আলোচনায় ‘না’ নয়
মাসের অধিক সময় ধরে চলছে কোটা আন্দোলন। শুরুর কোটা সংস্কার আন্দোলন এখন সরকার পতনের আন্দোলনে ধাবিত। শিক্ষার্থীদের দাবির এই জাগরণ শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমিত নেই। আন্দোলনে এরই মধ্যে যোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের বাইরের মানুষেরা। আন্দোলন যতদিন ছিল কেবল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের মধ্যে, ততদিন এটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এটা এখন নেই। এটা এখন এক দফার আন্দোলন; এই এক দফা হচ্ছে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের পদত্যাগের।’
আন্দোলনের পাঁচ সপ্তাহে দুই শতাধিক লোকের প্রাণহানি হয়েছে। প্রাণের এই অপচয়ের ঘটনা ঘটেছে বেশি এক সপ্তাহে; ১৬ জুলাই থেকে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের হিসাবে নিহতের সংখ্যা ২১৫, সরকারি হিসাবে এটা ১৫০, এবং শিক্ষার্থীদের হিসাবে আড়াই শতাধিক। নিহতের মধ্যে আছেন যেমন শিক্ষার্থী, তেমনি আছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। বিপুল এই প্রাণের অপচয়ের পর আন্দোলনকারীদের দাবিদাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে, অবস্থান বদলেছে, সরকারের অবস্থানও বদলেছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কোটা নিয়ে গ্রহণযোগ্য এক রায় দিয়েছেন, যেখানে রয়েছে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগের নির্দেশনা। এরপর সরকার এনিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত।
আদালত থেকে কোটা আন্দোলনকারীদের পক্ষে রায় এবং সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপন জারির পর এখন চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশের কোটা সংরক্ষিত। বাকি ৭ শতাংশের ৫ শতাংশ থাকছে মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা পরিবারের সন্তানদের, এক শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং বাকি এক শতাংশ প্রতিবন্ধীদের জন্যে। কোটার এই দাবি পূরণের পর শিক্ষার্থীরা এখন নয় দফার দাবির আন্দোলনে নেমেছে। এবং শেষে এই ‘এক দফা’ এসে ঠেকেছে সরকারের পদত্যাগে।
আমরা লক্ষ্য করছি, শিক্ষার্থীরা যতক্ষণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল আন্দোলন, ততক্ষণ তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে এত অদলবদল হয়নি। যখনই ছাত্রের জন্যে জনতা নামের প্রপঞ্চের যোগ হয়েছে, তখনই সবকিছু আর আগের মতো থাকছে না। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সংহতি প্রকাশের নামে নানা ধরনের দাবিদাওয়া, বিশেষ করে সরকারের পদত্যাগের এক দফার দাবি যুক্ত হয়েছে।
অধিকাংশ গণমাধ্যম বলছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকেরাও আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। এটা সরলীকরণ অনেকটাই, এবং সর্বাংশে সত্য নয়। অধিকাংশই কি এখন সরকারের নানা অন্যায্য কর্মকাণ্ড, স্বেচ্ছাচারমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিতে বীতশ্রদ্ধ বলে সত্য প্রকাশে দ্বিধান্বিত? মাঠের চিত্র বলে, এই আন্দোলনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সমর্থন থাকলেও মাঠের আন্দোলনে প্রথমে ছিল কেবল শিক্ষার্থীরা, এরপর এর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। মাঠের আন্দোলনে তাদের অংশগ্রহণ এখন ‘অভিভাবক’ পরিচয়ে। এরবাইরে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষদের যে অংশগ্রহণ সেটা সংহতি প্রকাশ পর্যায়ে। মাঠের আন্দোলনে এখন যত শিক্ষার্থী, তারচেয়ে বেশি অছাত্র-রাজনৈতিক কর্মী। তারা শিক্ষার্থীদের সামনে ঠেলে পেছন থেকে রসদ যোগাচ্ছেন, পেশিশক্তি সরবরাহ করছেন।
