সবজির বাজারে ধস, বেগুন-ফুলকপি ৫ টাকা!
বগুড়ায় ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির বাজারে ধস নেমেছে। প্রতিদিনই সবজির দাম কমতে থাকায় কৃষকের উৎপাদন খরচ উঠছে না। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উৎপাদন করা সবজির দাম কৃষক না পেলেও কয়েক হাত বদলের মাধ্যমে এই সবজি সাধারণ মানুষকে কিনতে হচ্ছে তিন গুণ দামে।
শনিবার (৫ জানুয়ারি) বগুড়ার সবচেয়ে বড় পাইকারী সবজির বাজার মহাস্থান হাট ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। জমিতে চাষ করা টাটকা সবজি বিক্রি করতে এসে অনেকটা বাধ্য হয়ে পানির দরে বিক্রি করে যাচ্ছে।
মহাস্থান হাটে সবজি বিক্রি করতে আসা অভিরামপুর গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম, চকরামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুল খালেক জানান, ফুলকপি ৫ টাকা, সিম,বেগুন ৫ টাকা, কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই দামে সবজি বিক্রি করে হাটে আনতে ভ্যান ভাড়া এবং জমি থেকে ফসল উঠানোর খরচ হচ্ছে না। মহাস্থান হাট ঘুরে দেখা গেছে বাধা কপি প্রতি পিছ ৪ টাকা, গাজর ১০ টাকা কেজি, টমেটো ৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বরবটি ৫টাকা, আলু ১৭ টাকা, মুলা ৫টাকা, কাচা মরিচ ১০ টাকা এবং পিয়াজ ১৭ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। কৃষক তাদের সবজির ন্যায্য দাম না পেলেও খুচরা বাজারে দুই থেকে তিনগুন বেশী দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা সবজি বিক্রেতারা দ্বিগুন মুল্যে সবজি বিক্রির কারণ হিসেবে বলেন পরিবহন খরচ ছাড়াও পাইকারী হাটে সবজি কিনতে এবং খুচরা বাজারে সবজি বিক্রি করতে দুইবার খাজনা দিতে হয়। এছাড়াও কাচা সবজি পচনশীল হওয়ায় তাদের অনেক সবজি ঘাটতি হয়ে থাকে।
মহাস্থান সবজি হাটের ফড়িয়া শাহিনুর ও আমিরুল জানান, তারা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে সবজি কিনলেও অতিরিক্ত খাজনা, পরিবহন খাতে অধিক ব্যয় ছাড়াও তাদের লাভ্যাংশ রাখার কারনে খুচরা বাজারে দুই থেকে তিন গুন দামে সবজি বিক্রি করতে হয়।
তারা জানান, মহাস্থান হাট থেকে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ ট্রাক সবজি রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়। মহাস্থান হাটের সবজির আড়ৎ মেসার্স সততা বাণিজ্যালয় এর স্বত্বাধিকারী আব্দুল বারী বলেন এ অঞ্চলে ব্যাপক সবজি চাষ হয়ে থাকে। এখন ভরা মৌসুম একারণে প্রতিদিনই দাম কমছে। কাঁচামাল হওয়ার কারণে কৃষক অনেক সময় বাধ্য হয়েই পানির দরে সবজি বিক্রি করে থাকে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুত্র জানায়, জেলায় পুরো শীত মৌসুমে ২ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েথাকে। এবার সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করায় মৌসুমের শেষ পর্যন্ত ৩লাখ মেট্রিক টনেরও বেশী সবজির ফলন হবে।