চুরির পর ফেরতের জন্য রাখা হচ্ছে চিরকুট

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বগুড়া, বার্তা২৪
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

বগুড়ায় ফসলের মাঠে সেচ পাম্পের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করে সেখানে রাখা হচ্ছে চিরকুট। চিরকুটে লেখা রয়েছে ‘ফোন করো ভাই’ ০১৭০৭৭৮২৬৫৮। ফোন করলে মুক্তিপণ দাবী করা হয়। চোর চক্রকে বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা দেয়ার পরেও ফেরত দেওয়া হয়নি মিটারটি। ফলে সেচ পাম্প চালু না থাকায় ২শ’ বিঘা জমিতে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।

শুধু সেচপাম্পের বৈদ্যুতিক মিটার নয়, চুরি করা হয়েছে গ্রামের মসজিদের মিটারও। মিটার চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল ফোন নাম্বার বৈদ্যুতিক তারের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

বিজ্ঞাপন

বগুড়া সদর উপজেলার শেখের কোলা ইউনিয়নের, নুরইল,ভাণ্ডার পাইকা ও তেলহারা উত্তরপাড়া গ্রামে গত এক সপ্তাহে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তিনটি মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার (০৭ জানুয়ারি) সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে জানা যায় চোর চক্রের এই অভিনব কৌশল। নুরইল গ্রামের জহুরুল ইসলাম রশিদ জানান, তিনি বিএডিসি পরিচালিত একটি গভীর নলকুপের কেয়ার টেকার। শেখেরকোলা ইউনিয়ন পরিষদের পিছনে গভীর নলকুপ বসানো রয়েছে। গত বুধবার রাতে(০২ জানুয়ারি) গভীর নলকুপের বৈদ্যুতিক মিটারটি চুরি হয়ে যায়। পরদিন সকালে পাম্প চালু করতে গিয়ে চুরির বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে মিটারের কাছে গিয়ে দেখতে পান বৈদ্যুতিক তারের সাথে একটি চিরকুট। তাতে লেখা রয়েছে ‘ফোন করো ভাই’ ০১৭০৭৭৮২৬৫৮।

বিজ্ঞাপন

চোরের দেওয়া নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে মিটার ফেরত দেয়ার জন্য বিকাশে ১০ হাজার টাকা দাবী করা হয়। দরকষাকষি করে ওই দিন সন্ধ্যায়  দুই হাজার টাকা বিকাশ করলে চুরি যাওয়া স্থান থেকে আধা কিলোমিটার দুরে মাঠের একটি বাঁশ ঝাড়ে মিটার ফেলে রাখা হয়। রাতে ওই মিটার উদ্ধার করে আনার পর দেখা যায় উদ্ধারকৃত মিটারটি পার্শ্ববর্তী তেলিহারা গ্রামের মসজিদ থেকে চুরি হওয়া মিটার। পরে চোর চক্রের সাথে যোগাযোগ করলে জানানো হয় ভুল করে মসজিদের মিটার চুরি করা হয়। একারণে ফেরত দেওয়া হলো। আরও ৫ হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠালে সেচপাম্পের মিটার ফেরত দেওয়া হবে।

জহুরুল ইসলাম রশিদ বার্তা ২৪কে বলেন মিটার চুরি যাওয়ার পর থেকে সেচপাম্প বন্ধ। ফলে ২০০ বিঘা জমিতে সেচ দেয়া যাচ্ছে না। এবিষয়ে বগুড়া সদর থানায় সাধার ডায়রি করা হলেও চুরি যাওয়া মিটার উদ্ধার করা যায়নি।

শেখেরকোলা ইউপি সদস্য হাফিজার রহমান জানান, সেচ পাম্প, মসজিদ ছাড়াও তেলীহারা চকপাড়া গ্রামের তোজাম্মেলের বাড়ি থেকেও মিটার চুরি হয়েছে। সেখানেও মোবাইল নাম্বার দিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফোন করলে মিটার ফেরতের জন্য বিকাশে টাকা চাওয়া হচ্ছে।

বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারি জেনারেল ম্যানেজার(এমএস) জোবায়ের আহম্মেদ বার্তা২৪ কে বলেন, মাঝে মধ্যে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটে। তবে মিটার চুরি করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য বিকাশ নাম্বার দিয়ে যাওয়ার ঘটনা এর আগে শোনা যায়নি।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) এসএম বদিউজ্জামান বলেন মিটার চুরি সংক্রান্ত একটি জিডি হয়েছে। তবে বিকাশে টাকা লেনদেনের বিষয়টি জানানো হয়নি। তিনি বলেন মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে চোরচক্র ধরা হবে।