নদীতে বিষ ঢেলে অবাধে মাছ শিকার

  • জাহিদ পাটোয়ারী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, কুমিল্লা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নদীতে বিষ ঢেলে অবাধে মাছ শিকার। ছবি: বার্তা২৪.কম

নদীতে বিষ ঢেলে অবাধে মাছ শিকার। ছবি: বার্তা২৪.কম

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোটে ডাকাতিয়া নদীতে বিষ ঢেলে অবাধে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে করে একদিকে মাছের প্রাকৃতিক বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে বেশ কয়টি চক্র ডাকাতিয়া নদীতে বিষ ঢেলে মাছ শিকার করে থাকে। এবারো একই কাজে লিপ্ত তারা।

শীত মৌসুমে যখন নদীর পানি কমে যায়, তখন নদীতে ছোট ছোট ঘের তৈরি করে এতে বিষ ঢেলে তারা মাছ শিকার করে। ফলে বিষক্রিয়ায় ছোট-বড় আকারের সকল মাছ মারা যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

ডাকাতিয়া নদীর চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোটের অংশে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের আগুনশাইল, মরকটা, চন্দ্রপুর, তারাশাইল, দুর্গাপুর, জঙ্গলপুর, জাগজুর, পন্নারা, চিওড়া ইউনিয়নের শাকতলা ও চিলপাড়া এবং নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট ইউনিয়নের শরিফপুর, রায়কোট, ঘাশিয়াল, পূর্ব ঘাঁ ঘর, পিপডডা, বামপাড়া, নারানদিয়া এলাকায় এক শ্রেণির মানুষ ডাকাতিয়ার বুকে ঘের তৈরি করে বিষ ঢেলে মাছ শিকার করছে। এতে মারা যাচ্ছে ছোট-বড় সকল মাছ। এর সঙ্গে মরছে বিভিন্ন প্রজাতির কিট-পতঙ্গও। শিকার করা মাছ বিক্রি হচ্ছে কুমিল্লাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন স্থানে। এ নিয়ে চক্রটির ভয়ে স্থানীয়রাও প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, শীত মৌসুমে নদীতে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বিষ ঢেলে মাছ নিধন করা শুরু হয়। যার ফলে জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়ছে। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে মাছ মারা চক্রটি উত্তেজিত হয়ে হামলাসহ বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখান। যার ফলে স্থানীয়রা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে থাকেন। এক বাক্যে সকলের দাবি নদীতে বিষ ঢেলে মাছ নিধন বন্ধ করে চক্রটির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টরা যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রামের কনকাপৈত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাফর ইকবাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে আপনাদের জানাচ্ছি।’

নাঙ্গলকোটের রায়কোট ইউনিয়ন উত্তরের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম মজুমদার বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সিনিয়র মৎস অফিসার শাহেলা শারমিন (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কর্মকর্তা) বার্তা২৪.কমকে জানান, খোঁজ নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে মৎস সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নাঙ্গলকোট উপজেলা মৎস কর্মকর্তা খাদিজা খাতুন বার্তা২৪.কমকে জানান, ডাকাতিয়া নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মারার ঘটনা সত্যি হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতা নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।