১৮তম নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছেন আবু সাঈদ
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
জানা যায়, গত ১১ জুলাই আবু সাঈদ নিহত হওয়ার আগে ক্যাম্পাস থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিল নিয়ে বের হতে চাইলে ছাত্রলীগ বাধা দেয়। এক পর্যায়ের চর থাপ্পড় দেন আবু সাঈদকে। ওইদিন আবু সাঈদকে গলা টিপে ধরার ঘটনাও ঘটে। এই ট্রমা নিয়েই পরের দিন (১২ জুলাই) পরীক্ষা দেন আবু সাঈদ।
আবু সাঈদের সাথে আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী বাংলা বিভাগের শামসুর রহমান সুমন বলেন, ১১ তারিখ ক্যাম্পাসে মিছিল করার পর ১২ তারিখ ছিলো আবু সাঈদ ভাইয়ের নিবন্ধন লিখিত পরিক্ষা। আমরা ওই দিন সকালে মিটিং করবো তো আবু সাঈদ ভাই বলতেছিলেন আমার জীবনের এইটা প্রথম পরীক্ষা। পরীক্ষা দিবো কিনা? কিছুই পড়িনি আন্দোলনের কারণে। বললাম ভাই পরীক্ষা দিয়ে আসেন আমরা বিকেলে মিটিং করবো। আগের দিনে ১১ তারিখ ছাত্রলীগের চর থাপ্পড় মার খাওয়ার স্ট্রেস নিয়ে ১২ তারিখ পরিক্ষা দিতে যায় সাঈদ ভাই। আজ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু আবু সাঈদ ভাই নাই। আমরা শুধু বীর সাঈদ ভাইকেই হারাইনি, হারিয়েছি মেধাবী শিক্ষার্থীকে।
ইংরেজি বিভাগের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আবু সাঈদ পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল। ওর (আবু সাঈদ) টার্গেট ছিল জীবনে ভালো কিছু করার কিন্তু অধিকার আদায় করতে গিয়ে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছে। আজ বেঁচে থাকলে হয়তো বা ভালো কিছু করত।
এনটিআরসিএ সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর ব্যবস্থাপনায় অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ২০২৩-এর স্কুল (নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/দাখিল ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) ও স্কুল-২ (মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট, উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট এবং কারিগরি ডিপ্লোমা ইন্সটিটিউট) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১২ জুলাই ২০২৪ এবং কলেজ (কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিকোত্তর/উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি/ভোকেশনাল/ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ইন্সটিটিউট এবং আলিম ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮০ জন। এর মধ্যে স্কুল ও সমপর্যায়ের ৫৫ হাজার ৮৯০ জন, স্কুল-২ পর্যায়ের ৫ হাজার ৩২৩ জন এবং কলেজ ও সমপর্যায়ের ২২ হাজার ৬৫২ জনসহ সর্বমোট ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়।