গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ চবি শিক্ষার্থীদের
সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা নিরসনের দাবিতে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাছের গুডি ফেলে সড়ক অবরোধ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ জুলাই) বন্দর নগরীর টাইগারপাস এলাকায় গাছের গুড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে আন্দোলন শুরু হয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলবে বলে জানায় তারা।
ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধের ফলে রাস্তার পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। আগ্রাবাদ-বহদ্দারহাট ও নিউমার্কেটগামী সকল যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনরত চবি শিক্ষার্থী রহমত আলী জানান, আমরা শিক্ষার্থীরা পেটের দায়ে আন্দোলনে নেমেছি। এর আগে চার দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও এখন এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি। আমরা কোটা প্রথার যৌক্তিক সংস্কার চাই। সমাজে ন্যূনতম সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা, একাত্তরের পথ ধরো, বাংলা ব্লকেড সফল করো’, ব্লকেড ব্লকেড, বাংলা ব্লকেড’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার”, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
তবে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল চেয়ে চার দফা দাবি থেকে সরে এসে এক দফা দাবি নিয়ে এখন আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এক দফা দাবি হলো- সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরু থেকেই কোটা ব্যবস্থা বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে কোন আশ্বাস না পেয়ে ক্যাম্পাসের গন্ডি পেরিয়ে রাজপথে গড়ায় এই আন্দোলন। শুরুর দিকে ক্ষুদ্র পরিসরে সড়ক অবরোধে সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার বৃহৎ পরিসরে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, গত রোববার (৭ জুলাই) চার দফা দাবি থেকে সরে এসে এক দফা দাবি ঘোষণা করে কোটা বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। পরদিন সোমবার (৮ জুলাই) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে আরও গতিশীল করে 'সফল করার জন্য সারা দেশের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২৩ জনকে সমন্বয়ক এবং ৪২ জনকে সহ-সমন্বয়ক হিসেবে পদায়ন করে সংগঠনটি। এতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে চবি শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদকে সমন্বয়ক ও খান তালাত মাহমুদকে সহ-সমন্বয়ক করা হয়।