থামছে না নবাবগঞ্জে ফসলি জমির মাটি উত্তোলন

  • মো. সাদের হোসেন বুলু ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কৈলাইল ইউনিয়নের কাটাখালি ও মাশাইল সড়ক সংলগ্ন এলাকায় ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে/ ছবি: বার্তা২৪.কম

কৈলাইল ইউনিয়নের কাটাখালি ও মাশাইল সড়ক সংলগ্ন এলাকায় ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে/ ছবি: বার্তা২৪.কম

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কৈলাইল, শোল্লা, বাহ্রা, আগলা, নয়নশ্রী, শিকারীপাড়া ও বারুয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্পটে ফসলি জমি থেকে মাটি উত্তোলন থামছে না। এসব এলাকায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী পরিচয় দিয়ে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননের নামে চালাচ্ছেন অবৈধ মাটি বিক্রি ব্যবসা।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের নির্বিকার ভূমিকাকে দুঃখজনক বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা। জমি বাঁচাতে দ্রুত ভূমিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান এলাকাবাসী।

বিজ্ঞাপন

ভূক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, অনুমোদন ছাড়াই একের পর এক তিন ফসলি আবাদি জমিতে মাছ চাষের কথা বলে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করছে একশ্রেণীর মাটিখেকোরা। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় তা বেড়েই চলেছে। উর্বর ফসলি জমিতে পুকুর খনন করায় খাদ্যশস্য উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কৈলাইল, পশ্চিম মেলেং, খালপাড় মাতাপপুর, কাটাখালী, মালিকান্দা, দৌলতপুর, শোল্লার আওনা চক, চক সিংহরা, চক সিংজোর, নয়শ্রী এলাকার শৈল্যা ও কলাকোপা ইউপির সাহেবখালিসহ শিকারীপাড়া, বাহ্রা ইউনিয়নে কয়েকটি স্পটে চলছে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রির ধুম।

বিজ্ঞাপন

এর মধ্যে কৈলাইল ইউনিয়নের কাটাখালি ও মাশাইল সড়ক সংলগ্ন এলাকায় ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে তিন ফসলি জমিতে অবাধে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রির অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছেন স্থানীয় আবুল কাসেম।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/31/1548931185730.jpg

তিনি নিজেকে দুই নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দাবি করে বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি।’ কাগজ দেখাতে বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

পাশের জমির মালিক আক্তার মিয়া বলেন, ‘কাসেম ও মেলেং গ্রামের আব্দুল ওহাব সারাবছর কৈলাইল, মেলেং, খালপাড় মাতাপপুর এলাকায় বিভিন্ন জমি স্বল্প টাকায় ক্রয় করে পুকুর তৈরির নামে মাটির ব্যবসা করছেন। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেন না।’

তিনি জানান, মাটি বিক্রির কারণে এই এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে জলবদ্ধতা দেখা দেয় বর্ষা মৌসুমে। বিশেষ করে কৈলাইল, রায়পুর ও নামামেলেং এলাকায় অনেক মাঠ-ঘাট ছয় মাস পানিতে আটকে থাকে।

মেলেং গ্রামের সুরুজ মিয়া ও কুন্ডা গ্রামের আলতাফ হাওলাদার বলেন, ‘মাহেন্দ্র দিয়ে মাটি আনা নেওয়ার কারণে রাস্তা-ঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। বর্তমানে মাহেন্দ্রর জন্য রাস্তায় চলাই যায় না।’ দ্রুত অবৈধ মাটি কাটা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান তারা।

কথা হয় কৈলাইল গ্রামের নিমাই দাসের সাথে। তিনি বলেন, ‘এভাবে পুকুর খনন চলতে থাকলে কৈলাইল ইউনিয়নে আবাদি জমি একেবারে কমে যাবে।’

নবাবগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনজুর হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আবাদি জমিতে পুকুর খনন করার কোনো নিয়ম নেই। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’