চিকিৎসক ব্যক্তিগত চেম্বারে, সদর হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, লক্ষ্মীপুর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চিকিৎসক ব্যক্তিগত চেম্বারে, সদর হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু। ছবি: বার্তা২৪.কম

চিকিৎসক ব্যক্তিগত চেম্বারে, সদর হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু। ছবি: বার্তা২৪.কম

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলায় মো. বাবুল হোসেন (৪০) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি কার্ডিওলজি সমস্যায় ভুগছিলেন। কিন্তু ঘটনার সময় হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক (কনসালটেন্ট কার্ডিওলজি) ভবানী প্রসাদ রায় উপস্থিত ছিলেন না। তিনি তার ব্যক্তিগত চেম্বার দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় ছিলেন। তার অনুপস্থিতির কারণেই রোগী মারা যায় বলে স্বজনদের অভিযোগ।

সোমবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অন্য রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করেন। নিহত বাবুল হোসেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড সাহাপুর এলাকার কালামিয়ার ছেলে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, ভবানী প্রসাদ তার ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখেন।

ওই রোগীর স্বজনরা জানান, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাহাপুর এলাকার মো. বাবুল হোসেন বুকে ব্যথা অনুভব করলে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসক (মেডিসিন) সালাহ উদ্দিনকে দেখালে রোগীর কার্ডিওলজির সমস্যা ধরা পড়ে। পরে রোগীকে তিনি ভবানী প্রসাদ রায়ের কাছে পাঠান। কিন্তু হাসপাতালে ভবানী প্রসাদ উপস্থিত ছিলেন না। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

একপর্যায়ে অন্য কেউ তার মোবাইলটি রিসিভ করে জানান, ভবানী প্রসাদ সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। পরে লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন মোস্তফা খালেদ আহমেদকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়। এর কিছুক্ষণ পর ওই চিকিৎসক হাসপাতালে আসেন। কিন্তু এর আগেই রোগী মারা যায়। চিকিৎসার অবহেলায় ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন স্বজনরা। রোগীর মৃত্যুতে স্বজনরা হাসপাতাল এলাকায় বিক্ষোভ করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ভবানী প্রসাদের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকার ব্যক্তিগত চেম্বারে গেলে তার দেখা মেলে। এ সময় তিনি অন্য রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছিলেন। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তিনি।

সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক (ভারপ্রাপ্ত আরএমও) জয়নাল আবেদিন জানান, রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু নোয়াখালী নেওয়ার আগেই মারা যান তিনি।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন মোস্তফা খালেদ আহমদ বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। কোনো মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। এ ঘটনার সময় দায়িত্বরত চিকিৎসককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’