ভেস্তে গেল পুরনো কারাগারকে গ্রিন পার্ক করার উদ্যোগ

  • নূর আহমদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, সিলেট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

নগরীর ধোপাদিঘীরপাড়স্থ পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার এখন 'সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২'। সদ্য বিদায়ী অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অন্যতম ছিল বন্দি স্থানান্তরের পর পুরনো কারাগারটিকে 'গ্রীন পার্ক' করার। সিলেটের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে পার্ক নিয়ে পরিকল্পনাও উপস্থাপন করেছিলেন তিনি। গত বছরে কারা অধিদপ্তরের একটি আদেশে আর আলোর মুখ দেখেনি অর্থমন্ত্রীর গ্রিন পার্ক করার উদ্যোগটি।

শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) থেকে পুরনো সেই কারাগারের প্রধান ফটকে ঝুলছে ‘সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২’ ব্যানার।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/12/1547275604844.jpg

২০১৬ সালের ২৬ নভেম্বর ঢাকায় অর্থমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সিলেটের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঐ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সিলেটের কৃতীসন্তান ও সিলেট-১ আসনের এমপি তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, সিলেট নগরীর ধোপাদিঘীরপাড়স্থ পুরনো সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের স্থলে একটি ‘গ্রিন পার্ক’ গড়ে তোলা হবে। সেখানে পুরনো ঐতিহাসিক নিদর্শন ও স্থাপনা সংরক্ষণের মাধ্যমে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা, কালচারাল সেন্টার, শিশুদের জন্য বিনোদনকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে সিলেট সফরে এসেও গ্রিন পার্ক গড়ে তোলার কথা জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। পার্ক করার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি ডিওলেটারও দিয়েছিলেন। তবে সকল উদ্যোগ ভেস্তে যায় কারা অধিদপ্তরের এক নির্দেশনার পর।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/12/1547275625761.jpg

২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে কারা অধিদপ্তর। একটি নির্দেশনায় থমকে যায় সিলেট নগরীতে ‘গ্রিন পার্ক’ স্থাপনের অর্থমন্ত্রীর সেই উদ্যোগ। কারা অধিদপ্তরের (৫৮.০৪.০০০০.০২২.১২.০৪০.১৮-৭৭৯) নং স্মারকে উল্লেখ করা হয় দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক বন্দিদের বর্তমান সংখ্যাধিক্য, ক্রমবর্ধমান বন্দি সংখ্যা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত অনুশাসন অনুযায়ী কারা বন্দিদের আত্মকর্মসংস্থানমুলক প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করার মাধ্যমে কারাগারসমুহকে সংশোধনাগার করার জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনায়লয় সুরক্ষা সেবা বিভাগ কারা-১ শাখার প্রজ্ঞাপনে সিলেট, ফেনি, মাদারীপুর, পিরোজপুর ও কিশোরগঞ্জ কেন্দ্রীয় ও জেলা কারাগার নতুনভাবে নির্মিত হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই ৫টি কারাগারে নতুন জনবল সৃজন ও অফিস সরঞ্জামাদির জন্য একটি কমিটি গঠনও করে দেওয়া হয়। তৎকালীন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন স্বাক্ষরিত এই আদেশের ফলে আর আলোর মুখ দেখেনি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্বপ্নের ‘গ্রিন পার্ক’ করার উদ্যোগ। 

শুক্রবার সিলেট- কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বন্দি স্থানান্তর শুরুর সাথে সাথে কারাগারের প্রধান ফটকে সাঁটানো হয় একটি ব্যানার। যাতে লেখা রয়েছে ‘সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২’।

সিলেট কেন্দ্রীয়  কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল জলিল জানান, পুরনো সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার যেমন আছে, তেমনই থাকছে। কার্যক্রম চলমান থাকবে। আপাতত সকল বন্দি বাদাঘাট কারাগারেই স্থানান্তর করা হয়েছে। আব্দুল জলিল বলেন, সিলেটসহ দেশে ৫টি পুরাতন কারাগারে নতুন জনবল ও অফিস সরঞ্জামাদির অনুমোদনের জন্য  প্রস্তাব প্রেরণে একটি কমিটি করা হয়েছে। জনবল নিয়োগ দেওয়ার পর পুরাতন কারাগারে বন্দী রাখা হবে। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের পদ ৪৫৫টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ৩৯৯জন। জনবল নিয়োগের পর দুটি কারাগারই যথারীতি চলবে।