঐ দুই শিক্ষক তাকে সেসময় বিষয়টি অবহিত করেছেন, এবিষয়ে প্রক্টর বলেন, বিষয়টি সত্য নয়। তারা একেক সময়ে একেক কথা বলছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। আনসার সদস্যরা অভিযোগ দিয়েছেন। তবে আমার কাছে এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগটি আসেনি। আগে অভিযোগ পত্রে কি আছে সে বিষয়টি বুঝতে হবে। তাহলে এ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এক্ষেত্রে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। যেহেতু পরীক্ষার আগের রাত গুরুত্বপূর্ণ সময়। সেক্ষেত্রে সবার উচিত সংযত ও যুক্তিসংগত আচরণ করা।

;