ঢাবিতে সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশের সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া রাজু ভাস্কর্যে তারা প্রতীকী সীমান্ত বানিয়ে বিএসএফের হত্যাকাণ্ডের দিকটি তুলে ধরেছে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান সড়কগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থায় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন ২০১১ সালের বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানীর পিতা নূর ইসলাম।
সমাবেশে ফেলানীর বাবা বলেন, "পাখির মতো গুলি করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিল আমার মেয়ে ফেলানীকে। আমার সামনে পানি পানি বলে চিৎকার করেছিল। বিএসএফ কিছু করতে দেয় নাই। কাঁটাতারে পাঁচ ঘন্টা ঝুলিয়ে রেখে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আমার মেয়েকে। আমি কতবার বিচারের জন্য গিয়েছি। আমাকে শুধু আশ্বাস দিয়ে রেখেছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আমাদের এত চাপে রেখেছে কোনদিন এবিষয়ে কথাও বলতে দেয় নাই।"
এই সরকারের কাছে বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, "সুষ্ঠু তদন্ত করে যেভাবে আমার মেয়েকে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে হত্যাকারীকেও যেন সেভাবে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে বিচার করা হয়। আর যেন সীমান্তে হত্যাকাণ্ড না হয়। আর যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয়। ভারতের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা হবে। সবাই ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।"
ফেলানী হত্যার বিচার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিন সরকার বলেন, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ফেলানী যখন সীমান্ত পাড় হচ্ছিল তখন তার জামার একটি অংশ কাঁটাতারের লাগায় সে ভয় আর্তনাত করে । এই সময় বিএসএফ তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
তিনি আরো বলেন, পিলখানার হত্যাকাণ্ডেও ভারতের হাত রয়েছে। ভারত আমাদের দিয়েছে লাশ আর মাদক। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে চামড়া , পাট , কাঁচামাল লুট করেছে। এই কাজের জন্য তারা হাসিনাকে পুতুল সরকার হিসেবে ব্যবহার করেছে।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, বিএসএফ নির্মমভাবে ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটা তারে ঝুলিয়ে রেখেছে। এখানে শুধু ফেলানীকে ঝুলানো হয় নি। পুরো বাংলাদেশকে ঝুলানো হয়েছে। আমরা আর হত্যাকাণ্ড চাই না।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বাবার সাথে কাটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী ।
ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পার হয়ে গেলেও বিচার পায়নি তার পরিবার।