রিকশাচালক সেন্টু উপজেলা চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান
আসন্ন ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সারাদেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলাতেও শুরু হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। ইতোমধ্যে প্রার্থীরা তাদের যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে ও পোস্টার প্রকাশের মাধ্যমে নিজের প্রার্থীতার কথা জানান দিয়েছেন। ক্ষমতাসীনদলসহ ৩ পদে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রার্থী লড়তে যাচ্ছেন নির্বাচনী যুদ্ধে।
প্রার্থীদের এই ভিড়ে ব্যতিক্রম একজন। তিনি এ কে এম সেন্টু। পেশায় একজন রিকশাচালক। কোনো রিকশাচালক এই প্রথম নবীনগরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করলেন।
এ কে এম সেন্টু নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বলে দাবি করে নিজের পোস্টার নিজেই শহরের বিভিন্নস্থানে সাঁটিয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার মাঝিকাড়া গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে এ কে এম সেন্টু। বয়স ত্রিশের কাছাকাছি। লেখাপড়ায় তিনি প্রাথমিকের গণ্ডি পার করতে পারেননি। স্ত্রী ও এক কন্যা নিয়ে তার সংসার। সংসার চালাতে তিনি রিকশা চালান। বেশ কষ্টে দিন যাপন করেন।
তার পরও তিনি এবার ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নবীনগর উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
২১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নবীনগর উপজেলা পরিষদ। নিজের প্রার্থীতা জানান দিতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সেন্ট। নিজেই নিজের পোস্টার-ব্যানারসহ সব ধরনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কারও কোনো সহায়তা তিনি নিচ্ছেন না।
এদিকে নবীনগর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রিকশাচালক এ কে এম সেন্টুকে নিয়ে নবীনগরে আলোচনার ঝড় বইছে। অনেকেই বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন। কেউ অবশ্য সমালোচনা করতে পিছপা হচ্ছেন না।
সেন্টু তার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে গিয়ে স্থানীয় মুরুব্বিদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।
নবীনগর পৌর এলাকার মাঝিকাড়া গ্রামের মো. রহমত আলী জানান, বাংলাদেশে সবারই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার রয়েছে। সেই হিসেবে সেন্টুও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত সে নির্বাচনের মাঠে টিকে থাকতে পারবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
নবীনগরের এডভোকেট সুজিত দেব বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাপ্ত বয়স্ক যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। এতে সাংবিধানিক কোনো বিধি-নিষেধ নেই। তবে আমরা মনে করি, নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটা বাধ্য-বাধকতা থাকা দরকার।
স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম সেন্টু বার্তা২৪.কমকে বলেন, নির্বাচন করতে কোনো টাকা পয়সা লাগে না। প্রচারণায় বেশ সারা পাচ্ছি। সঠিক নির্বাচন হলে জয়ী হবো- ইনশাল্লাহ। আমি কোনো দল থেকে নির্বাচন করবো না, স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়বো। নির্বাচিত হলে নবীনগরকে মাদকমুক্ত করে ছাড়বো। পাশাপাশি শ্রমিক ভাইদের অধিকার আদায়, নৈশ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবো। সংসার চালাতে আমি রিকশা চালাই। এতে দৈনিক আমার ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা আয় হয়। নির্বাচন করার মতো কিছু টাকা আমার কাছে আছে।