হাজারো বেকারের প্রেরণা সাজ্জাদ

  • সাদের হসেন বুলু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী সাজ্জাদ, ছবি: বার্তা২৪

ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী সাজ্জাদ, ছবি: বার্তা২৪

ঢাকার দোহারের সুতারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের কাজীর চর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাজ্জাদ হোসেন দীর্ঘদিন বেকার থেকে প্রবাসে যাওয়ার চিন্তা করেন। হঠাৎ একদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভেড়ার খামার সংক্রান্ত একটি পোষ্ট তার চোখে পড়ে।

এরপর সাজ্জাদ প্রবাসে না গিয়ে দেশেই উপজেলার রায়পাড়া ইউনিয়নের ইসলামপুর সাহেবখালী এলাকায় ২ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে গড়ে তোলেন একটি ভেড়ার খামার। ৫০ টি ভেড়া নিয়ে খামার শুরু করেন তিনি। এখন তার খামারে ১০০ টির বেশি বিভিন্ন জাতের ভেড়া ও গাড়ল (উন্নত জাতের ভেড়া) রয়েছে। প্রবাসে না গিয়ে ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন সাজ্জাদ। নিজের বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে বর্তমানে এলাকার হাজারো বেকার তরুণের অনুপ্রেরণা তিনি।

বিজ্ঞাপন

সাজ্জাদ হোসেন বার্তা২৪.কম কে বলেন, 'গাড়ল মাঠে ঘাস খায়। ধানের খর খেয়ে থাকে তারা। তাই তাদের আলাদাভাবে খাওয়ানো জন্য তেমন কোনো খরচ নেই। রাতে (পুরুষ গাড়ল) আলাদা করে রাখা হয় এবং বাড়িতে তাদের খাবার দিতে হয়। জন্মের এক সপ্তাহ পর গাড়লের ছোট বাচ্চা আলাদা করে রাখা হয়।যে কেউ চাইলে লাভজনক এই খামার করতে পারেন। খরচ খুব কম। তবে তুলনামূলকভাবে উঁচু ও পরিচ্ছন্ন জায়গায় ভেড়া পালন করতে হবে। বছরে তিনবার কৃমির ওষুধ, একবার পিপিআর টিকা দিতে হয়। প্রতি ভেড়ার পেছনে বছরে ওষুধে ব্যয় হয় ৭০ টাকা।'

শুরুতেই মেহেরপুরের মুজিবনগর এলাকা থেকে বেশ কিছু উন্নত জাতের গাড়ল কিনে আনেন তিনি। ভেড়া ও গাড়ল বছরে দুই বার বাচ্চা প্রসব করে। প্রতিবার দুই থেকে ছয়টি বাচ্চা প্রসব করে থাকে। ১ বছর বয়সী একটি গাড়ল প্রায় প্রায় ৩৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যায়। ভারতীয় প্রজাতির গাড়ল দেশীয় ভেড়ার মতো দেখতে। তবে এগুলো উন্নত জাতের এবং লেজ লম্বা। ভেড়ার চেয়ে গাড়ল আকারে বড় এবং গাড়লের মাংস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। তবে ভেড়া ও গাড়ল পালনে দোহার উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস ও যুব উন্নয়ন অধিদফতরের সহযোগিতা পেলে ভেড়ার খামার করে দেশেই বিদেশের টাকা আয় করা সম্ভব বলেও জানান সাজ্জাদ।

বিজ্ঞাপন

নতুন খামারিদের বিষয়ে সাজ্জাদ বার্তা২৪.কম কে বলেন, 'ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে এ দেশের আবহাওয়ার যথেষ্ট মিল রয়েছে। তাই আমাদের দেশে গাড়ল চাষ হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে গাড়ল বছরে দুইবার বাচ্চা দিলেও ২-৪টির বেশি নয়। তাই দেশি ভেড়ার সঙ্গে গাড়লের সংকর করতে পারলে হয়তো বাচ্চা বেশি পাওয়া সম্ভব।'

পালে নতুন নতুন ভেড়া রাখার কথা ও কোনো ভেড়া ২ বছরের বেশি পালে না রাখার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।