মেয়র হয়েও পাই না, আর পুলিশ হইয়া এই বড় মাছ নিবা?
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোর কথা বলে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের ক্রয়কৃত দুটি কোরাল মাছ জোর করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে। তার নাম আ. বারেক মোল্লা। তিনি কুয়াকাটা পৌরসভার আলোচিত মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি।
কুয়াকাটা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো. শাহআলম জানান, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি তার ভাইয়ের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান রয়েছে। ওই অনুষ্ঠান উপলক্ষে গত ১৫-২০ দিন ধরে বড় মাপের দুইটি কোরাল মাছ খুঁজছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে ৩-৪ দিন আগে ১০ কেজি ৩০০ গ্রাম এবং ৬ কেজি ১০০ গ্রামের দুইটি কোরাল মাছ প্রায় ২২ হাজার টাকায় ক্রয় করে বশিরের মাছের আড়তে রেখে দেন। শনিবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে সেই মাছ বাড়িতে পাঠানোর কথা ছিল।
তিনি আরও জানান, হঠাৎ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাছের আড়তদার বশির ফোন দিয়ে জানায়, তার ফ্রিজে রাখা ওই কোরাল মাছ দুটি কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র বারেক মোল্লা নিয়ে যেতে এসেছে। তখন তিনি মসজিদে জুমার নামাজের জন্য উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে বশিরের ওই ফোন দিয়ে পুলিশ সদস্য শাহআলম মেয়রের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় শাহআলম মেয়রকে সবকিছু খুলে বলেন। কিন্তু মেয়র নাছোড়বান্দা। তিনি ওই মাছ নেবেনই।
এক পর্যায়ে মেয়র শাহআলমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এই মাছ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠাতে হবে। আমি কুয়াকাটার মেয়র। আমি এতো বড় মাছ পাই না, আর তোমরা পুলিশ হইয়া এই মাছ এখান থেকে নিবা?’
আড়তদার বশিরের বরাত দিয়ে পুলিশ সদস্য শাহআলম আরও জানান, ওই সব কথা বলে জোর করে তার লোকজন নিয়ে ফ্রিজ থেকে কোরাল মাছ দুটি নিয়ে নেয়।
তাৎক্ষণিক বিষয়টি মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান এবং নৌ পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিমকে অবহিত করেন তিনি।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সামান্য মাছ তাও পুলিশের ক্রয় করা, সেই মাছও যদি রক্ষা না পায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে মেয়র বারেক মোল্লা বলেন, ‘মাছ দুটি কেনা হয়েছে। তবে সেটা কাদের তা আমি জানি না। একটু খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাচ্ছি।’ পরে ফোন কেটে দেন তিনি।
জানতে চাইলে আড়তদার বশির বলেন, ‘শাহআলম স্যারকে আমি দুটি কোরাল মাছ ম্যানেজ করে দিচ্ছি। তার মাছ পাইলেইতো হয়।’
শুক্রবার পৌরসভার মেয়র আপনার দোকান থেকে কোরাল মাছ নিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মেয়র সাহেবতো প্রায়ই মাছ নেয়। গতকাল শুক্রবারও কোরাল মাছ নিছে।’
এদিকে কুয়াকাটায় এ ঘটনাটি এখন টক অব দা টাউনে পরিণত হয়েছে।