ঘর পালানো মেয়েকে ফিরে পেল বাবা
চলন্ত বাসে একাকী এক মেয়েকে পেয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে আশ্রয় দিয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বগুড়ার সৌখিন মিয়া। অবশেষে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর হস্তক্ষেপে রোববার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ঘর পালানো মেয়েকে ফিরে পায় তার বাবা।
বগুড়া সদর উপজেলার নুনগোলা গ্রামের সৌখিন মিয়া জানান, তিনি বগুড়া-ময়মনসিংহ রুটের যুগান্তর বাসের সুপারভাইজার। গত ১৭ জানুয়ারি যুগান্তর বাসটি ময়মনসিংহ থেকে ছাড়ার সময় ১৩-১৪ বছর বয়সী একটি মেয়ে বাসে উঠে পাবনা যাবার কথা বলে। হাটিকুমরুল চাররাস্তা (সিরাজগঞ্জ রোড) মোড়ে মেয়েটির নামার কথা ছিল। আসার পথে এলেঙ্গা এবং অন্যান্য এলাকায় যানজটের কারণে বাসটি সিরাজগঞ্জ রোডে আসতে রাত ১১টা বেজে যায়। বাস থেকে নামার সময় মেয়েটি কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। মেয়েটি বাস থেকে নামতে রাজি না হওয়ায় সৌখিন মিয়া তাকে বগুড়ায় নিয়ে আসে এবং তার বাড়িতে নিয়ে যায়।
সৌখিন মিয়া জানান, তার সংসারে স্ত্রীসহ দুই মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। ছেলেটা প্রতিবন্ধী।
এদিকে অচেনা-অজানা মেয়েটি তার বাড়িতে মেয়ের মতো মিশে যায়। বিষয়টি যে থানাতে জানানো উচিৎ তা সৌখিন মিয়ার পরিবারের কারো মাথাতেই আসে নাই। পরে এলাকায় কানা-ঘুষা শুরু হলে দশদিন পর তাদের কানে পানি যায়। ২৬ জানুয়ারি রাতে স্থানীয় নৃত্য শিল্পী সজল ও হামিদ নামের দুই ব্যক্তি সৌখিন মিয়া ও মেয়েটিকে নিয়ে হাজির হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর কাছে। কিন্তু মেয়েটি ভুল ঠিকানা দেয়ায় ময়মনসিংহ সদর থানা পুলিশ তার বাবা-মার সন্ধান পাচ্ছিল না।
এক পর্যায়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি সঠিক ঠিকানা জানালে পুলিশ তার বাবা-মাকে খুঁজে পায়। ২৭ জানুয়ারি রাতে মেয়েটির বাবা বগুড়া সদর থানায় এসে খুঁজে পায় হারানো মেয়েকে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বার্তা২৪.কমকে জানান, মেয়েটির বাবা গাজীপুরে একটা ছোট চায়ের দোকান চালান। তার স্ত্রী গার্মেন্টসে কাজ করেন। মেয়েটা তার দাদার সঙ্গে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের লাউজানা, পূর্বধলায় থাকে। দাদা বকা দেয়ায় সে অভিমান করে মা বাবার সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশে বের হয়ে ভুল করে বগুড়ার গাড়িতে উঠে পড়ে। এরপর তারা থানায় জিডি করলেও মেয়েটিকে খুঁজে পাচ্ছিল না।