কালভার্ট এখন হাজারো মানুষের মৃত্যুফাঁদ
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তিতখাই-চাঁনপুর ভায়া মির্জাপুর সড়কের আরসিসি বক্স কালভার্ট এখন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই আধা-কাঁচা রাস্তা এবং বক্স কালভার্টের একপাশের সড়ক সংযোগ স্থলে মাটি ভরাট না করায় যোগাযোগে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। ৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হওয়ায় কালভার্ট এবং রাস্তার সংযোগ স্থলে বাসের সাঁকোতেই পারাপার হচ্ছে মাঝারি ও ছোট আকারের বিভিন্ন যানবাহন। এতে করে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন ওই গ্রামবাসীরা।
সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকারের প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) কর্তৃক সদর উপজেলার তিতখাই-চাঁনপুর ভায়া মির্জাপুর সড়ক উন্নয়ন ও একটি আরসিসি বক্স কালভার্ট কাজের ভিত্তি প্রস্তর করা হয় ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এডভোকেট মো. আবু জাহির। কিন্তু আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মিত হলেও দীর্ঘ ৫ বছরেও তিতখাই-চাঁনপুর হতে মির্জাপুর রাস্তার সংযোগ স্থলের এক পাসের মাটি ভরাট কাজ এখনোও অসমাপ্ত রয়েছে।
সরেজমিন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত রয়েছে। এমনকি সিএনজি (অটোরিকশা), ইজিবাইকসহ ছোট এবং মাঝারি আকারের যাত্রীবাহী যানচলাচল করে। অথচ ওই বক্স কালভার্ট থেকে রাস্তার সংযোগস্থলের একপ্রান্তে প্রায় ২০ ফুট দূরত্বে মাটি ভরাট না থাকায় বাসের সাঁকো ব্যবহৃত হচ্ছে।
আবার ব্যবহৃত বাসের সাঁকোটি পানি হতে প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতায় অবস্থান করছে। সাঁকোটি প্রস্থে প্রায় ১০ ফুট এবং দৈর্ঘ্য ২২ ফুট। বাসের সাঁকোটির উপর দিয়ে যানচলাচলের উপর্যুক্ত করতে মাটি ফেলা হয়েছে। সাকোটিতে অল্প কিছু নড়বড়ে খুঁটি থাকায় যাত্রীবাহী যানচলাচলের সময়ে প্রচণ্ডভাবে দোলতে থাকে। ফলে যে কোন সময়ে ঘটে যেতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা।
ওই এলাকার বাসিন্দা সামসুল মিয়া বার্তা২৪-কে বলেন, ‘জীবিকার নির্বাহে প্রতিদিনই আশপাশের গ্রাম হতে স্কুল, কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীসহ নানা পেশার মানুষজন হবিগঞ্জ শহরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। শহরে দ্রুত সময়ে যাতায়াতের জন্য রাস্তাতে দিয়ে টমটম, ভ্যানগাড়ি, সিএনজি চলাচল করে থাকে। দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তার কিছু অংশ আধা-কাঁচা অবস্থায় রয়েছে। সবচেয়ে বড় বিপদজনক অবস্থায় কালভার্ট সংলগ্ন বাসের সাঁকোটি। বর্ষাকালে রাস্তা দিয়ে কালভার্ট পারাপারের সময়ে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনাও ঘটেছে। বিপদজনক যেনেও আমাদের গ্রামবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে সাঁকোটি ব্যবহার করতে হচ্ছে।'
এনামূল হক নামে এক ব্যক্তি বার্তা২৪-কে বলেন- ‘গ্রামবাসীর এমন সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারি হস্তক্ষেপের পাশাপাশি এলজিইডি এর সঠিক পদক্ষেপ দ্রুত প্রয়োজন। অন্যথায় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটলে দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।'
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. আবু জাকির সেকান্দার বার্তা২৪-কে বলেন, 'বিষয়টি আমার ঠিক মনে নেই। তবে যেহেতু আপনে বলছেন আমি জায়গাটি পরিদর্শন করে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করব।'