চুরি করতে পথের কাঁটা কুকুরকে বিষ দিয়ে হত্যা!
কথায় আছে, যে বাড়িতে কুকুর থাকে, সে বাড়ির মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাতেও পারে। ঠিক এমন নিশ্চিন্তে ঘুমাতো লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের কয়েকটি পরিবার। কারণ তাদের বিশ্বস্ত পোষা কুকুরগুলো রাতে বাড়ি পাহারা দিতো। কিন্তু চোরের দল চুরির পথ পরিষ্কার করতে সেই পথের কাঁটা কুকুরগুলোকে রাতের অন্ধকারে বিষ মিশ্রিত খাবার খাইয়ে হত্যা করেছে।
সাধারণত সূর্য ডোবার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই গ্রামের মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে। চোরদের চুরি করার সময়ও হয় তখন। তারা রাতের আঁধারে নানা কৌশলে ঘরবাড়ি ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে ঢুকে টাকা ও মালামাল লুটে নেয়। এই চুরি ঠেকাতে অনেকেই কুকুর পোষতেন। আর সেই কুকুরগুলোই ছিল চোরদের পথের কাঁটা।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিশ মিশ্রিত খাবার খাইয়ে অন্তত ১০টি কুকুরকে হত্যা করেছে চোরের দল।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চুরির পথ পরিষ্কার করতেই চোরের দল কুকুরগুলোকে হত্যা করেছে। আর ওই চোরের দলের সদস্যরা মাদকসেবী বলে তারা ধারণা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দত্তপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে লদের বাড়িতে ২টি, চৌকিদার বাড়িতে ২টি, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জান্তার বাড়িতে ২টি এবং আবদুর রহিম ডাক্তার বাড়িতে ১টিসহ অন্তত ১০টি পোষা কুকুর হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীতের শুরু থেকে দত্তপাড়া এলাকায় একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে মাদকসেবীদের একটি চক্র জড়িত। গত শুক্রবার রাতে দত্তপাড়া সাকসেস কিন্ডার গার্টেন থেকে ২টি সিসিটিভি ক্যামেরা, ১টি মনিটর, ২টি মোবাইল সেট ও নগদ ৫ হাজার টাকা চুরি হয়। এরআগে তোতারখিল আয়েশা উচ্চ বিদ্যালয়ের কলাপসিবল গেইট ভেঙ্গে একটি মোটর সাইকেল চুরি করা হয়। চুরির উদ্দেশ্যে দত্তপাড়া হরিদাসের বাড়ির একটি ঘরের সিত কাটতে গেলে পোষা কুকুরের তাড়া খেয়ে পালিয়ে যায় চোরেরা। এরপরেই ওই চক্রের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে পোষা কুকুরগুলোকে হত্যা করেছে।
দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসানুল কবির রিপন বলেন, পোষা কুকুর হত্যার বিষয়টি আমি শুনেছি। এতগুলো কুকুর হত্যার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো রহস্য আছে। মাদকসেবীরা নিরাপদে চুরি করার লক্ষ্যে পোষা কুকুরগুলো হত্যা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ধরণের ঘটনা প্রতিহত করতে শীঘ্রই গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয়দের সমন্বয়ে প্রতিটি এলাকায় পাহারা বসানোর ব্যবস্থা করা হবে।
দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. জসীম উদ্দিন বলেন, প্রতি রাতেই দত্তপাড়ায় পুলিশের বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ইতোমধ্যে তালিকা করে চিহ্নিত মাদকসেবীদের আইনের আওতায় আনা শুরু হয়েছে। এখানে এখন চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।