‘দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবো না, চিকিৎসকের কথা মিথ্যা প্রমাণিত হবে’

  • চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শিক্ষার্থী মো. শুভ হোসেন

শিক্ষার্থী মো. শুভ হোসেন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ডান চোখ নষ্ট হওয়ার পথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শুভ হোসেনের। চিকিৎসক জানিয়েছেন, আর কখনোই দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে না। কিন্তু আশা হারাননি শুভ, এখনো প্রত্যাশা চিকিৎসকের কথা মিথ্যা প্রমাণিত হবে।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে নিজের অবস্থা উল্লেখ করে শুভ জানান, গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে আমি চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম। সন্ত্রাসীদের ছোড়া বুলেট আমার ডান চোখের তিন লেয়ার ক্রস করে রেটিনা ও কর্নিয়া সম্পূর্ণভাবে ড্যামেজড করে দেয়। যা দুইবার সার্জারি করেও বুলেট বের করা এবং দৃষ্টি শক্তি ফিরানো কোনটিই সম্ভব হয়নি!

বিজ্ঞাপন

পরে ডাক্তারের পরামর্শে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার সীমিতকরণ হয়, ফলে সবার সাথে যোগাযোগ বিচ্যুতি ঘটলেও সবার দোয়া ও ভালোবাসা পেয়েছিলাম অবিরত! আমি বিশ্বাস করি, একটানা ২৬ দিনের নিদ্রাহীনতা, অনির্ণেয় ব্যথা এবং মানসিক পীড়নে ধুঁকে ধুঁকে যখন নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম; তখন আপনাদেরই দোয়ায় মরতে মরতে বেঁচে ফিরি! তাই, আন্দোলনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধু-বান্ধব, ছোটভাই-বড়ভাই, শিক্ষক, পরিবার, প্রতিবেশীসহ যারা পরামর্শ, সেবা-দোয়া, সর্বোপরি ভালোবাসায় সিক্ত করেছেন সকলের প্রতি অবনতচিত্তে কৃতজ্ঞতা!

তিনি আরও লিখেছেন, আমি আশা করি, সবার দোয়ায় ও ভালোবাসায় ডাক্তারদের বলা ‘তুমি কখনোই দৃষ্টি ফিরে পাবে না’ স্ট্রেটমেন্টটি মিথ্যা হবে। এবং হাজার হাজার আহতদের অঙ্গদান ও বীর শহিদদের আত্মাদানের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ দুচোখ দিয়ে স্বর্গীয় সুষমায় উপভোগ করব!

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই বিকেল চারটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর এলাকায় অস্ত্রধারীদের ছোড়া ছররা গুলি চোখে লাগলে লুটিয়ে পড়েন শুভ। পরে সহযোদ্ধাদের সাহায্যে স্থানীয় মেডিকেলে চিকিৎসা নেন। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন শুভ। দুইবার সার্জারি করিয়েও বের করা যায়নি বুলেট। ফলে দৃষ্টিশক্তি ফেরানোও সম্ভব হয়নি।