বিরল রোগে আক্রান্ত ভাই-বোন, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

  • তোফায়েল পাপ্পু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, মৌলভীবাজার, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিরল রোগে আক্রান্ত ভাই-বোন, ছবি: বার্তা২৪

বিরল রোগে আক্রান্ত ভাই-বোন, ছবি: বার্তা২৪

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে বিরল রোগে আক্রান্ত ভাই ও বোন। ফলে গত ১৫ বছর ধরে তারা গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। আক্রান্তরা হলেন- মো. সিরাজুছ ছালেকিন (২০) ও মোছা. আবেদা আক্তার রিমা (১৭)। তারা কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার উত্তর তিলকপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক মো. ফকরুল ইসলাম (আফরুজ) এবং শিরী বেগমের সন্তান।

জানা গেছে, আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ফকরুল ইসলাম সন্তানদের কোনো সুচিকিৎসা করাতে পারছেন না। ফলে রোগ ও অভাবে মৃত্যু পথযাত্রী তারা। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ফকরুল ইসলাম (আফরুজ)। ইতোমধ্যে আর্থিক সাহায্য চেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদনও করেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জন্মের ৩ বছর পর থেকে বিরল রোগে আক্রান্ত হয় তারা। আর্থিক সংকটের কারণে ভালো ডাক্তার দেখাতে না পেরে বিভিন্ন সময় গ্রাম্য কবিরাজের কাছ থেকে চিকিৎসা করানো হয় তাদের। কিন্তু রোগ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। একটা পর্যায়ে তারা ঘর থেকে বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৬ ভাই-বোনের মধ্যে সিরাজুছ ও রিমা বিরল রোগে আক্রান্ত। কিন্তু অন্যরা সুস্থ্য আছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মো. ফকরুল ইসলাম (৫০)। ফলে কৃষিকাজ করে ৮ জনের সংসার চালানো তার পক্ষে খুবই কষ্টকর। তবে সরকারিভাবে তিনি কোনো সহায়তা না পেলেও ৩ জন প্রবাসী সম্প্রতি তাকে সামান্য আর্থিক সহায়তা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

আরো জানা গেছে, প্রথমে সিরাজুছের মুখে একটি ক্ষতচিহ্ন ও সাদা দাগ দেখা যায়। পরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে রিমাও একই রোগে আক্রান্ত হয়।

এ বিষয়ে মো. ফকরুল ইসলাম (আফরুজ) বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘অভাবের কারণে ছেলে-মেয়ের সুচিকিৎসা করাতে পারি না। আবার চোখের সামনে সন্তানদের কষ্টও সহ্য করতে পারছি না।’

কমলগঞ্জ ৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সৈয়দ শওকত আলী বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘এটি মূলত জিনগত সমস্যা। রোগীর চামড়ার কোষে মেলানিন না থাকায় সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মিতে কোষের উপরিভাগ নষ্ট হয়ে যায়। আর বারবার অতিবেগুনী রশ্মির সম্মুখীন হলে DNA নষ্ট হয়ে ক্যান্সার হতে পারে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রোগটির নাম Xeroderma Pigmentosam। এটি একটি বিরল রোগ। সঠিক রোগ নির্ণয় ও সু-চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) বা পিজি হাসপাতালে পাঠানো যেতে পারে।

স্থানীয় কমলগঞ্জ সদর ইউপি সদস্য রুপেন্দ্র কুমার সিংহ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘টাকার অভাবে তাদের উন্নত চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না।’

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, ‘বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জানার পর জরুরি ভিত্তিতে ওই পরিবারকে আর্থিক সাহায়তা করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।