আন্দোলন যখন কেবল শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে ছিল তখন পর্যন্ত তারা সরকারের পদত্যাগের দাবি করেনি। তাদের ৯ দফা দাবির মধ্যে সরকারের পদত্যাগের বিষয় ছিল না। ছিল বড়জোর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমা চাওয়া এবং কয়েকজন মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি। এ দাবি তারা করতেই পারে, কারণ বিপুল প্রাণহানির দায় সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার এড়িয়ে যেতে পারেন না। এবং যে কজন মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করেছে তারা, এই মন্ত্রীরা উসকানি, বিদ্রূপ করে গেছেন শুরু থেকে, অহিংস আন্দোলনকে সহিংস করতে তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য, বক্তব্য মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। শিক্ষার্থীরা সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিল। এই দাবিগুলোর সব অযৌক্তিক এমনটা বলা যায় না, এবং পূরণ করা যেত। কিন্তু সরকার পাত্তা দেয়নি এ দাবিকে।
তারা চেয়েছিল ঢাকাসহ যত জায়গায় ছাত্র-নাগরিক শহিদ হয়েছে সেখানকার ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা হয়েছে, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রক্টরদেরকে পদত্যাগ; যে পুলিশ-বিজিবি-র্যাব ও সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করেছে, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ যে সকল সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস হামলা পরিচালনা করেছে এবং যেসকল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদেরকে নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিকদের উপর গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে তাদেরকে আটক করে হত্যা মামলা ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার; দেশব্যাপী যেসকল ছাত্র-নাগরিক শহিদ এবং আহত হয়েছে তাদের পরিবারকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ নামক ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠনসহ সকল দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে দ্রুততম সময়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ছাত্র সংসদ কার্যকর; অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হলগুলো খুলে দিতে হবে। কারফিউ তুলে নিয়ে সারাদেশের সমস্ত ক্যাম্পাসে মোতায়েনকৃত পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সোয়াট এবং আর্মি তুলে নিতে হবে; এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না এই মর্মে অঙ্গীকার করতে হবে। ইতিমধ্যে গণগ্রেপ্তার ও পুলিশি হয়রানির শিকার সমন্বয়কবৃন্দ ও ছাত্র-নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে ও সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
তাদের কিছু দাবি আবেগী পর্যায়ের ছিল ঠিক, কিন্তু অধিকাংশই পূরণ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু সরকার পাত্তা দেয়নি দাবির প্রতি। ফলে আন্দোলন হতাহতের পর্যায় থেকে সরে এসে গেলেও এটা স্তিমিত হয়নি, বরং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণে হয়েছে আরও জোরদার।
আন্দোলন যখন নতুন রূপে এবং অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেছে তখন সরকারের পক্ষ থেকে নমনীয় ভাব দেখানো শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার (৩ আগস্ট) সকালে গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ঠেকাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গণভবনে তার সঙ্গে বসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘গণভবনের দরজা খোলা। কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমি বসতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। আমি সংঘাত চাই না। দরকার হলে তারা তাদের অভিভাবকদের নিয়েও আসতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আটক সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশও দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই আলোচনার আহবানকে আন্দোলনরতরা তাৎক্ষণিক নাকচ করে দিয়েছে। আলোচনার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে ৯ দফার দাবিকে তারা তখনই ‘১ দফা’ অর্থাৎ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে নেমে গেছে। শনিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা আর তাদের কাছে কী বিচার চাইব? তারাই তো খুনি। আমাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আপনাদের আন্দোলনের কারণে আমরা ছাড়া পেয়েছি। আজকেও গুলি চলেছে। এই পরিস্থিতিতে এক দফা ঘোষণা করছি।’ অপর এক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘খুনি সরকারের সঙ্গে কোনোপ্রকার সংলাপে বসতে আমরা রাজি নই, রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। গুলি আর সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনো সংলাপ হয় না।’ লক্ষণীয় বিষয়, যখনই সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যার সমাধানে ইতিবাচক প্রস্তাব এসেছে, তখনই আন্দোলনের সংগঠকেরা কট্টরপন্থায় চলে গেছে। তারা আলোচনা চায় না, সরকারের পতনের এক দফায় নেমে এসেছে তাদের দাবি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে আজ রোববার শুরু হয়ে যে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ তাতে যে সকল দাবি ও নির্দেশনা ঘোষণা হয়েছে সেগুলো নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরোধে কোটার সংস্কারের যে দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেটা এখন সরকার পতনের আন্দোলন। এই আন্দোলন ছিল অরাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, বৈষম্য নিরোধের, কিন্তু এটা এখন ক্ষমতা দখলের। আন্দোলনের সমন্বয়কদের মুখ থেকে এখন শোনা যায়, গণভবন দখলের হুঙ্কার। এসব আর যাই হোক নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের সহায়ক নয়। গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অন্যতম সংগঠক নাহিদ ইসলাম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে ফুটে ওঠেছে তার ক্ষমতা দখলের ভয়াবহ হুমকি। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। তিনি আগেই বুঝেছেন, দরজা খোলা রাখার সময় হয়েছে। আমরা আসছি।’
আলোচনার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত নয়। যতদূর জেনেছি, তাদের এই আন্দোলনের সমন্বয়ক আছেন অন্তত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। কিন্তু সকল সমন্বয়কের সঙ্গে বৈঠক না করে স্রেফ নিজেদের রাজনৈতিক বিশ্বাসের ওপর ভর করে তারা কি শিক্ষার্থী-সমাজ ও দেশকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে না?
এমন না যে, নেতৃত্বে থাকা সংগঠকেরা কোন রাজনৈতিক সংগঠনের যুক্ত নন। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামের একটা ব্যানারে আন্দোলন করলেও গণভবন দখলের হুঙ্কার, আলোচনার প্রস্তাব শুরুতেই দুজনের মুখ থেকে বেরুল সেই নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ যুক্ত রয়েছেন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি’ নামের একটি সংগঠনের সাথে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ডাকসু কার্যালয়ের সামনে এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই রাজনৈতিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করে। এখানে তারা শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সমাজের আবেগকে পুঁজি করে শেষ পর্যন্ত নিজেদের রাজনৈতিক আদর্শকেই প্রতিষ্ঠিত করতে কি চাইছেন না?
আমরা মনে করি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সফল হয়েছে। উচ্চ আদালত ও সরকার তাদের দাবি মেনে নিয়েছে। এখন এই দাবিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সরকার ও আন্দোলনকারীরা এক সঙ্গে কাজ করতে পারে। কিন্তু তা না করে কট্টরপন্থা অবলম্বন করে যদি সরকারের আলোচনার প্রস্তাবকে তারা প্রত্যাখ্যান করে জোরপূর্বক গণভবন দখলের পরিকল্পনা ধরে এগোয়, তবে তারা ভুল করবে।
শিক্ষার্থীরা অনতি-তরুণ। তারা আবেগী, তারা বিপ্লবী। তারা ভুল করতে পারে। আবেগী হতেই পারে। তবে তাদের আবেগ ও ভুলকে ভিন্নার্থে ব্যাখ্যা করে সরকারও যেন আগের মতো ভুল না করে বসে, সে দাবিটাই এখন করব। আন্দোলনরতরা আলোচনার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলে সরকার যদি ফের শক্তি-প্রয়োগে মনোনিবেশ করে, তবে এটাও হবে ভুল। তাদেরকে পুনর্বার আলোচনার প্রস্তাব দিতে হবে, বারবার দিতে হবে, বুঝাতে হবে দখল মানসিকতার চাইতে আলোচনার টেবিলেই আছে যথাযথ সমাধান।