ইবির সিলেবাসে যুক্ত হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস
২০২৫ শিক্ষাবর্ষের দাখিল ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর 'বাংলা ব্যাকরণ ও নিমিতি' বইয়ের কভার পৃষ্ঠায় 'আদিবাসী' শব্দ অন্তর্ভুক্ত করায় জড়িতদের অপসারণ ও শাস্তির দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি'।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলন করেন সংগঠনটি ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী' শব্দ প্রত্যাহার করার ঘোষণা না আসলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ারী দিয়েছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
সেই সময় 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি' সরকারের নিকট নিম্নোক্ত ৫ দফা দাবী পেশ করছে-
১. শিক্ষা মন্ত্রণালয়/সরকার থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাঠ্যপুস্তক থেকে 'আদিবাসী' শব্দ প্রত্যাহার করার ঘোষণা আসতে হবে: নইলে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে শিক্ষার্থীরা,
২. পাঠ্যপুস্তকে 'আদিবাসী' শব্দ প্রবেশ করানোর সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের অপসারণ ও শান্তির আওতায় আনতে। হবে,
৩. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরকে 'আদিবাসী' বলা ও প্রচারণাকে রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারী করতে হবে,
৪. শিক্ষার মানোন্নয়নের নামে দেশের শিক্ষাখাতে বৈদেশিক বা আন্তর্জাতিক সংস্থা বা এনজিও থেকে তহবিল নেয়া বন্ধ করতে হবে এবং বৈদেশিক তহবিলে আমাদের শিক্ষার্থীদের মগজ বিক্রী করা যাবে না,
৫. দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে 'শিক্ষানীতি, শিক্ষাক্রম, পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও পরিমার্জনে বিদেশী সংস্থা বা তাদের দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের থেকে শতভাগ প্রভাবমুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি'র পরামর্শ ও প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক জিয়া বলেন, বাংলাদেশে একমাত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং তাদের দেশী-বিদেশী পৃষ্ঠপোষক ও দোসররাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদেরকে 'আদিবাসী' বলে প্রচারণা চালায় ও স্বীকৃতি চায়।
তিনি আরো বলেন, তাদের এই প্রচারণা ও স্বীকৃতি চাওয়ার পেছনে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন একটি তথাকথিত স্বাধীন রাষ্ট্র 'জুম্মল্যান্ড' তৈরী করতে চায়।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সেই পৃষ্ঠপোষক ও দোসররাই 'আদিবাসী' শব্দটি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সরকারকে একটি তদন্ত কমিটি করে অতিদ্রুত এদেরকে চিহ্নিত করে অপসারণ করতে হবে এবং শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থী ও 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি'র মুখপাত্র মুহম্মদ রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মুহম্মদ ইয়াকুব মজুমদার, রাফসান, সায়েদুল, বায়েজিদসহ আরো অনেক শিক্ষার্থী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের ওপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা, তদন্ত কমিটি গঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে থেকে বাস ও লেগুনা স্ট্যান্ড সরানোর জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত জবি প্রক্টরের ওপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
এ সময় শিক্ষকরা বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার ভিতরে এই আক্রমণের সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত কমিটির গঠন করতে হবে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রায় সাহেব বাজার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে থাকা সকল বাস স্ট্যান্ড এবং লেগুনায় স্ট্যান্ড অপসারণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আক্রমণ। আমরা প্রক্টর স্যারের ওপর আক্রমণের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। আক্রমণের সময় আক্রমণকারীরা বলেছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাইনি শিক্ষকদের পেয়েছি, মার তাদের। এটা পরিকল্পিত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য হুমকি স্বরূপ।
এসময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রইছ উদদীন বলেন, জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্টে স্বৈরাচারীর প্রধান কর্তা ছিলেন, তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আমি মনে করি অধ্যাপক ড. তাজাম্মুলের হকের উপর হামলা ঐ ধরনের প্রেতাত্মাদের কাজ। আমরা জানি না এই ঘটনায় জগন্নাথের কোনো ঐ ধরনের প্রেতাত্মা জড়িত কিনা। উপাচার্যকে আহ্বান জানাই তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক -শিক্ষার্থী জড়িত কিনা তাদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের ক্যাম্পাসে অনেকে বাস-ট্যাম্পু স্ট্যান্ড সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। প্রশাসন আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রায় সাহেব বাজার থেকে ক্যাম্পাস পর্যন্ত বাস স্ট্যান্ড ও লেগুনা স্ট্যান্ড অপসারণ করতে হবে। যদি না করা হয় আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা ভালো করেই জানি এটা কীভাবে করতে হয়।
এসময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ম্যানেজম্যান্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. মোশারফ হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনা কাম্য ছিল না। আমরা যে সকল দাবি জানিয়েছি তা পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের নিরাপত্তায় শিক্ষক সমিতি সর্বদা সোচ্চার থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হকের গাড়িতে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। সময় প্রক্টর ও তার গাড়ির ড্রাইভার আহত হন। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে তৎক্ষণাৎ তিনজনকে আটক করা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর সংলগ্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি সংগ্রহশালা স্থাপনে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার (৮ জানুয়ারী) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
উপাচার্য ড. নকীব নসরুল্লাহ গঠিত কমিটিতে আহবায়ক হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী এবং সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল। অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন ইইই বিভাগের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান এবং এস্টেট প্রধান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন।
এবিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, উপাচার্য মহোদয় কমিটি গঠন করেছেন তবে আমরা এখনো এই বিষয়ে একত্রে বসিনি। কমিটির বাকী সদস্যরা মিলে বসে আমরা করণীয় সম্পর্কে ঠিক করবো। একটি স্মৃতি কমপ্লেক্স স্থাপন করাটা সবার ই দীর্ঘদিনের দাবী, আমি নিজেও দীর্ঘদিন যাবত এই মতবাদে বিশ্বাসী। আশা করছি একটি অসাধারণ স্মৃতি সংগ্রহশালা সবার জন্য দৃশ্যমান করতে পারবো।
এর আগে, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক সংগঠন জিয়া পরিষদ ও শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে শহীদ জিয়াউর রহমান স্থাপিত ভিত্তিপ্রস্তর সংলগ্ন স্থানে শহীদ জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের দাবী জানানো হয়েছিল।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রসায়ন বিভাগের ২০০৯-০১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জহির উদ্দিন বাবরকে আহ্বায়ক ও দর্শন বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম আহমেদ অনিককে সদস্যসচিব করে শাখা ছাত্রদলের ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। আহ্বায়ক কমিটিকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি ঘোষণা করেছে৷ ১৭৭ সদস্যের কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে ৫৭ জন ও সদস্য হিসেবে ১১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করা হলো।
নবনিযুক্ত আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভেঙে আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক জনাব তারেক রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ আমাদের একটি সাংগঠনিক কাঠামো উপহার দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক জনাব তারেক রহমান, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল ভাই এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। এটি মূলত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে ঢেলে সাজানোর জন্য স্বল্পকালীন কমিটি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা সবগুলো হল কমিটি, ফ্যাকাল্টি এবং বিভাগ কমিটি গঠন করে সন্মেলনের মাধ্যমে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবো ইনশাআল্লাহ৷
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সোহেল-সৈকতের নেতৃত্বে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট জাবি ছাত্রদলের কমিটি গঠিত হয়। এরপর থেকে জাবিতে আর কোনো কমিটি গঠিত হয়নি। পরে ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর ৫টি কলেজ ও ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। একইসাথে জাবি শাখা ছাত্রদলেরও কমিটিও বিলুপ্ত হয়৷