খাল ও নদীর বেশিরভাগ প্রভাবশালীদের কবলে

  • মো. সাদের হোসেন বুলু, ডিস্টিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ময়লা-আবর্জনায় জর্জরিত ইছামতি, ছবি: বার্তা২৪

ময়লা-আবর্জনায় জর্জরিত ইছামতি, ছবি: বার্তা২৪

ঢাকার নবাবগঞ্জে ১৪টি ইউনিয়নের অধিকাংশ খাল, বিল প্রভাবশালীদের কবলে পড়ে হারিয়ে গেছে। দখল হচ্ছে নদীর বিভিন্ন অংশ। অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বেসরকারি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন হাট বাজারের ব্যবসায়ীগণ ইছামতি নদীতে বর্জ্য ফেলার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণী।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, খালগুলো পুনরুদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। বর্ষা মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলা সদরের কলাকোপা ইউনিয়নে অবস্থিত বননগর, কলাকোপা, রাজপাড়া এলাকা দিয়ে প্রবাহিত শতকোটি টাকার সরকারি খালটি দখল, দূষণ ও দীর্ঘ সময় খনন না করার কারণে এক শ্রেণির কথিত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, ও প্রভাবশালীরা বিভিন্ন কৌশলে খালের গতি পথ রোধ করে আবাসস্থল নির্মাণ করেছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/21/1548077737387.gif

আর এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত সকল শ্রেণির জলাশয়। এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন জলাশয় ভরাটের কারণে মারাত্মক জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে নবাবগঞ্জবাসী। বর্ষা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রাকৃতিক খালগুলো পুনরুদ্ধারে জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কোনো উদ্যোগও নেই বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

উপজেলার কৈলাইল সোনারগাঁও, কাটাখালি দিয়ে প্রবাহিত খালটি ইতোমধ্যে দখলের শেষ পর্যায়ে। ভবন নির্মাণ করে দখল করে নিচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। ফলে খালটি এখন সরু হয়ে কোনো রকম টিকে আছে। এ ছাড়াও নবাবগঞ্জের ইছামতি নদীর বিভিন্ন অংশ দখল করে রেখেছেন বিভিন্ন প্রভাবশালীরা। মাঝে মধ্যে নদী কমিশনের লোক আসলেও দখল উচ্ছেদে তাদের কোন কার্যক্রম নেই বলে অভিযোগ করেন উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহিদ হায়দার উজ্জল।

শুধু খালই নয়, নবাবগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশনের খালগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার কোনো উদ্যোগ নেই বলে জানান জাতীয় কৃষক সমিতির নেতা মো. আসলাম খাঁন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/21/1548077752484.gif

তিনি আরও বলেন, 'নবাবগঞ্জের অধিকাংশ খাল ও জলাশয়ে অবৈধ স্থাপনা ও বাড়িঘর নির্মাণ করে দখল করে ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ইছমতি নদীতে। ফলে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। আর পানি দূষিত হওয়ার এলাবাসী মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ে পড়েছে। এ নদীর দূষিত পানিতে বাসিন্দারা পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এক সময়ের খরস্রোতা ইছামতি এখন দখল ও দূষণের কারণে মৃতপ্রায়। প্রশাসনকে একাধিকবার অবগত করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।'

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, 'নদ-নদী ও খাল যে সব প্রতিষ্ঠান দখল ও দূষণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান শুরু হবে। নদী পুনরুদ্ধারে বর্তমান সরকারের নদী কমিশন কাজ করছে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। তবেই নদী ও খাল রক্ষা পাবে।'