ধানের দাম না বাড়লেও চালের দাম বেড়েছে
বগুড়ায় ধানের দাম না বাড়লেও খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি চার টাকা। মোটা ও সরু সব ধরনের চালের দাম বাড়ার পেছনে কারণ কী তা স্পষ্ট বলতে পারছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।
তবে মিলারদের সিন্ডিকেটের কারণে চালের দাম বেড়েছে বলে মনে করেন অনেক ব্যবসায়ী। আর চাল কল মালিকরা বলছেন, সরকারি খাদ্য গুদামে চাল কেনা শুরু করায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
কিন্তু যে ধান থেকে চাল তৈরি করে সরকারি খাদ্য গুদামে সরবরাহ করছে সেই ধানের ধান দাম গত দুই সপ্তাহে কমেছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা মণ প্রতি।
বগুড়া জেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে চাল ১৫ দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ২৮ টাকা কেজি, সেই চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা। মিনিকেট ৫২ টাকা কেজি, জিরা শাইল ৫৪ টাকা কেজি, বিআর-৪৯ প্রতি কেজি ৩৮ টাকা, বিআর-২৮ প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং লাল পাইজাম প্রতিকেজি ৫৮ টাকা দরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ‘চালের দাম আরো বাড়বে।’ কেন বাড়বে তার কোনো সদুত্তর নেই বিক্রেতাদের কাছে।
নন্দীগ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান জানান, দুই সপ্তাহ আগেও ধান বিক্রি করেছেন ৮০০ টাকা মণ। সেই ধান এখন ৭২০ টাকা মণ।
গাবতলীর কাগইল গ্রামের কৃষক পলাশ চন্দ্র জানান, তাদের এলাকাতেও ধানের দাম ৭০০ থেকে ৭২০ টাকার মধ্যে। সরকারি খাদ্য গুদামে চাল কেনা শুরু হলেও ধানের উপর এর কোনো প্রভাব পড়েনি।
কারণ হিসেবে তারা বলছেন, মিল মালিকরা ধান কাটার আগেই ক্ষেত থেকে কম দামে ধান কিনে রেখেছেন। ফলে এখন বাজার থেকে খুব কম পরিমাণ ধান কিনতে হচ্ছে। অধিকাংশ মিলেই হাজার হাজার মণ ধান মজুদ রয়েছে।
এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার ১২টি উপজেলা থেকে ৩৯ হাজার ৯৭২ মেট্রিক টন চাল কেনা হবে সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে। গত ৯ ডিসেম্বর থেকে চাল কেনা শুরু হয়েছে এবং তা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
জেলার এক হাজার ৯২৫ জন মিল মালিক প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকা দরে সরকারি খাদ্য গুদামে সরবরাহ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত ৩২ হাজার মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করা হয়েছে।
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার চালকল মালিক আবলু কালাম আজাদ বলেন, ‘খুচরা বিক্রেতা ও চাল সিন্ডেকেটরা মিলারদের দূষলেও আসলে চালের বাজার অস্থির করে তুলছেন আড়তদার, মজুদদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রামের হাতে গোনা কয়েকজন আড়তদারের হাতে দেশের অধিকাংশ চাল মজুদ হয়ে আছে। তারা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ইচ্ছে মত দামে চাল বিক্রি করছেন। তারা তাদের অপরাধ ঢাকার জন্যই মিলারদের দোষ দিচ্ছেন।’