ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সমবেত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে চলমান আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সমবেত হতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে মিছিল নিয়ে সংগঠিত হন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, গত ৪ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম সংগঠক নাহিদ ইসলাম ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামী শুক্রবার অনলাইনে-অফলাইনে জনসংযোগ হবে।শনিবার বিকেল ৩টায় দেশের বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ থেকে মিছিল করা হবে। আগামী রোববার সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট পালিত হবে। আজকের বিক্ষোভ মিছিলের পর রোববারের মাঠের কর্মসূচি ঘোষিত হবে।
জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহার আগে ৫ জুন সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। ওই দিন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামেন। এ অবস্থায় আদালতের ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়।
সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, তাদের দাবি মূলত তিনটি ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সব গ্রেডে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা রেখে কোটা পুনর্বণ্টন বা সংস্কার; চাকরির পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। সে সময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলনে ছাত্রলীগসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার অভিযোগ করেন।
ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন।